কলকাতা, 1 অগস্ট : ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের (Jharkhand Three Congress MLA) থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে, তা কি তাঁরা বিজেপির (BJP) থেকে পেয়েছিলেন ? সিআইডি (CID) তদন্তে এখনও পর্যন্ত যা তথ্য উঠে এসেছে, তাতে এই প্রশ্নের ইতিবাচক উত্তরই মিলছে ৷ যদিও তদন্ত চলছে, এখনই এই নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না বলে বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা ৷ তবে সিআইডির একটি সূত্র থেকে এমনই খবর মিলেছে ৷
সিআইডি সূত্রে খবর, ওই তিন বিধায়ক ঝাড়খণ্ড থেকে গাড়িতে কলকাতায় এসেছিলেন ৷ কলকাতায় আদিবাসী উৎসবে যোগদান করতে আসছেন, এই কথা বলে তাঁরা রাঁচি থেকে এসেছিলেন ৷ কিন্তু কলকাতায় এসে তাঁরা সরাসরি চলে যান দমদম বিমানবন্দরে ৷ তার পর বিমানে চলে যান গুয়াহাটি ৷ সেখান থেকেই আবার বিমানে কলকাতায় ফেরেন ৷
আর এখানেই এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপির যোগসূত্র থাকতে পারে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা ৷ কারণ, জুন মাসে যখন মহারাষ্ট্রে রাজনৈতিক সংকট (Maharashtra Political Crisis) তৈরি হয়েছিল, তখন বিজেপি শাসিত অসমের হোটেলেই ঘাঁটি গেড়েছিলেন বিদ্রোহী শিবসেনা বিধায়করা ৷ সেখান থেকেই নিয়মিত তাঁরা মহারাষ্ট্রের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের (Maharashtra Former CM Uddhav Thackeray) বিরুদ্ধে তোপ দাগছিলেন ৷ তখনই বিরোধীরা এই ঘটনার সঙ্গে বিজেপি যোগের অভিযোগ তোলে ৷
সিআইডি সূত্রে খবর, গ্রেফতার হওয়া কংগ্রেস বিধায়কদের জেরা করছেন গোয়েন্দারা ৷ তাঁদের থেকে জানার চেষ্টা করা হচ্ছে যে অসমে ঠিক কার সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়েছিলেন তাঁরা !
এদিকে এই প্রশ্নের উত্তর না মিললেও সিআইডি জানতে পেরেছে যে অসম থেকে ফিরে ওই বিধায়করা চলে যান কলকাতার সদর স্ট্রিটের একটি পানশালায় ৷ সিআইডি সূত্রে খবর, ওই পানশালা লাগোয়া হোটেলে ছিলেন ওই তিন বিধায়ক ৷ তাঁদের সঙ্গে প্রতীক কুমার নামে একজন ছিলেন ৷ যাঁর পরিচয় যুব কংগ্রেস নেতা ৷ তিনিই একটি স্কুটিতে অন্য একজনের লালবাজারের উল্টোদিকের একটি রাস্তায় আসেন ৷ সেখানেই টাকা হস্তান্তর হয় ৷ তার পর তাঁরা আবার ফিরে যান সদর স্ট্রিটের হোটেলে ৷
গোয়েন্দাদের একটি সূত্র জানিয়েছে, যে ব্যক্তির সঙ্গে প্রতীক স্কুটিতে এসেছিলেন, তিনি হোটেল ম্যানেজারের ঘনিষ্ঠ ৷ আর যে ব্যবসায়ী টাকা দিয়েছেন, তিনি এখন পলাতক ৷ তিনি হাওয়ালায় টাকা লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা ৷
এদিকে সিআইডি সূত্রে খবর, পানশালায় টাকা নিয়ে ফিরে বিধায়করা তা গুনে নেন ৷ তার পর সেখানেই মদ্যপান চলে ৷ এর পর তাঁরা মন্দারমনি বা দীঘায় যাবেন বলে ঠিক করেন ৷ এদিকে গুয়াহাটিতে যাওয়ার সময় চালককে গাড়ি-সহ ঝাড়খণ্ডে ফিরে যেতে বলেছিলেন ওই বিধায়করা ৷ তার পর গুয়াহাটি থেকে ফেরার আগেই তাঁরা চালককে গাড়ি নিয়ে চলে আসতে বলেন ৷
তাই মন্দারমনি বা দীঘার যাওয়ার বিধায়করা নিজস্ব গাড়িতেই যাচ্ছিলেন ৷ কিন্তু মাঝপথে হাওড়ার রানিহাটিতে পুলিশি তল্লাশিতে ধরা পড়েন তাঁরা ৷ উদ্ধার হয় নগদ 49 লক্ষ টাকা ৷ আপাতত ওই তিন কংগ্রেস বিধায়ক সিআইডি হেফাজতে রয়েছেন ৷ স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা নিয়ে মানুষের কৌতুহল বাড়ছে ৷ এর পর এই ঘটনা আর কী তথ্য উঠে আসে, সেই দিকেই নজর রয়েছে সকলের ৷