কলকাতা, 6 নভেম্বর : ভাইফোঁটার দিন সকালে এক মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনার সাক্ষী থাকল কলকাতা ৷ বেপরোয়া বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল এক বাইক চালকের। মৃতের নাম শুভজিৎ সুর। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র শুভজিৎ এদিন জেঠুকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছিল সে। আর সেটাই কাল হল। বেপরোয়া বাসের তলায় চলে গিয়ে চিরতরে হারিয়ে গেল ভাই শুভজিৎ সুর। সবে মাত্র সংসারের হাল ধরে ছিল সে ৷ কিন্তু এদিন সকালে সবে শেষ হয়ে যায় ৷ এদিন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে দিদির থেকে ফোঁটা নেওয়ার কথা ছিল শুভজিতের। তা আর হল না। কান্নায় ভেঙে পড়ে দিদি সুপর্ণা বলেন, "বাবা মারা যাওয়ার পর ছোট ভাইয়ের মুখের দিকে তাকিয়েই বেঁচে ছিল মা।"
সকাল 10টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে সার্ভে পার্ক থানা এলাকার বাঘাযতীন ফ্লাইওভারের সামনে। ঘটনার পর বাসের চালক পালিয়ে গেলেও কন্ডাক্টরকে আটক করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, এদিন বাঘাযতীন উড়ালপুলের দিক থেকে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে আসছিল গড়িয়া-বাগবাজার রূটের একটি বাস। বাসটি ফ্লাইওভার থেকে নামতেই বাসের চাকার তলায় চলে আসেন এক বাইক চালক। অভিযোগ, বাসের চাকার তলায় আটকে গেলেও ওই যাত্রীকে ওই অবস্থায় টানতে টানতে প্রায় ৫০ মিটার দূরে নিয়ে যায় ওই বাস চালক। বাসের অন্য যাত্রীরা চালককে বাস থামাতে বললেও বাস থামেনি ৷
আরও পড়ুন : Weather Update : কলকাতায় কমল তাপমাত্রা, বাড়ল শীতের অনুভূতি
এরপরেই প্রায় চলন্ত বাস থেকেই লাফ দিয়ে পালায় ওই বাস চালক। পালানোর চেষ্টা করে ওই বাসের কন্ডাক্টারও ৷ ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যায় পুলিশ ৷ আহত ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ৷ ঘাতক বাসটিকে আটক করেছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে ওই বাসের কন্ডাক্টরকেও ৷ তবে চালকের খোঁজ মেলেনি ৷ তাঁর খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ৷
দুর্ঘটনার তদন্তে নামল কলকাতা পুলিশের ফ্যাটাল স্কোয়াড ট্রাফিক পুলিশ। বাসটিকে ঘটনাস্থল থেকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর সেটিকে পরীক্ষা করার জন্য ঘটনাস্থলে আসবেন কলকাতা পুলিশের ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। দেখা হবে চালকের কোনও ভুল ছিল কি না ? পাশাপাশি দেখা হবে বাসটির গতি কত ছিল ? বাসের ক্যাপাসিটি কী ছিল ? বাসের টায়ার ঠিক ছিল কি না ? তাছাড়াও দেখা হবে ঘটনাটি ঘটনার পর বাসের চালক বাস থামানোর কোনও চেষ্টা করেছিলেন কি না ? পাশাপাশি মৃতের স্কুটিরও ফরেন্সিক পরীক্ষা করা হবে বলেও লালবাজার সূত্রের খবর।