কলকাতা, 5 জুন : কোরোনা মোকাবিলায় চলা লকডাউনে বেসরকারি স্কুলের ফি ইশু ভীষণভাবে মাথা চাড়া দিয়েছে। প্রথম থেকেই অভিভাবকরা ফি-এর চাপ থেকে মুক্ত হওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। দ্বারস্থ হয়েছেন সরকার ও স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে। কিন্তু, তাতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কোনও কাজ না হওয়ায় বিগত কয়েকদিন ধরে পথে নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছেন বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা। এবার বিক্ষোভে নামলেন টালিগঞ্জের এক বেসরকারি স্কুলের অভিভাবকরা। আজ স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তাঁদের দাবি, এই পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র টিউশন ফি নেওয়া হোক ও অন্যান্য খাতে নেওয়া ফি মকুব করা হোক। এই দাবিতে বেশ কিছুক্ষণ তাঁরা স্কুলের সামনের রাস্তা অবরোধও করেন।
সোমবার থেকে প্রায় প্রতিদিনই একের পর এক বেসরকারি স্কুলে ফি-এ ছাড়ের দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অভিভাবকরা। সোমবার কলকাতার রানিকুঠি ও দমদমের এক বেসরকারি স্কুল ও বিধান সরণির একটি স্কুলের অভিভাবকরা ফি-এর বিরুদ্ধে পথে নেমে সরব হয়েছিলেন। টালিগঞ্জের এক মিশন পরিচালিত বেসরকারি ওই স্কুলের অভিভাবকদের দাবি, প্রায় তিন মাস বন্ধ রয়েছে স্কুল। এই সময়ে অভিভাবকরা আর্থিক সমস্যায় রয়েছেন। অথচ, স্কুল বন্ধ থাকলেও তাঁদের থেকে লাইব্রেরি, ল্যাব, স্পোর্টস ফি-এর মতো বিভিন্ন খাতে ফি দাবি করা হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে অভিভাবকরা চাইছেন তাঁদের থেকে এখন শুধুমাত্র টিউশন ফি নেওয়া হোক। বাকি অপ্রয়োজনীয় খাতের সব ফি মকুব করা হোক। এই দাবি জানিয়ে স্কুলের কাছে e-mail পাঠানো হলেও কোনও উত্তর না পাওয়ায় আজ স্কুলের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি গ্রহণ করেন তাঁরা। এদিন অভিভাবকদের বিক্ষোভ ও বেশ কিছুক্ষণ পথ অবরোধের পর স্কুল কর্তৃপক্ষ আলোচনায় রাজি হয়। অভিভাবকদের একটি প্রতিনিধি দল স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ।
আলোচনা শেষে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে অভিভাবকদের বলা হয়, "আমরা আপনাদের সব দাবি ও সমস্যা শুনেছি। আমরা স্কুলের তরফ থেকে পরামর্শ দিয়েছি যে, যে অভিভাবকদের সমস্যা হচ্ছে তাঁদের সবার নাম দিয়ে স্কুলের মেল id-তে e-mail করুন। আমরা সেটা পেলেই ম্যানেজমেন্টের কাছে পাঠিয়ে দেব। যেহেতু এটা কেন্দ্রীয়ভাবে একটা ম্যানেজমেন্ট দ্বারা পরিচালিত স্কুল তাই আমরা ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব এবং যখনই আমরা ম্যানেজমেন্টের থেকে উত্তর পাব তখনই আপনাদের জানিয়ে দেব।" কর্তৃপক্ষের বক্তব্য শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন অভিভাবকরা। তাঁদের আশঙ্কা, নাম দিয়ে তাঁদের বাচ্চাদের চিহ্নিত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বচসা হয় তাঁদের। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়, 14 দিন পর অর্থাৎ আগামী 19 জুন এই বিষয়ে আবার স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হবে অভিভাবকদের।