কলকাতা, 29 অগস্ট: বিগত কয়েকদিন কলকাতার রাস্তায় বিরোধীদের কণ্ঠে বারবারই এই স্লোগান উঠেছে - 'চোর ধরো জেল ভরো'। কতিপয় তৃণমূল নেতা আবার মেজাজ ধরে রাখতে না পেরে এই নিয়ে অনেক রকম মন্তব্যও করেছেন । এই নিয়ে অবশ্য তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব রা কাড়েনি । সোমবার মেয়ো রোডে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস (TMCP Foundation day) পালনের সভামঞ্চ থেকে এই নিয়ে সরব হলেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Targets BJP)। কেষ্ট-ববি-অভিষেক চোর, মমতাও চোর আর আপনি সাধু ? বিজেপির বিরুদ্ধে এই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন মমতা (Mamata Banerjee)।
এ দিন এই সমাবেশে আগাগোড়াই আক্রমণাত্মক ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো । সেখান থেকেই তিনি বলেন, পার্থ-কেষ্ট চোর কি না, তা আইন বলবে । কিন্তু এ সব কী চলছে ? ববি চোর, অভিষেক চোর, মমতা চোর ? সব কিছুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে টানা ! আর বিজেপির সবাই সাধু ?
এ দিন তাঁর নামে মামলা নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো । তিনি বলেন, "আমাকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে আমার কত সম্পত্তি ! এখানে কেন, আমার সম্পত্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক কোর্টে মামলা করা হোক ! আমরা ছয় ভাই-বোন ৷ মা যতদিন বেঁচে ছিলেন আমার কাছে থাকতেন । তবে প্রজাস্বত্বে পাওয়া জমিতে থাকি আমি এখনও । 70 বছর ধরে বাবা থাকতেন । ঠিকা শর্তে রানি রাসমনির জমিতে থাকি আমরা ৷ বাকি ভাইবোনেরা সব নিজেদের আলাদা আলাদা জায়গায় । সংসার আলাদা, আলাদা বাড়ি । বাকিদের সঙ্গে কেবল উৎসবের সম্পর্ক রয়েছে ।"
আরও পড়ুন: ভুল শোধরানোর সুযোগ পাইনি, দুর্নীতি প্রসঙ্গে মমতা
এ দিন নিজের আয় নিয়েও মুখ খুলেছেন মমতা । তিনি বলেন, "12 বছর ধরে এক লাখ টাকা করে পেনশন পাই আমি । কিন্তু আমি এক টাকাও নিই না । মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রত্যেক মাসে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা পাওয়ার কথা । সেই টাকাও নিই না । বাইরে গেলে নিজের চা-টাও নিজের পয়সায় কিনে খাই । সরকারি গাড়িও আলাদা করে চড়ি না । 1991 সালের পরে কোনওদিন এক্সিকিউটিভ ক্লাসে ট্রাভেল করিনি । তারপরেও আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ! আমি কেন বই বিক্রি করব, সেটা নিয়েও ওদের জ্বালা ! সার্ভে করে দেখুক, বছরের পর বছর বইমেলায় বেস্ট সেলার কার বই !"
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন আরও বলেন, "প্রতিহিংসার রাজনীতি করি না, তাই বড় বড় কথা । রাজনীতিতে এসেছিলাম সমাজসেবা করার জন্য । নিজের আখের গোছানোর জন্য নয় । এখন সেই আমার গায়েই কালি লাগানো হচ্ছে । পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee), অনুব্রত মণ্ডল এমনকী ববির ব্যাপার হলেও আমাকে টেনে আনা হচ্ছে । ভাত কেন গরম হল না তা নিয়েও মমতাকে টানতে হবে, আকাশে কেন মেঘ নেই তার জন্যও মমতাকে প্রয়োজন ।"
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "এতই যখন ভয় আমাকে জেলে ভরে দিয়ে দেখুক কী হয় !" এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, বিরোধীদের টানা দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণ কোনওভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বাংলার মুখ্যমন্ত্রী । আর তাই এই ছাত্র সমাবেশ থেকেই পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটলেন তিনি ।