কলকাতা, 30 এপ্রিল : পূর্ব পরিকল্পিত নয় এমন সাক্ষাৎ । অথচ তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ । দিল্লি যাওয়ার আগেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন এবারের সফরে তাঁর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আলাদা করে সাক্ষাতের কোনও পরিকল্পনা নেই । কিন্তু শনিবার বিজ্ঞান ভবনে 15 মিনিটের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (Mamata meets Modi on sidelines of judges meeting)। শুধু সাক্ষাৎ করলেন তাই নয়, প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে যেভাবে আঞ্চলিক ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন, তাতে তাঁর প্রশংসাও করলেন তিনি । তবে এর বাইরেও তৃণমূল সুপ্রিমো এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা জানা যায়নি ।
প্রসঙ্গত, শনিবারের আগে ভার্চুয়াল বৈঠকের মাধ্যমে করোনা পরিস্থিতির পর্যালোচনায় মুখোমুখি হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এবং দেশের প্রধানমন্ত্রী (Prime Minister Narendra Modi)। সেবার বক্তব্য রাখার সময় পশ্চিমবঙ্গ তেলের উপর ভ্যাট না কমানোয় রাজ্যের মানুষকে ভুগতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছিলেন তিনি । শুধু তাই নয়, প্রতিবেশী রাজ্যগুলোর সঙ্গে তেলের দামের তুলনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে খোঁচাও দিতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী । প্রধানমন্ত্রীর এহেন আচরণে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী । নবান্ন সভাঘর থেকে এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কড়া সমালোচনা করেন তিনি । সবচেয়ে বড় কথা সে সময় রাজ্যের বকেয়া নিয়েও সরব হয়েছিলেন তিনি ।
এখন প্রশ্ন এদিনের 15 মিনিটের সাক্ষাতে আদতে কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হল দুজনের মধ্যে । তা কী ছিল শুধু সৌজন্য সাক্ষাৎ ? নাকি রাজ্যের দাবি-দাওয়া বা বকেয়া নিয়েও দুজনের মধ্যে কথা হয়েছে । এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী তেলের দাম নিয়ে যেভাবে রাজ্যকে খোঁচা দিয়েছিলেন, তা নিয়েও কী প্রতিবাদ করেছেন মমতা ! এর উত্তর অবশ্য জানা যায়নি । তবে এদিন বিচারপতিদের সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Chief Minister Mamata Banerjee) ভূমিকা যথেষ্ট ইতিবাচক ছিল । নিজের বক্তব্য রাখার সময়ও বিচার ব্যবস্থা নিয়ে রাজ্যের পরিকাঠামোর কথা তিনি উল্লেখ করেন । একই সঙ্গে এদিন বক্তব্য রাখার সময় তিনি বিচারপতিদের অভাবের প্রসঙ্গ তোলেন । এই মুহূর্তে রাজ্যে হাইকোর্টের পাশাপাশি উত্তরবঙ্গে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ রয়েছে । পাশাপাশি একাধিক জেলা দায়রা আদালত রয়েছে । কিন্তু সেক্ষেত্রে পর্যাপ্ত বিচারক তথা বিচারপতির অভাব রয়েছে । এক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 13 জনের একটি তালিকা কেন্দ্রের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল তাঁর সরকার । তবে কেন্দ্রের তরফ থেকে একজনের বিষয়ই মাত্র অনুমোদন দেওয়া হয়েছে । এই পরিস্থিতিতে এর ফল ভুগতে হচ্ছে রাজ্যের মানুষকে (Mamata Meets Modi) ।
প্রসঙ্গত, তিনি আরও বলেন, "ইতিমধ্যে আমাদের দুটো হাইকোর্ট আছে । কলকাতা হাইকোর্ট এবং জলপাইগুড়ি হাইকোর্ট । নিউটাউনে ইতিমধ্যেই 10 একর জমি হাইকোর্টের নতুন বিল্ডিংয়ের জন্য দিতে পারবে রাজ্য সরকার । এর থেকে বেশি করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় । পুরনো বিল্ডিংটি বন্ধ করা হবে না, সেটিও কাজ করবে । কারণ, এটি হেরিটেজ বিল্ডিং । ইতিমধ্যে জলপাইগুড়িতে হাইকোর্ট কাজ করা শুরু করেছে । যার ফলে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের লোকজন যথেষ্ট সুবিধা পাবেন ।"
আরও পড়ুন : PM Modi On Justice System : আদালতের কাজে স্থানীয় ভাষাকে গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ মোদির