কলকাতা, 14 জুলাই : বিধান পরিষদ-সহ একাধিক জরুরি বিষয় নিয়ে আলোচনায় আচমকাই বুধবার রাজভবনে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamamta Banerjee) । আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান এবং রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের মধ্যে সংঘাত নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে । পরিস্থিতি এতটাই চরমে পৌঁছে যায় যে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে (Jagdeep Dhankhar) জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারিতে যুক্ত বলে অভিযোগ করেন । এসবের মাঝেই বুধবার আচমকা মুখ্যমন্ত্রীর রাজভবনে পৌঁছনোয় রাজনৈতিক মহলে জল্পনা ছড়ায় ।
এদিন নবান্ন থেকে বেরিয়ে বিকেল তিনটে পঞ্চাশ নাগাদ রাজভবনে পৌঁছন মমতা । এরপর দুজনের মধ্যে প্রায় দু'ঘণ্টা বৈঠক হয় । সন্ধে ছ’টার কাছাকাছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবন থেকে বেরিয়ে কালীঘাটের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন । যদিও এদিন এই বৈঠক নিয়ে রাজ্যপাল এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কেউই মুখ খোলেননি । তবে মনে করা হচ্ছে, সদ্য রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিধান পরিষদ বিল (Legislative Council Bill) নিয়ে আলোচনার জন্যই এদিন রাজভবনে গিয়েছিলেন মমতা ।
আরও পড়ুন : দিল্লিতে তৃণমূলের একুশে জুলাই, রাজপথে শোনা যাবে মমতার ভাষণ
নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এবার বিধানসভায় এই প্রস্তাব নিয়ে আসেন মুখ্যমন্ত্রী । যা ইতিমধ্যেই রাজ্য বিধানসভায় সমর্থনে পাশ হয়েছে । এবার রাজ্যপাল এই বিলে অনুমতি দিলেই তা দিল্লিতে পাঠানো হবে । মনে করা হচ্ছে, এই বিলের প্রয়োজনীয়তা বোঝানোর জন্যই এদিন রাজভবনে যান মমতা ।
প্রসঙ্গত, 2011 সালে রাজ্য প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পর বিধানসভায় এই রিপোর্ট এনেছিল তৃণমূল । করা হয়েছিল অ্যাড-হক কমিটিও । প্রায় 10 বছর পর ওই রিপোর্ট নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা হয় । ভোটাভুটিতে বিধানসভায় সেই সময় উপস্থিত 265 জন বিধায়কের মধ্যে বিধান পরিষদ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছিল 196টি । বিপক্ষে পড়েছিল 69টি ভোট ।
আরও পড়ুন : প্রশান্ত কিশোরকে কংগ্রেসে স্বাগত জানিয়েও টুইট ডিলিট রাহুল ঘনিষ্ঠ নেত্রীর
1952 সালের 5 জুন 51 জন সদস্যকে নিয়ে বাংলায় বিধান পরিষদ গঠিত হয়েছিল । তবে 1969 সালের 21 মার্চ বিধান পরিষদকে অবলুপ্ত করে দেওয়া হয় । তার পর আবার এই পরিষদ গঠনে সক্রিয় হল রাজ্য সরকার ৷
যদিও এখনই এই বিল আইনে পরিণত হচ্ছে না । এর পর প্রস্তাবটি লোকসভা যাবে । সেখানে পাশ হলে যাবে রাজ্যসভায় । তার পর রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে বিধান পরিষদ প্রস্তাব আইনে পরিণত হবে । তবে লোকসভায় বিজেপি সাংসদদের সংখ্যাধিক্য রয়েছে । ফলে এই বিল আদৌও পাশ হবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে ।
আরও পড়ুন : উপনির্বাচন নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ শুভেন্দুর, পালটা শাসকদলের