ETV Bharat / city

রাজ্যপাল মায়াকান্না কাঁদছেন : শিক্ষামন্ত্রী - রাজ্যপালের সমালোচনায় শিক্ষামন্ত্রী

রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত ক্রমশ বাড়ছে ৷ রাজ্যপালের সাংবাদিক বৈঠকের পর তাঁর অভিযোগের পালটা জবাব দিলেন শিক্ষামন্ত্রী৷ রাজ্যপাল মায়াকান্না কাঁদছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

education minister
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়
author img

By

Published : Jul 16, 2020, 11:24 PM IST

কলকাতা, 16 জুলাই : আচার্য-উপাচার্য বৈঠক ইশুতে সরগরম রাজ্যের শিক্ষা মহল। আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের ডাকা ভার্চুয়াল বৈঠকে গতকাল অংশগ্রহণ করেননি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। তা নিয়ে গতকাল থেকেই টুইটারে সুর চড়িয়েছেন রাজ্যপাল। আজ সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে ফের একবার সরব হলেন ৷ বৈঠকে অংশগ্রহণ না করা উপাচার্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আচার্য। পাশাপাশি, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকেও আক্রমণ করেছেন তিনি। উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন। আজ দুপুরেই রাজ্যপালের মন্তব্যের পালটা প্রতিক্রিয়া দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ওঁকে অপমান করার কোনও ইচ্ছা নেই ৷ রাজ্যপাল মায়াকান্না কাঁদছেন। পাশাপাশি, উপাচার্যরা যে বিধি মেনেই বৈঠকে থাকেননি তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

রাজ্যপালের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "যে ভাষায় উপাচার্যদের সঙ্গে উনি কথা বলেছেন কোনও আমলে এইভাবে কোনও রাজ্যপাল কথা বলেননি। সচিবালয় থেকে চিঠি পাঠিয়ে উপাচার্যদের উদ্দেশে যে অপমানসূচক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তাতে উনি নিশ্চয়ই লজ্জা পাচ্ছেন না, কিন্তু আমি লজ্জিত। আমি আবার বলছি, উপাচার্যরা স্বাধীন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বাধীকার আছে। তাঁদের বিধি আছে, তাঁদের নিয়ম আছে, সর্বোপরি রাজ্যের আইন ও নীতি আছে। সেখানে আমরা হস্তক্ষেপ করি না। এখানেও আমরা অ্যাডভাইজ়রি পাঠিয়েছিলাম, নাহলে হস্তক্ষেপ করা হত। বাধ্যতামূলকভাবে আমরা কিছু বলতে চাই না। সরাসরি শিক্ষার ক্ষেত্রে কষাঘাত। আমরা সেই কষাঘাতের বিরুদ্ধে। বাংলার ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন রক্ষায়, তাদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমরাও পরামর্শ দিয়েছি। উনি তাতে রাজি হয়েছিলেন। উনি টুইটও করেছিলেন। আমরা তার ফসল দেখতে চাই। তাঁর কথা এবং কাজে এক হতে পারছেন কি না সেটা দেখতে চাই। আবার বলছি, কোনও বিরোধ নেই।"

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়
বৈঠকে অনুপস্থিত উপাচার্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আচার্য। সেই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "শো-কজ করে দেবেন? শিক্ষা দপ্তরকে জানাবেন না? এটা কী হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। আপনি আমার রেকমেন্ডেশন দুইবার ফেরত দিতে পারেন, তিনবার ফেরত দিতে পারেন, নাও মানতে পারেন। কিন্তু, এভাবে সবাইকে মিলে একেবারে দিয়ে দিলেন? আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি।" উপাচার্যরা যে বিধি মেনেই আচার্যের ডাকা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেননি তা জানিয়ে দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

আজ রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আচার্য। তিনি বলেন, "রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থার মান নামছে । গত দুই বছর ধরে বাংলায় এই পরিস্থিতি চলছে । রাজ্য শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্ব দিচ্ছে না।" এই অভিযোগের ভিত্তিতে আজ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "2017 সালে বর্তমান রাজ্যপাল কি ছিলেন ? উনি দু'বছরটা কেন ভাবলেন? দু'বছরটা ওঁর মাথায় ঢুকল কেন আমি সেটা বুঝতে পারছি না।" শিক্ষামন্ত্রী তুলে ধরেন উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় অগ্রগতির খতিয়ান। সেই খতিয়ান সম্বলিত বই রাজ্যপালকে পাঠাবেন বলেও জানান।

রাজ্যপাল আজ বলেছেন, "রাজ্যের শিক্ষায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। শিক্ষাব্যবস্থা রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত। কলেজের ভরতির ক্ষেত্রে চলে আর্থিক দুর্নীতি। শিক্ষায় আর্থিক শোষণ অপরাধের সমান।" রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আর্থিক শোষণের কথা বলছেন। কলেজে ভরতির ক্ষেত্রে নাকি আর্থিক শোষণ হয়। দেখি না কোথায় হচ্ছে, দেখান। আমরা তো আমাদের মাধ্যমিক শিক্ষায় 240 টাকা বছরে নিই। কেন্দ্রীয় সরকারের যে সমস্ত বোর্ডগুলি আছে সেগুলি দেখুন। একটা কথাও তো উনি বলছেন না। রাজ্যের হয়ে যা যা চাওয়ার সেগুলি নিয়ে বলুন। বাংলার হয়ে বলুন। শুধু ছাত্র কেন, বাংলার মানুষের উদ্বিগ্নতার কথা বলুন।"




