কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি : তৃতীয়বার রাজ্যের মসনদে বসে তৃণমূল সুপ্রিমো কথা দিয়েছিলেন, উদ্বাস্তু কলোনিতে থাকা বাসিন্দাদের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেবে সরকার । কথা রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে কলকাতা-সহ রাজ্যের উদ্বাস্তু কলোনির বাসিন্দাদের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেবেন তিনি (land lease to the refugees of Bengal)।
মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপে একদিকে যেমন ওই সব কলোনির বাসিন্দারা জমির মালিকানা সত্ত্ব পাবেন, অন্যদিকে প্রয়োজনে তা বিক্রিও করতে পারবেন ৷ অন্য কারও নামে পরবর্তীকালে সেই জমি লিখে দিতেও পারবেন । তবে তাঁরা সবথেকে বড় লাভবান হতে চলেছেন বাড়ি পাকা করার বিষয়ে । এতদিন জমির দলিল হাতে না থাকায় বৈধভাবে পাকা বাড়ি নির্মাণ করতে যেমন পারছিলেন না ৷ তেমনি কোনও ব্যাঙ্ক লোনও নিতে পারছিলেন না । এবার এই পদক্ষেপে পুরনো বাড়ি সংস্কার থেকে শুরু করে সমস্ত কিছুই করতে পারবেন (Mamata Banerjee will hand over land lease to the refugees of Bengal)।
রাজ্য সরকারের এই পাট্টা প্রদান অনুষ্ঠান আর একটা দিক থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ । কেন্দ্রীয় সরকার উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দিতে নাগরিকত্ব আইনের সংশোধনী এনেছে । তা নিয়ে শুরু থেকেই প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ বারবার ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের প্রত্যেকটি উদ্বাস্তু পরিবার ভারতবর্ষের নাগরিক । এবার তাঁদের পরিবারের নামে জমির পাট্টা দিয়ে কেন্দ্রকে সেই বার্তাই দিতে চলেছে রাজ্য ।
আরও পড়ুন : তৃণমূল কংগ্রেসে একনায়কতন্ত্র নয়, রয়েছে গণতন্ত্র : কুণাল ঘোষ
অন্যদিকে মমতার এই সিদ্ধান্তে বড় ধাক্কা হতে চলেছে বিজেপির জন্য । মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কের হাত ধরে উত্তর 24 পরগনা, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, মালদা, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও দুই দিনাজপুরে বিজেপির সংগঠন বাড়ছিল ৷ নাগরিক হিসেবে রাজ্য তাদের স্বীকৃতি দিলে গেরুয়াশিবিরের সেই ভোটবাক্সেই থাবা বসবে ৷
কারণ, মতুয়ারা সিংহভাগই পূর্ব বঙ্গের বাসিন্দা । দেশভাগের সময়ে ও পরবর্তীকালে তাদের একটা বড় অংশ এপার বাংলায় চলে এসে বিভিন্ন কলোনিতে আশ্রয় নেন ৷ কিন্তু সেখানকার জমির দলিল তাঁদের হাতে না থাকায় ভোটার তালিকায় নাম তোলা বা রেশন কার্ড, আধার কার্ড করতে গিয়েও তাঁদের সমস্যা হচ্ছিল । এই সব সমস্যার হাত থেকে রেহাই পেতেই বিগত ভোটে তাঁরা বিজেপির ওপর ভরসা করেছিল । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মাস্টার স্ট্রোকে তৃণমূলে ফের হারিয়ে যাওয়া মতুয়া ভোট ফিরে আসবে বলেই বিশেষজ্ঞদের আশা ৷