কলকাতা, 11 অগস্ট : তিনি ভারতের প্রথম টেস্ট টিউব বেবির (Test Tube Baby) জনক ৷ জীবিত অবস্থায় অবহেলিত হয়েছেন ৷ অবশেষে প্রয়াণের 40 বছর পর চিকিৎসক সুভাষ মুখোপাধ্যায় (Doctor Subhash Mukherjee)-কে দেওয়া হচ্ছে তাঁর যোগ্য সম্মান ৷ চিকিৎসা বিজ্ঞানে তাঁর অবদানকে সম্মান জানানোর সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ৷ সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কর্মস্থল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল (NRS Medical College and Hospital)-র ছাত্রাবাসটিকে তাঁর নামে নামাঙ্কিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷
সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর এ নিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ৷ যেখানে বলা হয়েছে ছাত্রাবাস চত্বরে সুভাষ মুখোপাধ্যায় এর একটি আবক্ষ মূর্তি বসানো হবে ৷ এমনকি ছাত্রাবাসের যে ঘরে তিনি থাকতেন ৷ সেই ঘরে তাঁর নামের স্মৃতিফলক বসানো হবে ৷ এতদিন নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে তাঁর নামের একটি চেয়ার ছিল ৷ এবার সুভাষ মুখোপাধ্যায় এর ভারতের চিকিৎসা ক্ষেত্রে এই যুগান্তকারী অবদানকে বড় আকারে সম্মান জানাতে চলেছে রাজ্য সরকার ৷ স্বাস্থ্য দফতরের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে চিকিৎসক মহল ৷
প্রসঙ্গত, 1978 সালের 3 অক্টোবর সুভাষ মুখোপাধ্যায় এর চিকিৎসা এবং তত্ত্বাবোধানে দেশের প্রথম টেস্ট টিউব বেবি কানুপ্রিয়া আগরওয়াল (Kanupriya Agarwal) ওরফে ‘দুর্গা’-র জন্ম হয় ৷ 70’র দশকে সীমিত চিকিৎসা পরিকাঠামোর মধ্যেই টেস্ট টিউব বেবি’র জন্ম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সুভাষ মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁর নিরলস প্রচেষ্টায় জীবন পায় ভারতের প্রথম এবং বিশ্বের দ্বিতীয় টেস্ট টিউব বেবি ৷
আরও পড়ুন : আসানসোল জেলা হাসপাতালে শুরু হল বিনামূল্যে ক্যানসার চিকিৎসা
তবে, তাঁর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারকে মান্যতা দেয়নি তৎকালীন সরকার ৷ তাঁর জীবদ্দশায় এই আবিষ্কারের কোনও স্বীকৃতি পাননি চিকিৎসক সুভাষ মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁর কাজকে ভুয়ো বলে প্রমাণ করার চেষ্টা হয় ৷ তৎকালীন সরকার তাঁর বিরুদ্ধে একটি তদন্ত কমিটিও বসিয়েছিল ৷ যে কমিটি সুভাষ মুখোপাধ্যায় এর আবিষ্কারকে ভুল বলে খারিজ করে দেয় ৷ এমনকি শাস্তি স্বরূপ তাঁকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয় ৷ এই অপমান মেনে নিতে পারেননি তিনি ৷ অপমান এবং অবহেলা সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন চিকিৎসক সুভাষ মুখোপাধ্যায় ৷ 1981 সালের 19 জুন তাঁর মৃত্যু হয় ৷ আর মৃত্যুর 40 বছর পর তাঁকে সম্মান জানিয়ে যেন তাঁর সেই আবিষ্কারকে স্বীকৃতি দিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর ৷