কলকাতা, 5 ফেব্রুয়ারি : মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত এক প্রৌঢ়র মৃত্যুর ঘটনায় যাদবপুরে অবস্থিত বেসরকারি একটি হোমকে সাড়ে 10 লাখ টাকা জরিমানা করল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন। মৃত এই প্রৌঢ় সিজোফ্রেনিক ছিলেন। তবে, তিনি খুব সুন্দর সেতার বাজাতেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত করতেন। তিনি একজন মিউজিক লাভার ছিলেন। এই কারণে, জরিমানার ওই টাকা থেকে 10 লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে, সেখান থেকে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীতের কোনও পড়ুয়াকে স্কলারশিপ দেওয়ার কথা বলল রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন।
রাজ্যের স্বাস্থ্য কমিশন অর্থাৎ, ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশন-এর চেয়ারপার্সন, বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, যাদবপুরের বেসরকারি ওই হোমে মৃত 61 বছর বয়সি এই প্রৌঢ় গল্ফগ্রিনের বাসিন্দা ছিলেন। তিনি সিজোফ্রেনিক ছিলেন। তিনি কিছু করতেন না। তবে, তিনি খুব সুন্দর সেতার বাজাতেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত করতেন। 2019-এর অক্টোবর মাসে ওই হোমে এই প্রৌঢ়কে ভর্তি করানো হয়েছিল। গত 1 মে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। ইনসুলিন পাওয়া যায়নি বলে ডায়াবেটিসের কারণে তাঁর মৃত্যু হয়। এই স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন, মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগের মেডিকেল রেকর্ডসে দেখা গিয়েছে, মৃত্যুর আগে এই প্রৌঢ়র ব্লাডসুগার 1400 হয়ে গিয়েছিল। এত বেশি ব্লাডসুগার, এটা অত্যন্ত আনইউজুয়াল।
এই রোগীর মৃত্যুর ঘটনায়, রোগীর মাস্তুতো ভাই এবং বোন অভিযোগ দায়ের করেন কমিশনে। কমিশন জানিয়েছে, এই রোগীর মানসিক চিকিৎসা হয়েছে, এই চিকিৎসা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কারণ, ভায়োলেন্ট অবস্থায় এই রোগীকে ভর্তি করানো হয়েছিল ওই হোমে, পরে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। তবে, ব্লাডসুগার বেড়ে যাওয়ার কারণে এই রোগীর মৃত্যু হয়। ব্লাড সুগারের জন্য চিকিৎসা হয়নি। এই মৃত্যুর ঘটনায় ওই হোমকে সাড়ে 10 লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার এই টাকা থেকে 50 হাজার টাকা দেওয়া হবে রোগীর পরিজনদের।
আরও পড়ুন : মার্চে শুরু হচ্ছে দেশজুড়ে তৃতীয় দফার টিকাকরণ
বাকি 10 লাখ টাকা রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে দেওয়ার কথা বলেছে কমিশন। কেন? কমিশনের চেয়ারপার্সন জানিয়েছেন, মৃত এই রোগী একজন মিউজিক লাভার ছিলেন। এই 10 লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখার কথা বলা হয়েছে। এই টাকা থেকে যে সুদ পাওয়া যাবে, সেই টাকা দিয়ে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীতের কোনও পড়ুয়াকে স্কলারশিপ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।