কলকাতা, 16 জুলাই : আচার্য-উপাচার্য বৈঠক ইশুতে সরগরম রাজ্যের শিক্ষা মহল। আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের ডাকা ভার্চুয়াল বৈঠকে গতকাল অংশগ্রহণ করেননি রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। তা নিয়ে গতকাল থেকেই টুইটারে সুর চড়িয়েছেন রাজ্যপাল। আজ সকালে সাংবাদিক বৈঠক করে ফের একবার সরব হলেন ৷ বৈঠকে অংশগ্রহণ না করা উপাচার্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আচার্য। পাশাপাশি, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থাকেও আক্রমণ করেছেন তিনি। উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন তোলেন। আজ দুপুরেই রাজ্যপালের মন্তব্যের পালটা প্রতিক্রিয়া দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ওঁকে অপমান করার কোনও ইচ্ছা নেই ৷ রাজ্যপাল মায়াকান্না কাঁদছেন। পাশাপাশি, উপাচার্যরা যে বিধি মেনেই বৈঠকে থাকেননি তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।

রাজ্যপালের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "যে ভাষায় উপাচার্যদের সঙ্গে উনি কথা বলেছেন কোনও আমলে এইভাবে কোনও রাজ্যপাল কথা বলেননি। সচিবালয় থেকে চিঠি পাঠিয়ে উপাচার্যদের উদ্দেশে যে অপমানসূচক শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে তাতে উনি নিশ্চয়ই লজ্জা পাচ্ছেন না, কিন্তু আমি লজ্জিত। আমি আবার বলছি, উপাচার্যরা স্বাধীন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বাধীকার আছে। তাঁদের বিধি আছে, তাঁদের নিয়ম আছে, সর্বোপরি রাজ্যের আইন ও নীতি আছে। সেখানে আমরা হস্তক্ষেপ করি না। এখানেও আমরা অ্যাডভাইজ়রি পাঠিয়েছিলাম, নাহলে হস্তক্ষেপ করা হত। বাধ্যতামূলকভাবে আমরা কিছু বলতে চাই না। সরাসরি শিক্ষার ক্ষেত্রে কষাঘাত। আমরা সেই কষাঘাতের বিরুদ্ধে। বাংলার ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন রক্ষায়, তাদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় আমরাও পরামর্শ দিয়েছি। উনি তাতে রাজি হয়েছিলেন। উনি টুইটও করেছিলেন। আমরা তার ফসল দেখতে চাই। তাঁর কথা এবং কাজে এক হতে পারছেন কি না সেটা দেখতে চাই। আবার বলছি, কোনও বিরোধ নেই।"

শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়
বৈঠকে অনুপস্থিত উপাচার্যদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আচার্য। সেই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "শো-কজ করে দেবেন? শিক্ষা দপ্তরকে জানাবেন না? এটা কী হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। আপনি আমার রেকমেন্ডেশন দুইবার ফেরত দিতে পারেন, তিনবার ফেরত দিতে পারেন, নাও মানতে পারেন। কিন্তু, এভাবে সবাইকে মিলে একেবারে দিয়ে দিলেন? আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি।" উপাচার্যরা যে বিধি মেনেই আচার্যের ডাকা বৈঠকে অংশগ্রহণ করেননি তা জানিয়ে দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

আজ রাজ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন আচার্য। তিনি বলেন, "রাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থার মান নামছে । গত দুই বছর ধরে বাংলায় এই পরিস্থিতি চলছে । রাজ্য শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্ব দিচ্ছে না।" এই অভিযোগের ভিত্তিতে আজ শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "2017 সালে বর্তমান রাজ্যপাল কি ছিলেন ? উনি দু'বছরটা কেন ভাবলেন? দু'বছরটা ওঁর মাথায় ঢুকল কেন আমি সেটা বুঝতে পারছি না।" শিক্ষামন্ত্রী তুলে ধরেন উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় অগ্রগতির খতিয়ান। সেই খতিয়ান সম্বলিত বই রাজ্যপালকে পাঠাবেন বলেও জানান।

রাজ্যপাল আজ বলেছেন, "রাজ্যের শিক্ষায় উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। শিক্ষাব্যবস্থা রাজনৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত। কলেজের ভরতির ক্ষেত্রে চলে আর্থিক দুর্নীতি। শিক্ষায় আর্থিক শোষণ অপরাধের সমান।" রাজ্যপালের এই মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আর্থিক শোষণের কথা বলছেন। কলেজে ভরতির ক্ষেত্রে নাকি আর্থিক শোষণ হয়। দেখি না কোথায় হচ্ছে, দেখান। আমরা তো আমাদের মাধ্যমিক শিক্ষায় 240 টাকা বছরে নিই। কেন্দ্রীয় সরকারের যে সমস্ত বোর্ডগুলি আছে সেগুলি দেখুন। একটা কথাও তো উনি বলছেন না। রাজ্যের হয়ে যা যা চাওয়ার সেগুলি নিয়ে বলুন। বাংলার হয়ে বলুন। শুধু ছাত্র কেন, বাংলার মানুষের উদ্বিগ্নতার কথা বলুন।"




ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.