কলকাতা, 10 ডিসেম্বর : তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলার বিরুদ্ধে শুল্ক দপ্তরের দায়ের করা মামলা গ্রহণ করল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। আজ বিচারপতি ইন্দ্র প্রসন্ন মুখোপাধ্য়ায় এবং বিচারপতি মোহাম্মদ নিজামউদ্দিনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি ওঠে ৷ আদালতে শুল্ক দপ্তরের তরফে আইনজীবী আমন লেখি বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ যে কারণ দেখিয়ে মামলা খারিজ করে দিয়েছে তা বেআইনি । শুল্ক দপ্তরের আইন অনুযায়ী যে কোনও ব্যক্তির ব্যাগ তল্লাশি করার অধিকার আধিকারিকদের রয়েছে । পাশাপাশি আরও একটি কথা বলা হয়েছিল সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে, যে এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশে তদন্ত হচ্ছে। ফলে, আলাদা করে শুল্ক দপ্তরের তদন্তের প্রয়োজন নেই । সমন পাঠানোর দরকার নেই। তার মানে শুল্ক দপ্তর যদি মনে করে কাউকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন, তাহলে সেটা করতে পারবে না ? পাশাপাশি বিষয়টি শুল্ক দপ্তরের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে ৷’’ শুল্ক দপ্তরের আইনজীবীর বক্তব্য় শোনার পর, ডিভিশন বেঞ্চ মামলাটি গ্রহণ করে এবং আগামী 1 ফেব্রুয়ারি থেকে মামলাটির শুনানি করা হবে বলে জানানো হয়েছে । ইতিমধ্যে রুজিরা নারুলা ও তাঁর বোন মানেকা গম্ভীরকে তাঁদের বক্তব্য হলফনামা আকারে জানাতে বলেছে আদালত।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, গত বছর 15 মার্চ রাতে হিসাব বহির্ভূত অর্থ ও সোনা নিয়ে দমদম বিমানবন্দরে নামেন তিনি ৷ সঙ্গে ছিলেন তাঁর বোন মানেকা গম্ভীর । শুল্ক দপ্তরের তরফে জানানো হয়, রুজিরা থাইল্যান্ডের পাসপোর্ট দেখিয়ে ভারতে এসেছিলেন । কিন্তু শুল্ক দপ্তরের আধিকারিকরা তাঁর তল্লাশি করতে গেলে জানান, তিনি সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী । পরে পুলিশ এসে রুজিরা নারুলা ও তাঁর বোনকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায় । শুল্ক দপ্তর এই ভিত্তিতে রুজিরা নারুলার নামে থানায় এফআইআর দায়ের করে । পাশাপাশি তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আইন মোতাবেক সমন পাঠায় ।
আরও পড়ুন : নাড্ডার কনভয়ে হামলা সাধারণ মানুষের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ : অভিষেক
সেই সমনের বিরোধিতা করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন রুজিরা নারুলা । সেই মামলার শুনানির পর গত 17 জুন কলকাতা বিমানবন্দরে সোনা সংক্রান্ত মামলায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা নারুলাকে পাঠানো শুল্ক দপ্তরের নোটিস খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজ এই নির্দেশ দিয়েছিলেন । বিচারপতি তাঁর নির্দেশে জানিয়েছিলেন, ইতিমধ্যেই ম্যাজিস্ট্রেট এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং সেই অনুযায়ী তদন্ত হচ্ছে। ফলে, পাশাপাশি দু'টো তদন্ত চলতে পারে না । তাই আপাতত রুজিরা নারুলাকে শুল্ক দপ্তরের সমন পাঠানোর প্রয়োজন নেই।