কলকাতা, 23 নভেম্বর : ফের নারদকাণ্ডে ED নোটিস পাঠালো তৃণমূলের তিন শীর্ষ নেতাকে। ফিরহাদ হাকিম, মদন মিত্র ও প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়কে সম্পত্তি ও আয় ব্যয় হিসাব সহ যাবতীয় তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে এই নোটিসে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত তথ্য নিয়ে ED-র অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে। ED-র নোটিশকে গুরুত্ব দিতে রাজি নন ফিরহাদ ৷ ED-র এই নোটিস পাঠানোকে BJP-র "গেম" হিসাবেই দেখছেন ফিরহাদ ৷ শুধু তাই-ই নয়, BJP রাজনৈতিক লড়াইয়ে না পেরেই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগায় বলেও তাঁর অভিযোগ ৷ ফিরহাদ হাকিম বলেন," BJP যখন রাজনৈতিক লড়াইয়ে পারে না, তখন কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। এটা BJP-র একটা গেম। আমরা এটাকে একটা গেম হিসেবেই নিচ্ছি। ওরা রাজনৈতিক লড়াইয়ে না পেরে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে দিয়ে আমাদের হেনস্থা করে।" তবে ED ডাকায় তিনি প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে হাজির হবেন বলে মন্তব্য করেন তিনি ৷ ED-র নোটিসের ফলে তিনি বলেন, "সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে অফিসে যাব, সত্যের মুখোমুখি হতে আমাদের কোনও ভয় নেই । এইসব নিয়ে আমি ভয় করিনা। এর আগেও ED তলব করেছে, আমি গিয়েছি।" BJP-কে ফিরহাদের নিশানা , " ওরা (পড়ুন, BJP) কেন্দ্র সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করছে। ED নিজের কাজ নিজে করছে ,ওরাও জানে এর মধ্যে কোনও সত্যতা নেই। এগুলো সবই ভোতা অস্ত্র। হাতে অস্ত্র থাকলে চালাতে হয়। কিন্তু এসব ভোতা অস্ত্র চালিয়ে কোন লাভ হবে না সেটা ওরা জানেনা। আমাদের রাজনৈতিক অস্ত্র মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা। আমরা মানুষের কাছে গিয়ে কাছে গিয়ে নিজেদের বক্তব্য জানাবো। ওরা ভাবছে এইসব করে ভোটে জিতবে আর আমরা জানি আমরা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেই ক্ষমতায় ফিরব।"
শুভেন্দু অধিকারী ও সৌগত বসুর মধ্যে আজ বৈঠক নিয়ে খুব সাবধানী মন্তব্য করেন ফিরহাদ। মাত্র কিছুদিন আগে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু-ফিরহাদ তরজা জমে ওঠে ৷ তার আগেও শুভেন্দু সম্পর্কে ফিরহাদকে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করতে শোনা যায় ৷ আজ সাবধানী ফিরহাদের গলায় বৈঠক নিয়ে খুব আশাপ্রদ মন্তব্য শোনা গেল না ৷ এই বিষয়ে ফিরহাদকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, "এই বৈঠকের মধ্য দিয়ে যা জটিলতা ও সমস্যা আছে তা যদি কেটে যায়, তাহলে তা খুবই দলের জন্য খুব ভালো। আমরা সকলেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সৈনিক। তাই দলের মধ্যে ঐক্য অটুট রেখে আগামী যুদ্ধের জন্য একসঙ্গে প্রস্তুতি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।"
লকেট চট্টোপাধ্যা মন্তব্য করেন, BJP-র কর্মসূচি "দুয়ারে দুয়ারে পদ্মের আগমনে"র অনুকরণে রাজ্য সরকার "দুয়ারে দুয়ারে সরকার" কর্মসূচি আনতে চলেছে। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ফিরহাদ হাকিম বলেন, "রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের অনুকরণে কেন্দ্রীয় সরকার প্রকল্প শুরু করেছে। গত 10 বছরে মুখ্যমন্ত্রী সাধারণ মানুষের জন্য বহু প্রকল্প নিয়ে এসেছেন। রাজ্য সরকার গত 10 বছরে যে প্রকল্পগুলোর শুরু করেছে তাতে কতটা মানুষের সুবিধা হয়েছে সেটা জানার জন্যই দুয়ারে দুয়ারে সরকার এই প্রকল্পটি শুরু হবে। আসলে লকেট চ্যাটার্জির নিজেই কখন কোন দিকে থাকবে সেটাই জানেন না, তাই এই ধরনের মন্তব্য করেন।"