কলকাতা, 22 সেপ্টেম্বর: সদ্য বিশ্বের দরবারে স্বীকৃতি পেয়েছে বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো ৷ কলকাতার দুর্গোৎসবকে 'অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য' (Intangible cultural heritage) আখ্যা দিয়েছে ইউনেসকো ৷ তা নিয়ে প্রচার যেমন হয়েছে, তেমনই দানা বেঁধেছে বিতর্ক আর সমালোচনা ৷ আর এই দড়ি টানাটানির মাঝে পড়ে ব্রাত্যই থেকে গিয়েছেন প্রতিমা শিল্পী থেকে শুরু করে মূর্তি নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত মানুষেরা ৷
এদিকে আর সামান্য অপেক্ষা ৷ তারপরই শুরু হয়ে যাবে দেবীপক্ষ ৷ পুজোর (Durga Puja 2022) আগে আবারও চেনা ছন্দে ফিরেছে কলকাতার কুমারটুলি (Kumortuli) ৷ করোনাকালের ধাক্কা সামলে ফিরেছে কাজের বরাত ৷ তাতে ভয়াবহ সংকট হয়তো কেটেছে, কিন্তু আসল সমস্যা মেটেনি ৷ শিল্পীদের অভাব, অভিযোগের কথা শুনতে তাই ফের একবার কলকাতার কুমোরপাড়ায় পৌঁছে গিয়েছিল ইটিভি ভারত ৷
আরও পড়ুন: আড়াইশো বছরের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখাই চ্যালেঞ্জ সোমড়ার 'জমিদার'দের
সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে শিল্পীরা জানালেন, গত দু'বছর যেন থমকে গিয়েছিল কুমোরটুলি ৷ এবার সেই খরা কেটেছে ৷ বায়না এসেছে ভালোই ৷ কিন্তু, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কাঁচামালের দাম ৷ কিন্তু, সেই তুলনায় পারিশ্রমিক বাড়েনি ৷ এদিকে, কলকাতার দুর্গাপুজোকে আন্তর্জাতিক মঞ্চ থেকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে ৷ তা নিয়ে রোজই কোনও না কোনও খবর চোখে পড়ে শিল্পীদের ৷ কিন্তু, এতে যে তাঁদের কোনও লাভ নেই, তা তাঁরা এতদিনে বুঝে গিয়েছেন ৷ তাঁরা জানান, ইউনেসকোর প্রতিনিধিরাও এসেছিলেন কুমোরটুলিতে ৷ শিল্পীদের হাতের কাজ তাঁদের অবাক করেছে ৷ মিলেছে দরাজ প্রশংসা ৷ কিন্তু, ওটুকুই ৷
রাজ্য সরকারের তরফে দুর্গাপুজোর আয়োজকদের 60 হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হচ্ছে ৷ অথচ কুমোরপাড়ার খোঁজ সরকার রাখে না ৷ আক্ষেপ ঝরে পড়েছে শিল্পীদের গলায় ৷ আক্ষেপের একই সুর শোনা গিয়েছে, মৃৎশিল্পী সমিতির সম্পাদক বাবু পালের গলাতেও ৷ তিনি বলেন, "একটাই বিষয় আমাদের খারাপ লাগছে ৷ এই যে সম্মান আমাদের পুজো পেয়েছে, তা তো সত্যিই গর্বের ৷ কিন্তু, যাঁরা মূর্তি গড়ছেন, সেই শিল্পীদের কথাই কেউ ভাবছেন না ! সরকার যদি আমাদের কথা ভাবত, তাহলে শিল্পীরা কাজে আরও আগ্রহ পেতেন ৷ পরবর্তী প্রজন্মও এই কাজে আসার উৎসাহ পেত ৷"