কলকাতা, 17 জুন : শোভন চট্টোপাধ্যায়ের (Sovan Chatterjee) সঙ্গে গত মার্চ মাস থেকে রাজনীতির কোনও যোগ নেই ৷ নারদ মামলার (Narada Case) শুনানিতে আজ এ কথা বললেন তাঁর আইনজীবী ৷
আজ আবারও নারদ মামলার শুনানি শুরু হয় কলকাতা হাইকোর্টের পাঁচ বিচারপতির বিশেষ বেঞ্চে ৷ অভিযুক্তদের তরফে সওয়াল করেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা । শুরুতেই নিজের যুক্তির স্বপক্ষে বিভিন্ন রায়ের উল্লেখ করেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা । তিনি বলেন, "মামলা এ রাজ্য থেকে ভিন রাজ্যে সরানোর যে আবেদন সিবিআই করেছে তার কোনও গ্রহণযোগ্যতা নেই । যদি কোথাও কোনও অশান্তি হয়েও থাকে, তাহলেও বিকল্প আইনি পন্থা সিবিআই-এর কাছে ছিল । তারা সেটা না করে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে !" তিনি উল্লেখ করেন, "সিবিআই আদালতের বিচারক ও একজন ম্যাজিস্ট্রেটের মতোই সমান ক্ষমতা সম্পন্ন ।"
আরও পড়ুন: বিচার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার অভিযোগ ভিত্তিহীন, দাবি মদনের আইনজীবীর
লুথরা বলেন, "মামলার সঙ্গে যুক্ত সব পক্ষের বক্তব্য না-শুনে আদালত যদি কোনও নির্দেশ দেয়, আদালতের সেই ক্ষমতা রয়েছে ওই নির্দেশকে পুনর্বিবেচনা করার ৷ জামিন খারিজ হওয়ার আগে অভিযুক্তের অধিকার রয়েছে শুনানিতে অংশগ্রহণ করার ।" তখন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় বলেন, "সিবিআই-এর বক্তব্য, তারা আইনশৃঙ্খলার অবনতির কারণে উপযুক্তভাবে শুনানি প্রক্রিয়ায় নিজেদের বক্তব্য পেশ করতে পারেনি ।"
আরও পড়ুন : ‘ডামি-জামাই’ শোভনের ‘পদবিত্যাগ ও সম্পত্তিদান’ নিয়ে টুইট বাণ কুণালের
তখন আইনজীবী বলেন, "ওই দিন আমার অধিকার নিয়ে শুনানি হয়েছে । এই বিচার পর্বে আমি যুক্ত ছিলাম । আমার অধিকার নিয়ে বিচার করে রায় দেওয়া হয়েছিল ।" তখন বিচারপতি সৌমেন সেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরাকে প্রশ্ন করেন, "অভিযুক্তদের রাজনৈতিক যোগ রয়েছে । মনে করুন আপনারা এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করলেন যাতে রায় আপনাদের পক্ষে যায় । তখন তাকে আপনারা ন্যায়বিচার বলে দাবি করতে পারবেন ?" তখন আইনজীবী লুথরা বলেন,"নির্দিষ্ট পক্ষের অনুপস্থিতিতে কখনওই রায়দান করা যায় না । সিবিআই বলছে আইন ভঙ্গ হয়েছে । আমাকে যখন বাড়ি থেকে বেআইনিভাবে তুলে নিয়ে আসা হল তখন আইনের শাসন কোথায় ছিল ?" এরপরই নিজের বক্তব্য শেষ করেন আইনজীবী সিদ্ধার্থ লুথরা ।
আরও পড়ুন: রত্নার ‘মার’ থেকে বাঁচতে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি বৈশাখীর
এরপর বলতে শুরু করেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী সৌরভ চট্টোপাধ্যায় ৷ তিনি শুরুতেই জানালেন, "চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কোনও রাজনৈতিক যোগ নেই ।" আদালত তখন জানায়, আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ একই ধরনের, তাই পনেরো-কুড়ি মিনিটের মধ্যে আপনি আপনার বক্তব্য শেষ করুন । সৌরভ চট্টোপাধ্য়ায় তখন বলেন, "সিবিআই আদালতের বিচারক যখন মামলা শুনছেন, তখন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে । এটা বিশেষ বিচারক এবং অভিযুক্তদের কাউকে জানানো হয়নি । মানুষের জমায়েত বা বিক্ষোভের বিষয় সামনে আনা হয়েছে পরবর্তী ক্ষেত্রে, পরিকল্পনা করে । সন্ধে সাড়ে সাতটার সময় জামিন দেওয়া হলেও কেন হাইকোর্টের নির্দেশ না-আসা পর্যন্ত আটকে রাখল সিবিআই ?"
আরও পড়ুন : বৈশাখীর সাহসকে কুর্নিশ অনুরাগীর, বোল্ড ম্য়াডোনার সঙ্গে তুলনা বাঙালি বধূর
তখন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, "অভিষেক মনু সিংভি এবং সিদ্ধার্থ লুথরা যে যে বিষয়ে আলোচনা করেছেন, সেই বিষয়গুলি আপনি আবার বলছেন । তার মানে আপনার নতুন কোনও বক্তব্য নেই ! আপনার বক্তব্য শেষ হয়ে গিয়েছে ।" এরপরই আজকের মতো এই মামলার শুনানি শেষ হয় ৷ আগামী সোমবার ফের শুনানি হবে এই মামলার ৷