কলকাতা, 25 মার্চ : কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, পরিচ্ছন্ন থাকার ওপর জোর দিচ্ছেন চিকিৎসকরা ৷ বলা হচ্ছে, স্পর্শের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে COVID-19 ভাইরাস ৷ এবার ট্রপিক্যাল স্কুল অফ মেডিসিনের ডিরেক্টর প্রতীপ কুণ্ডু জানালেন, নোট বা কয়েনের মাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়তে পারে কোরোনা ভাইরাস ৷
বিশ্বের প্রায় সব দেশেই থাবা বসিয়েছে মারণ কোরোনা ভাইরাস ৷ এর থেকে বাঁচার একটাই উপায়, সতর্কতা ৷ কোনওভাবে কোরোনা আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সেদিকে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে সাধারণ মানুষকে ৷ সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে ৷ কোরোনা মোকাবিলায় গতকাল রাত থেকে দেশে লকডাউন শুরু হয়েছে ৷ লক ডাউনের আওতার বাইরে রয়েছে, জরুরি পরিষেবাগুলি ৷ ই-কমার্সের মতো বাণিজ্যিক পরিষেবা চালু রয়েছে ৷ ভারতের মতো দেশে নগদ লেনদেন বেশি প্রচলিত ৷ সেক্ষেত্রে নোট বা কয়েনের মাধ্যমে নভেল কোরোনা ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা ৷ প্রতীপ কুণ্ডু ইটিভি ভারতকে জানালেন, ‘‘টাকার মধ্যেও কোরোনা ভাইরাস থাকতে পারে ৷ কোরোনা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশি হল ৷ সেইসময় তিনি হাত দিয়ে মুখ ঢাকলেন ৷ সেই হাতে নোট বা কয়েন ছুঁলেন ৷ ভাইরাস সেই নোট বা কয়েনের মাধ্যমে অন্য ব্যক্তির শরীরে প্রবেশ করতে পারে ৷’’ প্রতীপ কুণ্ডুর মতে, হাঁচি-কাশির থেকে অনেক দ্রুত ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে স্পর্শের মাধ্যমে ৷ তাই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে ওষুধ কেনা, সবক্ষেত্রেই নগদ লেনদেনে সাবধানে থাকতে হবে বলে তিনি পরামর্শ দিচ্ছেন ৷
পাশাপাশি কুণ্ডু বলেন, ‘‘যেখানে সেখানে হাত ছোঁয়াবেন না ৷ সেখান থেকে হাতের মাধ্যমে নাক বা মুখ দিয়ে ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে ৷’’ নভেল কোরোনা ভাইরাস নোট বা কয়েনে কতক্ষণ বেঁচে থাকে? চিকিৎসক কুণ্ডু জানান, ঠাণ্ডায় নভেল কোরোনা ভাইরাসের আয়ু ন’দিন ৷ গরমে তার থেকেও কম ৷ তাই টাকা ধরার পর সেই হাত চোখে বা মুখে দেওয়া যাবে না ৷ হাত ধুয়ে ফেলতে হবে সঙ্গে সঙ্গে ৷ তাহলে টাকা থেকে কোরোনা ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে ৷ চিকিৎসক আরও জানান, টাকা মানেই যে তাতে COVID-19 ভাইরাস রয়েছে, তা নয় । কোনও কাগজের নোট বা কয়েনকে এই ভাইরাসের সংস্পর্শে আসতে হবে, তার পরেই সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়তে পারে এই ভাইরাস । অর্থাৎ, কোনও COVID-19 আক্রান্তের হাঁচি-কাশি থেকে টাকায় ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ল ৷ সেই টাকা থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে স্পর্শের মাধ্যমে । টাকার উপরে কেউ তো হাঁচি-কাশি দেবেন না ৷ বাতাস বাহিত হয়ে এই ভাইরাস আসবে না বলেই তিনি জানান ৷
কুণ্ডুর মতে, টাকায় ভাইরাসের তুলনায় ব্যাকটেরিয়া বেশি থাকতে পারে ৷ টাকার মাধ্যমে ব্যাকটেরিয়া বেশি ছড়ায় ৷ এক্ষেত্রে টিউবারকিউলোসিস, টাইফয়েড, স্টেফাইলোকক্কাস ইনফেকশন হতে পারে । খাদ্যে বিষক্রিয়াও হতে পারে । তাই টাকা ব্যবহারের পরে হাত ধুয়ে নিতে হবে ৷ কোরোনার সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ঘন ঘন হাত ধুতে হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক ৷ তিনি বলেন, ‘‘দিনে কম করে ছয় থেকে আটবার কনুই পর্যন্ত হাত ধুতে হবে ৷’’