কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি: কোভিড-19-এর জন্যেও তাঁরা পরিষেবা দিচ্ছেন। বন্যা-খরা-সহ যে কোনও পরিস্থিতিতে সব ধরনের ছুটির ঊর্ধ্বে উঠে তাঁরা পরিষেবা দেন। তাঁরা হলেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী। কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে সবার আগে তাঁদের ছুটি বাতিল করা হয়। এমনকী তাঁরা সরকারি ছুটিও উপভোগ করতে পারেন না ইমার্জেন্সি সার্ভিসের জন্য। চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা যে পরিষেবা দেন, সেটা এসেন্সিয়াল সার্ভিস। এই সব কারণে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের অর্থনৈতিক ইনসেনটিভ দেওয়া হোক। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি পাঠিয়ে এমনই দাবি করল এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন।
এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল-এর সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক মানস গুমটা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, WBCS অফিসাররা অতিরিক্ত সার্ভিস দেন। WBCS অফিসাররা, তাঁদের নির্দিষ্ট কাজের পরিধির বাইরে অনেক সময় দেন। যখনই রাজ্য বা দেশের প্রয়োজন হয়, তখন তাঁদের পরিষেবা পাওয়া যায়।" তিনি বলেন, "এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। 12 মাস কাজ করে 13 মাসের বেতন পায় পুলিশ। WBCS অফিসাররা যে পরিষেবা দেন, তার জন্য সরকার যে ঘোষণা করল, তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু, এর পাশাপাশি আমরা এটাও বলতে চাই, যে যুক্তিতে WBCS অফিসারদের এটা দেওয়া হয়েছে, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এটা 100 শতাংশ প্রযোজ্য।"
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল-এর তরফে জানানো হয়েছে, শুধুমাত্র কোভিড-19-এর পরিস্থিতিতেই নয়, বন্যা-খরা-সহ যে কোনও পরিস্থিতিতে সব ধরনের ছুটির ঊর্ধ্বে উঠে যাঁরা পরিষেবা দেন, তাঁরা হলেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মী। কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আগে তাঁদের ছুটি বাতিল করা হয়। তাঁরা সরকারি ছুটি উপভোগ করতে পারেন না জরুরি ভিত্তির পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য। ফলে শিডিউল কাজের বাইরেও অনেক বেশি পরিষেবা দেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা। তাঁদের ক্ষেত্রেও এই বিষয়টি প্রযোজ্য হওয়া উচিত। চিকিৎসক স্বাস্থ্যকর্মীরা যে পরিষেবা দেন সেটা এসেনসিয়াল সার্ভিস। সকলে যখন উৎসবের আনন্দ উপভোগ করেন, সরকারি ছুটির তালিকা উপভোগ করেন, তখনও চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা সেই ছুটি উপভোগ করতে পারেন না।
আরও পড়ুন: কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে আন্দোলন প্রত্যাহার AIIH&PH-এর চিকিৎসকদের
মানস গুমটা বলেন, "চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের পাশাপাশি পুলিশের পরিষেবা নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে সাধারণ মানুষ পান। যে আবেগের ভিত্তিতে ডব্লিউবিসিএস অফিসারদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, তাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। একই সঙ্গে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য আমরা অর্থনৈতিক ইনসেনটিভের দাবি জানাচ্ছি।" এই বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছে চিকিৎসকদের এই সংগঠন।
অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল-এর তরফে জানানো হয়েছে, পে-কমিশনে চিকিৎসকদের চূড়ান্ত বঞ্চনা করা হয়েছে। এর জন্য এই সংগঠনের তরফে স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছিল। এর ভিত্তিতে নোটশিট তৈরি করে ফিন্যান্স ডিপার্টমেন্টের অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছিল গত বছরের মার্চ মাসে। অর্থ দপ্তর থেকে সেই ফাইল এখনও ফিরে আসেনি। চিকিৎসক মানস গুমটা এ বিষয়ে বলেছেন, "শেষ অর্থাৎ, ষষ্ঠ অর্থ কমিশনের রিপোর্টে চিকিৎসকদের বঞ্চনা করা হয়েছিল। আমাদের স্মারকলিপির উপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্য দপ্তর ফাইল তৈরি করে ফিনান্স ডিপার্টমেন্টে পাঠিয়েছিল সমস্যাটির সুরাহার জন্য। এই ফাইল এখনও নবান্নে আটকে রয়েছে। আমরা দাবি করছি, এই ফাইল ফেরত আসুক। চিকিৎসকদের প্রতি যে বঞ্চনা করা হয়েছিল, তার জন্য আমরা যে দাবি করেছিলাম, সেগুলি যেন পূরণ করা হয়।"