ETV Bharat / city

"কাউকে হত্যার লাইসেন্স রয়েছে ডাক্তারদের?" গর্ভস্থ সন্তানকে হারিয়ে প্রশ্ন প্রসূতির

প্রসূতির গর্ভেই শিশু মৃত্যু, কাঠগড়ায় RG কর হাসপাতাল

পরিবারের দাবি, সারারাত এই প্রসূতির পরিজনরা হাসপাতালে থাকলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে হাসপাতাল থেকে কোনও ঘোষণা করা হয়নি ।
author img

By

Published : Sep 16, 2019, 8:59 PM IST

কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর : জন্মের পরই সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যু ৷ অভিযোগ উঠল RG কর হাসপাতালের দিকে ৷ প্রসূতির দাবি, চিকিৎসকের গাফিলতিতে গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে ৷

প্রসূতির নাম কৃষ্ণা শীল ৷ বয়স 34 ৷ তিনি উলটোডাঙা মেইন রোডের বাসিন্দা । গত 31 অগাস্ট তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল RG কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আউটডোরে । ওই দিন তাঁকে ভরতি নেওয়া হয় ।

প্রসূতির পরিবারের দাবি, 31 অগাস্ট বিকাল সাড়ে তিনটে নাগাদ কৃষ্ণাকে লেবার রুমে কিছু পরীক্ষা করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় । সারারাত তাঁকে সেখানে রাখা হয় । কোনও ডাক্তার দেখেননি । যদিও কৃষ্ণা চিকিৎসকদের বলেন, তিনি অস্বস্তি অনুভব করছেন । কিন্তু, হাসপাতালে অশান্তি বাধাতে বারণ করা হয়েছিল তাঁকে । অবশেষে ওই রাতে ডিউটিতে ছিলেন যে ডাক্তার এবং PGT ডাক্তাররা, তাঁদের চূড়ান্ত অবহেলার কারণে এই প্রসূতির গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয় ।

পরিবারের দাবি, সারারাত এই প্রসূতির পরিজনরা হাসপাতালে থাকলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে হাসপাতাল থেকে কোনও ঘোষণা করা হয়নি । এবিষয়ে RG করের অধ্যক্ষ শুদ্ধোধন বটব্যালের বক্তব্য জানতে চেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় । তবে তাঁর বক্তব্য মেলেনি ।

image
পরিবারের দাবি, সারারাত এই প্রসূতির পরিজনরা হাসপাতালে থাকলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে হাসপাতাল থেকে কোনও ঘোষণা করা হয়নি ।

কৃষ্ণার স্বামী সুজয় দাস বলেন, "হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি । স্বাস্থ্যভবনেও স্পিড পোস্টে অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে ।" তিনি বলেন, "গত 31 অগাস্ট সকালে আমার স্ত্রী যখন আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আউটডোরে যান, তখন ওঁকে ভরতি নেওয়া হয় । ওঁর ব্লাড প্রেসার বেশি ছিল । এই জন্য অবজ়ারভেশনে রেখে সিজ়ারিয়ান ডেলিভারি করা হবে বলে জানানো হয়েছিল । দুপুর 3টে নাগাদ কিছু টেস্ট করানোর জন্য আমার স্ত্রীকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয় । আমরা যখনই যোগাযোগ করে জানার চেষ্টা করেছি, কী চলছে, আমাদের বলা হয়েছে পরীক্ষা চলছে । বাইরে অপেক্ষা করছিলাম । অনেক পরে সিজ়ারের জন্য বন্ডে সই করার কথা বলা হয় আমাদের ।"

সুজয়বাবুর কথায়, "স্ত্রীকে বলা হয়েছিল আপনি ভালো আছেন, অপেক্ষা করুন । আমাদের কিছু জানানো হয়নি । স্ত্রীর কাছে পরে জেনেছি, বসে থাকতে থাকতে ও ঘুমিয়ে পড়েছিল । ভোর 4টের সময় যখন ওকে তোলা হয়, তখন ও দেখে বেবি নড়ছে না । আমাদের সন্তান তো আর ফিরে আসবে না । কিন্তু, আমরা চাই, এভাবে যেন অন্য কোনও মায়ের কোল খালি না হয় ।"

