কলকাতা, 5 সেপ্টেম্বর: "এখনও মরে যাইনি ৷" সোমবার তৃণমূল ভবনে (Trinamool Congress Bhawan) এসে 'মনে করিয়ে দিলেন' মুকুল রায় (Mukul Roy) ৷ ঘাসফুল অথবা পদ্ম, যে শিবিরেই থাকুন না কেন, দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক ধরে রাজ্য রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ছিলেন মুকুল ৷ কিন্তু বিজেপি ছেড়ে দ্বিতীয় দফায় তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার পর থেকেই কেমন যেন আড়ালে চলে গিয়েছেন এই দুঁদে রাজনীতিক ৷ রাজনৈতিক মহলের একাংশ অবশ্য এর পিছনে অন্যতম কারণ হিসাবে তাঁর অসুস্থতাকেই দেখছেন ৷ বস্তত, গত প্রায় এক-দেড় বছর শরীরটা ভালো ছিল না মুকুলের ৷ তাঁর কথাবার্তাতেও অসংলগ্নতা লক্ষ করা যাচ্ছিল ৷ কিন্তু এদিন তাঁর বক্তব্যে সামান্য হলেও বদল ধরা পড়ে ৷ প্রসঙ্গত, একদিকে যখন পঞ্চায়েত ভোট দরজায় কড়া নাড়ছে, ঠিক তখনই মুকুল যদি তাঁর পুরনো ফর্মে ফেরেন, তাহলে তা যে তৃণমূল কংগ্রেসকে বাড়তি অক্সিজেন দেবে, তা নিয়ে কোনও সন্দে নেই ৷
একটা সময় মমতা বন্দোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সংগঠনের দু'নম্বর ব্যক্তি ছিলেন তিনি ৷ সত্যি বলতে কী, পশ্চিমবঙ্গকে হাতের তালুর মতোই চেনেন মুকুল ৷ কেউ কেউ তাঁর মধ্যে প্রয়াত বাম নেতা অনিল বিশ্বাসের ছায়া দেখতে পেতেন ৷ তাঁকে রাজনৈতিক মহল 'চাণক্য' হিসাবেই দেখত ৷ এহেন গুরুত্বপূর্ণ, আপাদমস্তক রাজনৈতিক একজন মানুষ গত এক-দেড় বছরে যেন রাজনীতি থেকেই হারিয়ে গিয়েছিলেন !
আরও পড়ুন: খারিজ হচ্ছে না বিধায়ক পদ, বিজেপিতেই মুকুল; রায় স্পিকারের
মেট্রোপলিটনে নতুন তৃণমূল ভবনের উদ্বোধনের পর সোমবার দ্বিতীয়বারের জন্য এখানে এসেছিলেন মুকুল ৷ উদ্বোধনের দিন একবার মেট্রোপলিটনের এই কার্যালয়ে হাজির হলেও বেশিক্ষণ এখানে ছিলেন না তিনি ৷ সোমবার রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীর সঙ্গে বৈঠক ছিল তাঁর ৷ বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মুকুল বলেন, "আমি এখনও মরে যাইনি ৷ বেঁচে আছি ৷" এদিন সাংবাদিকরা তাঁর কাছে জানতে চান, কবে থেকে আবার তাঁকে রাজনীতির ময়দানে সক্রিয় হতে দেখা যাবে ? কবে থেকে ফের জেলা সফরে যাবেন তিনি ? জবাবে মুকুল রায় জানান, দল যখন যেখানে যেমন দায়িত্ব তাঁকে দেবে, তিনি তা পালন করবেন ৷
একইসঙ্গে, এদিন মুকুল সাংবাদিকদের জানান, আগের থেকে এখন অনেকটাই সুস্থ রয়েছেন তিনি ৷ আর সেই কারণেই সোমবার দলীয় কার্যালয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন ৷ দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী 8 (আট) সেপ্টেম্বর তৃণমূলের বুথকর্মী সম্মেলনেও মুকুলকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, মুকুল রায় অসুস্থ হলেও এখনও দলে তাঁর ভালোই প্রভাব রয়েছে ৷ একের পর এক দুর্নীতিতে যখন তৃণমূলের নাজেহাল দশা, এমন একটা সময় তাহলে কি ফের একবার দলের হাল ধরতে পুরনো সেনাপতি মুকুলের উপরেই ভরসা রাখতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ? এর উত্তর দেবে সময় ৷