কলকাতা, 4 জুলাই: বারবার বিরোধী জোটের নিউক্লিয়াস নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে সম্মিলিত বিরোধী জোটের মুখ কে ? সাম্প্রতিক অতীতে বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে আনার পর সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে ক্রমেই প্রাসঙ্গিক হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদির বিকল্প মুখ হিসেবে তাঁর নাম নিয়ে চড়ছে জল্পনা। সোমবার এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কনক্লেভে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টভাষায় জানিয়ে দিলেন সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কোনও বড় পদের জন্য আগ্রহী নন তিনি, বরং তাঁর লড়াই দেশের জন্য, দেশবাসীর অধিকার রক্ষায় (Mamata Banerjee says she has no greed for PM post)।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বৃহত্তর স্বার্থে আত্মত্যাগের প্রয়োজন রয়েছে। তাই প্রধামন্ত্রীর পদের মোহ নেই তাঁর। কাউকে তো বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধতে হবে।" মমতার কথায়, তার লক্ষ্য শুধু দেশবাসীর উন্নতি। তার লক্ষ্য যুব প্রজন্মের কর্মসংস্থান। তিনি চান মহিলাদের ক্ষমতায়ন, কৃষকের মুখের হাসি। আন্তর্জাতিক মহলের কাছে দেশের ভাবমূর্তি ভালো হোক। সকলে মিলে একটা ইউনাইটেড ইন্ডিয়া তৈরি হোক। এ দিন তিনি স্পষ্ট করে দেন, প্রধানমন্ত্রীত্ব কেন, কোন বৃহত্তর পদের প্রতি আগ্রহ নেই তাঁর। তাঁর কাছে সবসময় গুরুত্বপূর্ণ হল দেশ।
সোমবার মমতা প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রসঙ্গে নিজের মনের কথা জানিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি তোপ দেগেছেন কংগ্রেসের বিরুদ্ধেও। কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে বিজেপিকে হঠাতে গেলে যে কংগ্রেসকে প্রয়োজন সেটা কে না জানে। কিন্তু তারপরেও তৃণমূলের সঙ্গে সনিয়া-রাহুলের সম্পর্ক এখন আদায়-কাঁচকলায়। কেন এই বিরোধ, সে প্রসঙ্গে এদিন প্রশ্ন করা হয়েছিল বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। সেখানে তিনি সাফ বলেন, "এত কংগ্রেস-কংগ্রেস কেন করছেন ? অন্য দল নিয়ে কথা বলব না। ওরা সিপিআইএম, বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। ওদের আসন ছাড়ব না। কেন কংগ্রেসকে পশ্চিমবঙ্গে আসন দেব ? ওরা রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। গত 10 বছর ধরে বাম, কংগ্রেস তৃণমূলেরই বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে।
আরও পড়ুন : মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকে পড়া হাফিজুলকে 11 জুলাই পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে
বিরোধীদের মধ্যে বিভাজন নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে। অরবিন্দ কেজরিওয়াল, রাহুল গান্ধি, কেসিআর সবাই যেখানে নিজেকে দেশের নেতা হিসেবে দেখতে চাই সেখানে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া কীভাবে সম্ভব ? এদিন তার জবাবে মমতা বলেন, "সাম্প্রতিক পরিস্থিতির নিরিখে এটা সত্যি যে বিরোধীদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। কিন্তু এটাও ঠিক, বিজেপির মত প্রবল শক্তিকে পরাস্ত করতে গেলে ঐক্যবদ্ধ লড়াই জরুরি। আর সেই লড়াই এখন থেকেই শুরু হওয়া দরকার।" মমতা এও জানান যে, অন্য রাজনৈতিক দলের অবস্থান প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করতে পারবেন না। তবে তিনি ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার লক্ষ্যে মোদি সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন।