কলকাতা, 29 সেপ্টেম্বর: তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Abhishek Banerjee) শ্যালিকা মানেকা গম্ভীরের (Menaka Gambhir) রুজু করা আদালত অবমাননার মামলায় (Contempt of Court) রায়দান স্থগিত রাখল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ৷ সংশ্লিষ্ট মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (Enforcement Directorate) বা ইডি (ED)-এর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলেছিলেন মানেকা ৷ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্যের (Justice Moushumi Bhattacharya) এজলাসে এই মামলার শুনানি শেষ হয় ৷ রায় ঘোষণা করা হবে শুক্রবার ৷
রাজ্যের কয়লাপাচার কাণ্ডে (West Bengal Coal Smuggling Scam) ইতিমধ্যেই নাম জড়িয়েছে অভিষেকের ৷ তার জেরে অভিষেকের স্ত্রী রুচিরা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কেও জেরা করেছে ইডি ৷ একই কারণে রুচিরার বোন তথা অভিষেকের শ্যালিকাও রয়েছেন গোয়েন্দাদের নজরে ৷ ইতিমধ্যেই কলকাতা থেকে ব্যাঙ্কক যাওয়ার পথে দমদম বিমানবন্দরে মানেকাকে আটকে দেয় অভিবাসন দফতর ৷ আর তার জেরেই ইডি-এর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেন মেনকা ৷
আরও পড়ুন: ইডি-এর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা মেনকা গম্ভীরের
মেনকা তাঁর এই মামলায় কলকাতা হাইকোর্টেরই একটি রায়কে হাতিয়ার করেছেন ৷ গত 30 অগস্টের সেই রায়ে আদালত জানিয়েছিল, কয়লাপাচারের তদন্তে ইডি চাইলে মেনকাকে জেরা করতে পারে ৷ সেক্ষেত্রের কলকাতাতেই তাঁকে জেরা করতে হবে ৷ কিন্তু, মানেকার বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না ৷ মানেকার আইনজীবীর বক্তব্য হল, আদালতের এই নির্দেশ লঙ্ঘন করেছে ইডি ৷ বস্তুত, মানেকাকে ব্যাঙ্কক যেতে না দেওয়াকেই আদালতের নির্দেশের অবমাননা বলে ব্যাখ্যা করা হয়েছে ৷
বৃহস্পতিবার মানেকার হয়ে আদালতে সওয়াল করেন তাঁর আইনজীবী জিষ্ণু সাহা ৷ তিনি বলেন, মানেকাকে উত্যক্ত করার জন্যই দমদম বিমানবন্দরে আটকানো হয়েছিল ৷ তাঁর আরও প্রশ্ন, মানেকা তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করেছেন ৷ তারপরও কেন তাঁকে ব্যাঙ্কক যেতে দেওয়া হল না ? এর প্রেক্ষিতে বিচারপতি জানতে চান, কীসের ভিত্তিতে মানেকা মনে করছেন, ইডি আদালত অবমাননা করেছে ? জবাবে মানেকার আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলের কাছে আদালতেরই দেওয়া আইনি রক্ষাকবচ রয়েছে ৷ সেই অনুসারে, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করা যাবে না ৷ তাহলে কেন তাঁকে ভারতের বাইরে যেতে দেওয়া হল না ?
আরও পড়ুন: কয়লাপাচার কাণ্ডে মেনকাকে সাড়ে 7 ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ ইডি-এর
এরপর ইডি-এর আইনজীবী এম ভি রাজু বলেন, গত 25 মার্চ মানেকার বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার জারি করা হয় ৷ এরপর 30 অগস্ট আদালত মানেকাকে রক্ষাকবচ দেয় ৷ তারপর থেকে ইডি মানেকার বিরুদ্ধে কোনও কঠোর পদক্ষেপ করেনি ৷ তাছাড়া, মানেকাকে বিমানবন্দরেও ইডি আটকায়নি ৷ আটেকেছে অভিবাসন দফতর ৷ কারণ, তাঁর নামে আগে থেকেই লুক আউট সার্কুলার ছিল ৷ সুপ্রিম কোর্টের 2007 সালের একটি রায় অনুসারে, কড়া পদক্ষেপের অর্থ হল, কাউকে গ্রেফতার করা ৷ মানেকাকে গ্রেফতারও করা হয়নি ৷
এর পালটা মেনকার আইনজীবী বলেন, কয়লাপাচারে তাঁর মক্কেল অভিযুক্ত নন ৷ তা সত্ত্বেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট সার্কুলার জারি জারি করা হল ? উল্লেখ্য, এর প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই অভিবাসন দফতর এবং ইডি-এর কাছে হলফনামা চেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷ জানতে চাওয়া হয়েছে, কেন তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা রুল জারি করা হবে না ৷ এই প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার সবপক্ষের কথা শোনার পর রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য ৷ জানান, আদালত শুক্রবার এই মামলার রায় ঘোষণা করবে ৷