পরিবারের দাবি, সিনিয়র চিকিৎসকের বদলে কর্তব্যরত এক PGT ডাক্তার ছিলেন ৷ তিনি কৃষ্ণাকে বাড়ির লোককে ডাকতে বলেন । পরে অপারেশন থিয়েটারের ইনচার্জ জানিয়েছিলেন ৷ বেবির মুভমেন্ট হচ্ছে না । এ ক্ষেত্রে বেবি নাও বাঁচতে পারে । পরে বলা হয়, প্রসূতির পরিবার ব্লাড প্রেসারের জন্য একটি ওষুধ খাওয়ানোয় বেবি মারা গেছে ৷ তবে কোনও ওষুধ খাওয়ানো হয়নি, দাবি করেছে প্রসূতির পরিবার ৷

সুজয়বাবুর কথায়, "পর দিন আমার স্ত্রীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয় । বলা হয়, গর্ভস্থ মৃত শিশুকে বের করার জন্য নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করা হবে । এদিকে, সময় চলে যাচ্ছে, আমাদের চিন্তা বাড়ছিল । কারণ, গর্ভে মৃত শিশু ‌। এর জন্য কোনও সমস্যা হতে পারে । এর পরে গত 3 সেপ্টেম্বর USG করে বলা হয়, ওষুধ দেওয়া হচ্ছে ৷ নরমাল ডেলিভারি করা হবে । শেষ পর্যন্ত নরমাল ডেলিভারি করা হয়নি । বলা হয়, বেবি বড় হয়ে গেছে, সিজ়ারিয়ান ডেলিভারি করাতে হবে । এই ভাবে আমাদের সন্তানকে আমরা হারালাম ।"

5 সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় কৃষ্ণা শীলকে । 14 সেপ্টেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রসূতির পরিবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে ৷ পরিবারের দাবি, প্রথমে অভিযোগ নেওয়া হয়নি ৷ তবে বিচারের জন্য তাঁরা লড়াই করবেন । যেখানে অভিযোগ জানাতে হয়, জানাবেন । প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকেও জানাবেন ।

গর্ভস্থ সন্তানকে হারিয়ে কৃষ্ণার প্রশ্ন, ''পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি (PGT) ডাক্তারদের কি অধিকার রয়েছে কাউকে হত্যা করার? যদিও, এই ডাক্তাররা হাসপাতালের মেরুদণ্ড । তাঁরা কি মেডিকেল এথিকস কলঙ্কিত করতে পারেন?''

কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর : জন্মের পরই সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যু ৷ অভিযোগ উঠল RG কর হাসপাতালের দিকে ৷ প্রসূতির দাবি, চিকিৎসকের গাফিলতিতে গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে ৷

প্রসূতির নাম কৃষ্ণা শীল ৷ বয়স 34 ৷ তিনি উলটোডাঙা মেইন রোডের বাসিন্দা । গত 31 অগাস্ট তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল RG কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আউটডোরে । ওই দিন তাঁকে ভরতি নেওয়া হয় ।

প্রসূতির পরিবারের দাবি, 31 অগাস্ট বিকাল সাড়ে তিনটে নাগাদ কৃষ্ণাকে লেবার রুমে কিছু পরীক্ষা করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয় । সারারাত তাঁকে সেখানে রাখা হয় । কোনও ডাক্তার দেখেননি । যদিও কৃষ্ণা চিকিৎসকদের বলেন, তিনি অস্বস্তি অনুভব করছেন । কিন্তু, হাসপাতালে অশান্তি বাধাতে বারণ করা হয়েছিল তাঁকে । অবশেষে ওই রাতে ডিউটিতে ছিলেন যে ডাক্তার এবং PGT ডাক্তাররা, তাঁদের চূড়ান্ত অবহেলার কারণে এই প্রসূতির গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয় ।

