কলকাতা, 30 মে : আমার কোনও প্রাক্তন স্ত্রী নেই, প্রাক্তন বান্ধবী নেই, প্রাক্তন দলও নেই ৷ আমি লয়ালিস্ট ৷ প্রাক্তন বলতে আমি বুঝি একজনকেই ৷ তিনি প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় ৷ তিনি প্রাক্তন নামে একটি ফিল্ম করেছেন ৷ নারদ মামলায় আর এক অভিযুক্ত তথা প্রাক্তন সহকর্মী শোভন চট্টোপাধ্যায় সম্পর্কে প্রশ্ন করায় এই ভাষাতেই জবাব দিলেন তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র ৷
এ দিন হাসপাতাল থেকে বেরনোর পর থেকেই দারুণ মেজাজে দেখা যায় কামারহাটির বিধায়ককে ৷ তিনি লাল ধুতি-পঞ্জাবি পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গানে-কথায় মাতিয়ে দেন সবাইকে ৷ জানান, এখন আগের থেকে ভালো আছেন ৷ হাসপাতালের চিকিত্সকদের ধন্যবাদ জানান তিনি ৷ মদন বলেন, "আমি মরণাপন্ন হয়ে পড়েছিলাম ৷ ষাটের তলায় নেমে গিয়েছিল অক্সিজেন স্যাচুরেশন, নাকে লাম্প ছিল, ফুসফুসে প্যাচ রয়েছে ৷ মুখ থেকে রক্ত বেরোচ্ছিল ৷ কোভিড পরবর্তী প্যালপিটিশনে হার্ট স্ট্রোক হয়ে যায় ৷ আমাকে সুস্থ করে তোলার জন্য হাসপাতালের ডাক্তার ও নার্সদের কৃতজ্ঞতা জানাই ৷"
মদন এই কথা বলার পরই এক সাংবাদিক তাঁকে বলেন, "আপনারই প্রাক্তন সহকর্মী শোভন চট্টোপাধ্যায় তো বলেছেন, এই হাসপাতালে কোনও চিকিত্সা হয় না ৷" সাংবাদিকদের মুখে শোনা যায় বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামও ৷ এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে রসিকতার সুরে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "প্রাক্তন বলতে আমি বুঝি একজনকেই ৷" এরপরই 'চিরদিনই তুমি যে আমার' গানটি গেয়ে ওঠেন ৷ বুঝিয়ে দেন তিনি অভিনেতা প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায়ের কথা বলতে চেয়েছেন ৷ তাঁর ফিল্ম প্রাক্তনের কথা বলতে চেয়েছেন ৷ তবে এখানেই না-থেমে মদন নিজের ঢঙেই নাম না করে খোঁচা দেন শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ৷ মদনের কথায়, "আমার প্রাক্তন পিতা মাতা প্রয়াত ৷ আমার আর কেউ প্রাক্তন নেই ৷ প্রাক্তন স্ত্রী নেই, প্রাক্তন বান্ধবী নেই, প্রাক্তন দল নেই, প্রাক্তন ঝান্ডা নেই ৷ আমি মদন মিত্র ৷ আমি লয়ালিস্ট ৷ যখন চলে যাব, তখন কেউ বলবে না, ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর ৷ বলবে, ইয়ে গদ্দার নেহি, ইমানদার হ্যায় ৷"
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে লাল ধুতি-পঞ্জাবিতে গানে-রসবোধে রঙিন মদন
গানে গানে কথায় কথায় নানা প্রসঙ্গ এলেও এ দিন বারবার মদন মিত্র জানিয়ে দেন যে, তিনি নারদ মামলা নিয়ে কোনও কথা বলবেন না ৷ বলেন, "আমি আমার জায়গায় ঠিক আছি ৷ জ্ঞানত কোনও পাপ করিনি ৷ অজ্ঞানত যদি করে থাকি, ক্ষমা চাইছি ৷ আদালত যা সাজা দেবে মাথা পেতে নেব ৷"
জামিনে মুক্তি পেয়ে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে এসে তিনি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মেনে মানুষের পাশে গিয়ে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন কামারহাটির বিধায়ক ৷ করোনা আবহে সেফ হোম তৈরি, অক্সিজেন সরবরাহ, চাল বিলি - এ গুলিই হবে তাঁর প্রধান কাজ ৷ তবে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে আজকের কামারহাটির কর্মসূচি বাতিল করতে হয় ৷