কলকাতা, 24 অগস্ট : পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায়ের (Mukul Roy) নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে অকারণ দেরি করাতে চাইছে অন্য পক্ষ ৷ আদালতের সামনে এই অভিযোগই তুলে ধরলেন মামলাকারী অম্বিকা রায়ের আইনজীবী ৷ এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মাফিক, এই ধরনের মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ার কথা ৷ তা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার ও মুকুল রায় মামলার শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন ৷’’ মঙ্গলবার (আজ) মামলার শুনানিতে সব পক্ষই কলকাতা হাইকোর্টে জানিয়েছে, তারা প্রত্যেকে হলফনামা আকারে আদালতে নিজেদের বক্তব্য পেশ করলেও পরস্পরকে সেই হলফনামার প্রতিলিপি এখনও পাঠায়নি ৷ এরই প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল (Acting Chief Justice Rajesh Bindal) ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে মামলার সমস্ত পক্ষকে একে-অপরকে নিজেদের হলফনামার প্রতিলিপি পাঠাতে হবে ৷ আগামী 6 সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Calcutta High Court : পিএসির চেয়ারম্যান সংক্রান্ত মামলায় হলফনামা দিতে চান বিধানসভা স্পিকার
মামলাকারী অম্বিকা রায়ের আইনজীবী এদিন আদালতে বলেন, ‘‘বিধানসভার প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে সাধারণত বিরোধী দলের কোনও বিধায়ককেই মনোনীত করা হয় ৷ কিন্তু মুকুল রায় বিজেপির টিকিটে বিধানসভা ভোটে জিতলেও পরে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন ৷ গত 11 জুন তিনি তৃণমূলে যোগদান করেন এবং 24 জুন পিএসির চেয়ারম্যান হিসেবে বিধানসভায় নমিনেশন পেশ করেন ৷ এরপর গত 9 জুলাই বিধানসভার স্পিকার তাঁকে চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত করেন ৷ যা বিধানসভার নিয়মবিরুদ্ধ ৷’’
আরও পড়ুন : PAC : পিএসি চেয়ারম্যান সংক্রান্ত জনস্বার্থ মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন রাজ্যের
অন্যদিকে, প্রথম থেকেই এই বিষয়ে রাজ্যের বক্তব্য ছিল, পিএসি-র চেয়ারম্যান পদে যে কারও নিয়োগের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন বিধানসভার অধ্যক্ষ ৷ তাই এখানে আদালতের হস্তক্ষেপ কাম্য নয় ৷ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল আদালতে বলেছিলেন, এই ধরনের জনস্বার্থ মামলা আদালত গ্রহণ করবে না, এটাই কাম্য ৷ তাঁর যুক্তি ছিল, সংবিধানের 212 নম্বর ধারা অনুযায়ী বিধানসভায় চূড়ান্ত ক্ষমতার অধিকারী স্পিকার ৷ আদালত স্পিকারের এই সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করতে পারে না ৷ অন্যদিকে মামলাকারী অম্বিকা রায়ের বক্তব্য ছিল, মুকুল রায় বিজেপির টিকিটে বিধায়ক হয়েছেন ৷ কিন্তু বিধায়ক হওয়ার কিছুদিন পরই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেন ৷ অথচ, বিধানসভার পিএসি চেয়ারম্যান সবসময় বিরোধী দল থেকেই মনোনীত হন ৷ কিন্তু মুকুল রায় এখন আর বিজেপির সদস্য নন ৷ সেই কারণেই তাঁর নিয়োগ বাতিল করা উচিত ৷