পরিবারের দাবি, সারারাত এই প্রসূতির পরিজনরা হাসপাতালে থাকলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে হাসপাতাল থেকে কোনও ঘোষণা করা হয়নি । এবিষয়ে RG করের অধ্যক্ষ শুদ্ধোধন বটব্যালের বক্তব্য জানতে চেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয় । তবে তাঁর বক্তব্য মেলেনি ।

image
পরিবারের দাবি, সারারাত এই প্রসূতির পরিজনরা হাসপাতালে থাকলেও, তাঁর শারীরিক অবস্থার বিষয়ে হাসপাতাল থেকে কোনও ঘোষণা করা হয়নি ।

কৃষ্ণার স্বামী সুজয় দাস বলেন, "হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি । স্বাস্থ্যভবনেও স্পিড পোস্টে অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে ।" তিনি বলেন, "গত 31 অগাস্ট সকালে আমার স্ত্রী যখন আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আউটডোরে যান, তখন ওঁকে ভরতি নেওয়া হয় । ওঁর ব্লাড প্রেসার বেশি ছিল । এই জন্য অবজ়ারভেশনে রেখে সিজ়ারিয়ান ডেলিভারি করা হবে বলে জানানো হয়েছিল । দুপুর 3টে নাগাদ কিছু টেস্ট করানোর জন্য আমার স্ত্রীকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয় । আমরা যখনই যোগাযোগ করে জানার চেষ্টা করেছি, কী চলছে, আমাদের বলা হয়েছে পরীক্ষা চলছে । বাইরে অপেক্ষা করছিলাম । অনেক পরে সিজ়ারের জন্য বন্ডে সই করার কথা বলা হয় আমাদের ।"

সুজয়বাবুর কথায়, "স্ত্রীকে বলা হয়েছিল আপনি ভালো আছেন, অপেক্ষা করুন । আমাদের কিছু জানানো হয়নি । স্ত্রীর কাছে পরে জেনেছি, বসে থাকতে থাকতে ও ঘুমিয়ে পড়েছিল । ভোর 4টের সময় যখন ওকে তোলা হয়, তখন ও দেখে বেবি নড়ছে না । আমাদের সন্তান তো আর ফিরে আসবে না । কিন্তু, আমরা চাই, এভাবে যেন অন্য কোনও মায়ের কোল খালি না হয় ।"

পরিবারের দাবি, সিনিয়র চিকিৎসকের বদলে কর্তব্যরত এক PGT ডাক্তার ছিলেন ৷ তিনি কৃষ্ণাকে বাড়ির লোককে ডাকতে বলেন । পরে অপারেশন থিয়েটারের ইনচার্জ জানিয়েছিলেন ৷ বেবির মুভমেন্ট হচ্ছে না । এ ক্ষেত্রে বেবি নাও বাঁচতে পারে । পরে বলা হয়, প্রসূতির পরিবার ব্লাড প্রেসারের জন্য একটি ওষুধ খাওয়ানোয় বেবি মারা গেছে ৷ তবে কোনও ওষুধ খাওয়ানো হয়নি, দাবি করেছে প্রসূতির পরিবার ৷

সুজয়বাবুর কথায়, "পর দিন আমার স্ত্রীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয় । বলা হয়, গর্ভস্থ মৃত শিশুকে বের করার জন্য নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করা হবে । এদিকে, সময় চলে যাচ্ছে, আমাদের চিন্তা বাড়ছিল । কারণ, গর্ভে মৃত শিশু ‌। এর জন্য কোনও সমস্যা হতে পারে । এর পরে গত 3 সেপ্টেম্বর USG করে বলা হয়, ওষুধ দেওয়া হচ্ছে ৷ নরমাল ডেলিভারি করা হবে । শেষ পর্যন্ত নরমাল ডেলিভারি করা হয়নি । বলা হয়, বেবি বড় হয়ে গেছে, সিজ়ারিয়ান ডেলিভারি করাতে হবে । এই ভাবে আমাদের সন্তানকে আমরা হারালাম ।"

5 সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় কৃষ্ণা শীলকে । 14 সেপ্টেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে প্রসূতির পরিবার লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে ৷ পরিবারের দাবি, প্রথমে অভিযোগ নেওয়া হয়নি ৷ তবে বিচারের জন্য তাঁরা লড়াই করবেন । যেখানে অভিযোগ জানাতে হয়, জানাবেন । প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকেও জানাবেন ।

গর্ভস্থ সন্তানকে হারিয়ে কৃষ্ণার প্রশ্ন, ''পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি (PGT) ডাক্তারদের কি অধিকার রয়েছে কাউকে হত্যা করার? যদিও, এই ডাক্তাররা হাসপাতালের মেরুদণ্ড । তাঁরা কি মেডিকেল এথিকস কলঙ্কিত করতে পারেন?''

