কলকাতা, 29 জানুয়ারি : সব শিক্ষককে নিজেদের জেলায় পোস্টিং দেওয়া হবে। টুইটে একথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে বাস্তবায়িত করতে গতকালই দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক করেছেন বলে জানালেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য স্কুলশিক্ষা দপ্তরের কমিশনারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দু'মাসের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত করার ভাবনাচিন্তা রয়েছে দপ্তরের।
আজ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, " মুখ্যমন্ত্রী সরস্বতী পুজোর প্রাক্কালে ঘোষণা করেছেন যে আমাদের শিক্ষক বদলি নীতিতে কিছু পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা গতকালই শিক্ষা বিভাগের সর্বস্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। যদি শিক্ষকরা বহু দূরে থাকেন, তাহলে আসতে যেতেই তাঁদের সময় চলে যায়। তারপরে সংসার হয়ে গেলে সেখানে সময় দিতে হয়। আগে আমরা যতটা পেরেছি মহিলাদের ওই নীতির মধ্যে ব্যবস্থা করেছি। সরস্বতী পুজোর প্রাক্কালে তাই আমাদের সন্মাননা, শিক্ষকরা আরও বেশি ছাত্র-ছাত্রীর শিক্ষার ব্যবস্থা করতে পারবেন, পাশাপাশি নিজের সংসারেও সময় দিতে পারবেন। এনিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা গতকালই বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে আলোচনার পর বিজ্ঞপ্তি জারি করে দিয়েছি।"
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "কমিশনারকে বলে দিয়েছি, সব স্কুল, প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক, কোন কোন জেলায় ক'টা আছে, কত তার ছাত্র, এসব হিসেব নিতে। যাঁরা সেই জেলায় থাকেন অথচ অন্য জেলায় শিক্ষকতা করেন, তাঁদের নাম-ঠিকানা নিয়ে আসার কথা বলেছি। মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক। কিন্তু, এর রূপায়ণে হয়ত নানারকম বাধা আসতে পারে। যেমন, বদলিনীতি থাকতে পারে, নিয়ম থাকতে পারে। সেগুলি আমরা সম্পূর্ণভাবে সংশোধন করে দেব। যাতে প্রয়োজন ভিত্তিতে শূন্যপদ পূরণ করা যায়। নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা যথেষ্ট সচেতন ছিলাম। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী নিজে এটা বলার পর কাজটা অনেক সহজ হয়ে গেছে। আমরা চেষ্টা করব, যেখানে যেরকম শূন্যপদ আছে সেটা করার। এই প্রক্রিয়াটা আমরা কমিশনারকে দেখতে বলেছি। মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন সেটা শিক্ষার প্রসারে নিশ্চয়ই ভালো হবে।"
শুধু বদলি নয়, নিয়োগ প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা বন্ধ করতে দ্রুত নতুন বিধি আনার কথাও বলেন শিক্ষামন্ত্রী। জানান, নতুন বিধি মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই তা প্রকাশ করে দেওয়া হবে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, "আমরা এই প্রক্রিয়াটা করার জন্যই স্কুল সার্ভিস কমিশন ও প্রাইমারি বোর্ডের মাধ্যমে নিয়োগের নিয়মে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দিয়েছি। এরপর থেকে যত নিয়োগ হবে তা নতুন বিধি অনুযায়ী হবে। শিক্ষা দপ্তরের সুপারিশ ছিল। মুখ্যমন্ত্রী সেটাকে অনুমোদন দিয়েছেন ক্যাবিনেটে। আমরা রুলটা করেছি যাতে সামগ্রিক অর্থে সময়মতো শিক্ষক নিয়োগ করা সম্ভব হয়, দীর্ঘসূত্রিতায় যেন না থাকতে হয়। বিগত দিনে স্বচ্ছতার সঙ্গে থাকা সত্ত্বেও অনেকে অনেক প্রশ্ন করেছেন। আমি একটা জিনিস বুঝে গেছি, যাঁরা পান না তাঁরা কোনও কোনও জায়গায় দীর্ঘসূত্রিতা খোঁজেন। যাঁরা পান তাঁরা আবার বলেন, আমি এখানে কেন পেলাম, কেন বাড়ির কাছে পেলাম না। সুতরাং এবার আর সেই সুযোগ নেই। ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায়ও কিছুটা হয়ত বদল করে দেব। সব ওয়েবসাইটে দিয়ে দেওয়া হবে।"