কলকাতা, 24 ফেব্রুয়ারি: স্বাস্থ্যসাথী নিয়ে আরও কঠোর অবস্থান নিল রাজ্য সরকার। এবার থেকে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীকে ফেরালে যে কোনও হাসপাতালকেই কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে। স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রায় প্রত্যেক প্রশাসনিক বৈঠকেই এ নিয়ে মুখ খুলেছেন ৷ তাঁর সাফ কথা, স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় মানুষকে পরিষেবা দিতে হবে হাসপাতালগুলিকে ৷ কিন্তু তারপরও ঘটছে একের পর এক রোগী ফেরানোর ঘটনা ৷ এরই প্রেক্ষিতে রাজ্য়ে সিদ্ধান্ত হল, এবার থেকে 10টির বেশি শয্যাবিশিষ্ট সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালকেই স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড গ্রহণ করতে হবে। এই নির্দেশ অমান্য করলে আইনি পদক্ষেপেরও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ক্লিনিক্য়াল এসট্য়াবলিশমেন্ট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷
বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়ে দিয়েছে, যদি কোনও বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে 10টির বেশি শয্যা থাকে, সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যসাথী গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক হবে। দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বিষয়টি নিয়ে টানাপোড়েন চলার পরই এই সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর।
স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসা রোগীদের ফিরিয়ে দেওয়া নিয়ে ইদানিং তপ্ত রাজ্য রাজনীতি। কার্ড থাকা সত্ত্বেও রোগীদের বিনা চিকিৎসায় ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এমন ঘটনা ঘটছে ভূরি ভূরি। কারণ, বেশিরভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বেঁধে দেওয়া টাকায় চিকিৎসা করিয়ে লোকসানের বোঝা বাড়াতে চাইছে না। বহু ক্ষেত্রে বেসরকারি হাসপাতালগুলি স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতাভুক্ত নয়, এমন দাবিও করছে।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যসাথীর রোগীকে ফেরালে বাতিল হতে পারে হাসপাতালের লাইসেন্স, নোটিস স্বাস্থ্য দফতরের
এই অবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালগুলির সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন স্বাস্থ্য ভবনের কর্তারা। বৈঠক করেন খোদ মুখ্যসচিবও। খরচ পরিকাঠামোয় কিছু পরিবর্তনও করা হয় হাসপাতালগুলির স্বার্থের কথা মাথায় রেখে। তারপরও রোগী প্রত্যাখ্যানের ঘটনা কমেনি।
এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্যের শাসকদলকে। আর সেই কারণেই স্বাস্থ্য ভবনের তরফে কড়া পদক্ষেপ করার প্রয়োজন ছিল। সেইমতোই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জারি হল নয়া বিজ্ঞপ্তি ৷