Intro:কলকাতা, ১৫ সেপ্টেম্বর: পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনি (PGT) ডাক্তারদের কি লাইসেন্স রয়েছে, কাউকে হত্যা করার? যদিও, এই ডাক্তাররা হাসপাতালের মেরুদণ্ড। তাই বলে, তাঁরা কি মেডিকেল এথিকস কলঙ্কিত করতে পারেন? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এমনই প্রশ্ন তুললেন এক প্রসূতি এবং তাঁর স্বামী। এই প্রসূতিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। অভিযোগ, PGT ডাক্তারদের অবহেলায় তাঁর গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনা আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের।Body:এই প্রসূতির নাম কৃষ্ণা শীল (৩৪)। তিনি উল্টোডাঙা মেইন রোডের বাসিন্দা। গত ৩১ আগস্ট তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আউটডোরে। ওই দিন তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়। এই প্রসূতি এবং তাঁর স্বামী সুজয় দাস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগে এমনই জানিয়েছেন, ওই দিন (৩১ অগাস্ট) বিকাল সাড়ে ৩টে নাগাদ এই প্রসূতিকে লেবার রুমে কিছু পরীক্ষা করানোর জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু, তখন থেকে সারারাত তাঁকে সেখানে রাখা হয়। কোনও ডাক্তার দেখেননি। যদিও এই প্রসূতি ডাক্তারদের বলেন, তিনি অস্বস্তি অনুভব করছেন। কিন্তু, হাসপাতালে অশান্তি না করার কথা বলে রূঢ়ভাবে উত্তর আসে। অবশেষে ওই রাতে ডিউটিতে ছিলেন যে ডাক্তার এবং PGT ডাক্তাররা, তাঁদের চূড়ান্ত অবহেলার কারণে এই প্রসূতির গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু হয়। যে ডাক্তারের অধীনে এই প্রসূতিকে ভরতি করানো হয়েছিল, সেই ডাক্তারকে ডিউটিতে থাকা ওই ডাক্তাররা বিষয়টি ওই রাতে জানাননি। বরং, রাত দুটো নাগাদ প্রসূতির পরিজনদের জানানো হয়েছে বলে ওই ডাক্তারকে মিথ্যা রিপোর্ট করা হয়েছে। লিখিত এই অভিযোগপত্রে জানানো হয়েছে, সারারাত এই প্রসূতির পরিজনরা হাসপাতলে থাকলেও, প্রসূতির শারীরিক অবস্থার বিষয়ে হাসপাতাল থেকে কোনও ঘোষণা করা হয়নি। এই ঘটনায় তদন্তের জন্য এই প্রসূতি এবং তাঁর স্বামী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ওই অভিযোগে‌ আবেদন জানিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, এভাবে কোনও মাকে যাতে আর তাঁর সন্তানকে হারাতে না হয়, তার জন্য ওই রাতে লেবার রুমে PGT সহ ডিউটিরত অন্য ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এই অভিযোগের বিষয়ে এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অধ্যক্ষ শুদ্ধোধন বটব্যালের বক্তব্য জানতে চেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তাঁর বক্তব্য মেলেনি।

