কলকাতা, 22 জুলাই : শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে (Primary Recruitment Scam) আরও অস্বস্তিতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Bengal Minister Partha Chatterjee) ৷ এবার অভিযোগ উঠল যে প্রাথমিকে তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত 10 জনকে অনৈতিকভাবে চাকরি দেওয়া হয়েছে ৷ শুক্রবার প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে ৷ সেখানেই এই অভিযোগ করা হয় মামলাকারীর আইনজীবীর তরফে (Partha Chatterjee close associates got Primary jobs illegally) ৷
মামলাকারী রমেশ মালির তরফে আইনজীবী সুদীপ্ত দাসগুপ্ত জানান, পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অন্তত 10 জনকে বেআইনি ভাবে নিয়োগ করা হয়েছে । তাঁদের কাছে তথ্য প্রমাণ রয়েছে তার । এই ব্যাপারে সব পক্ষকে কপি দিয়ে ওয়াকিবহাল করানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতির । আগামী সোমবার ফের এই মামলার শুনানি হবে ।
অন্যদিকে এদিনের শুনানিতে 2014 সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটির দুই সদস্যকে আগামিকাল, শনিবার সিবিআই (CBI) দফতরে হাজিরার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৷ ওই দুই সদস্যের নাম দেবজ্যোতি ঘোষ ও পঞ্চানন রায়৷ তাঁদের আগামিকাল বেলা 11 ও 12টায় সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷
অভিযোগ, 2014 সালের প্রাথমিক টেটে (Primary TET) কিছু প্রশ্ন ভুলের ব্যাপারে পরে নম্বর দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল, সেই ব্যাপারে 2017 সালের 20 নভেম্বর একটি বৈঠক করা হয় । কিন্তু অদ্ভুত ভাবে সেই বৈঠকে নম্বর দেওয়ার ব্যাপারে যে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছিল, তাতে সাক্ষর ছিল না কমিটির তিন সদস্য পঞ্চানন রায়, দেবজ্যোতি ঘোষ ও সিস্টার এমিলিয়ার । কিন্তু সিস্টার এমিলিয়াকে বয়স জনিত কারণে আদালতে হাজির হতে হবে না বলে জানিয়েছিল হাইকোর্ট । তবে অন্য দুই সদস্য শুক্রবার আদালতে হাজির হলে বিচারপতি তাঁদের সামান্য কিছু জিজ্ঞাসাবাদের পর আগামিকাল সিবিআই দফতরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ।
দেবজ্যোতি ঘোষ বেলঘরিয়ার নীলিমা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক । বিচারপতির প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতির নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে বৈঠক ডাকা হয় । প্রায় সব মিটিংয়ে তিনি উপস্থিত ছিলেন । বৈঠকে ঠিক হয়েছিল যে প্রশ্নগুলির ক্ষেত্রে দু’টি উত্তর রয়েছে, সেখানে যাঁরাই চেষ্টা করেছেন, তাঁদের প্রত্যেককেই আমরা নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম । কিন্তু তিনি ওই প্রস্তাবে সাক্ষর করেননি৷ কারণ, কোনও প্রস্তাবেই সদস্যরা সাক্ষর করেন না । শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট সাক্ষর করেন । শুধুমাত্র পর্ষদের রেজিস্ট্রারে তাঁর মতো সদস্যদের সাক্ষর থাকে ।’’
অন্যদিকে আর এক সদস্য পঞ্চানন রায় জানান, 20 নভেম্বর 2017-তে যে বৈঠক হয়েছিল, তাতে উপস্থিত ছিলেন তিনি । সিস্টার এমিলিয়াও ওইদিন উপস্থিত ছিলেন । তিনিও রীতি অনুযায়ী সাক্ষর করেননি মিটিংয়ের প্রস্তাবে । অন্যদিকে সিস্টার এমিলিয়া এদিন আইনজীবী মারফত আদালতে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছেন, বৈঠকে সবাইকে নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল । অথচ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আদালতে জানিয়েছিল, তারা কিছু প্রার্থীকেই শুধুমাত্র অতিরিক্ত 1 নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল । এই বক্তব্য পরস্পরের বিরোধী বলে মন্তব্য বিচারপতির ।
আরও পড়ুন : Primary Teacher Recruitment: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় হাইকোর্টে হাজিরা সৎ রঞ্জন ওরফে চন্দন মণ্ডলের