সুজয় দাস বলেন, "হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অভিযোগ জানিয়েছে। স্বাস্থ্যভবনেও স্পিড পোস্টে অভিযোগপত্র পাঠানো হয়েছে।" তিনি বলেন, "গত ৩১ অগাস্ট সকালে আমার স্ত্রী যখন আরজি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আউটডোরে যায়, তখন ওকে ভর্তি নেওয়া হয়। ওর ব্লাড প্রেসার বেশি ছিল। এই জন্য অবজারভেশনে রেখে সিজার করানো হবে বলে জানানো হয়েছিল। ওই দিন দুপুর ৩টার সময় কিছু টেস্ট করানোর জন্য আমার স্ত্রীকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা যখনই যোগাযোগ করে জানার চেষ্টা করেছি, কী চলছে, আমাদের বলা হয়েছে টেস্টিং চলছে। আমরা বাইরে অপেক্ষা করছিলাম। অনেক পরে সিজারের জন্য বন্ডে সই করার কথা বলা হয় আমাদের।"

তিনি বলেন, "কিছু করা হয়নি। দুপুর ৩টা থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত খাবার নেই। আমার স্ত্রী চুড়িদার পরেছিল। আমরা বলেছিলাম নাইটির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি, যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। আমার স্ত্রী যতবার বলেছিল, লাইনে রয়েছে ওকে দেওয়া হোক, বলা হয়, এখন হবে না, রেস্ট নিয়ে নিন, ঘুমিয়ে পড়ুন। আপনি ভালো আছেন, অপেক্ষা করুন। আমাদের কিছু জানানো হয়নি। আমার স্ত্রীর কাছে পরে জেনেছি, বসে থাকতে থাকতে ও ঘুমিয়ে পড়েছিল। ভোর ৪টের সময় যখন ওকে তোলা হয়, তখন ও দেখে বেবি নড়ছে না।" তিনি বলেন, "বড় ডাক্তারকে জানানো হয়নি। ডিউটতে থাকা এক ডাক্তার আমার স্ত্রীকে বাড়ির লোককে ডাকতে বলেন। আমরা গেলে অপারেশন থিয়েটারের ইনচার্জ বলেন, বেবির মুভমেন্ট হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে বেবি নাও থাকতে পারে। ব্লাড প্রেসারের জন্য একটি ওষুধ খাওয়ানো হয়েছিল। এর জন্য বেবি মারা গিয়েছে। এটা মিথ্যা কথা। কোনও ওষুধ খাওয়ানো হয়নি।"
Conclusion:সুজয় দাস বলেন, "পরের দিন আমার স্ত্রীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়, বলা হয়, গর্ভস্থ মৃত শিশুকে বের করার জন্য নরমাল ডেলিভারিরর চেষ্টা করানো হবে। এদিকে, সময় চলে যাচ্ছে, আমাদের চিন্তা বাড়ছিল। কারণ, গর্ভে মৃত শিশু রয়েছে‌। এর জন্য কোনও সমস্যা হতে পারে। এর পরে গত ৩ সেপ্টেম্বর USG করে বলা হয়, ওষুধ দেওয়া হচ্ছে, নরমাল ডেলিভারি করানো হবে। শেষ পর্যন্ত নরমাল ডেলিভারি করানো হয়নি। বলল, বেবি বড় হয়ে গিয়েছে, সিজার করাতে হবে। এই ভাবে আমাদের সন্তানকে আমরা হারালাম।" গত ৫ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয় কৃষ্ণা শীলকে। সুজয় দাস বলেন, "এর পরে আমার স্ত্রী একটু সুস্থ হওয়ার পরে, গত শনিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি। প্রথমে আমাদের অভিযোগ নেওয়া হচ্ছিল না।" তিনি বলেন, "বিচারের জন্য আমরা লড়াই করছি। আমরা বিচার চাই। যেখানে যেখানে অভিযোগ জানাতে হয়, জানাব। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকেও জানাব। আমাদের সন্তান তো আর ফিরে আসবে না। কিন্তু, আমরা চাই, এভাবে যেন অন্য আর কোনও মায়ের কোল খালি না হয়ে যায়।"
_______


ছবি:
wb_kol_02a_medical_negligence_rgkar_pic_7203421
থেকে
wb_kol_02d_medical_negligence_rgkar_pic_7203421
মৃত সন্তান এবং মায়ের ছবি


wb_kol_02e_medical_negligence_rgkar_pic_7203421
এবং,
wb_kol_02f_medical_negligence_rgkar_pic_7203421
অভিযোগপত্রের ছবি





ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.