কলকাতা, 27 অগস্ট: কথায় আছে সন্তান হওয়ার সময় মহিলাদের পুনর্জন্ম হয় । তবে বর্তমানে আধুনিক হয়ে উঠেছে চিকিৎসা বিজ্ঞান । কিন্তু চিকিৎসা বিজ্ঞান উন্নত হলেও আজও দিনের পর দিন মৃত্যু হচ্ছে প্রসূতির (Childbirth Mortality) ।
সন্তান প্রসবের সময় বহু মা আজও লড়ে জীবন যুদ্ধে । সূত্রের খবর, কলকাতা শহরের বেশ কিছু সরকারি হাসপাতালে সন্তান হওয়ার সময় গর্ভবতী মহিলার মৃত্যু হচ্ছে । স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত এনআরএস হাসপাতালে (NRS Hospital) সন্তান হওয়ার সময় মৃত্যু হয়েছে 6 জনের, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে (National Medical College) প্রায় 23 জন, আরজিকরেও (RG Kar Hospital) 23 জন ও কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে (Medical College Kolkata) প্রায় 17 জন, এসএসকেএম হাসপাতালে (SSKM Hospital) 9 জনের । মোট 78 জনের মৃত্যু হয়েছে ।
ডিজিটালাইজেশনের দুনিয়ায় গ্রাম নয়, খাস কলকাতায় সন্তান হওয়ার সময় মৃত্যু হচ্ছে মায়েদের । কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটছে?
এনআরএস হাসপাতালের প্রসূতি বিভাগের অধ্যাপক, চিকিৎসক তপনকুমার নস্কর বলেন, "অনেকে সময় দেখা যায় সন্তান হওয়ার সময় ওই পরিবারের লোক বহু দেরি করে গর্ভবতী মহিলাকে (Pregnant) হাসপাতালে নিয়ে আসেন । ফলে সেই সময় আমাদের হাতে কিছু থাকে না । আবার রেফার রোগী হলে অনেক সময় বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরে আসতে আসতেও দেরি হয়ে যায় । তখন একটা শক্ত পরিবেশ তৈরি হয় । তবে আমি বলব, বর্তমানে চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক উন্নত হয়েছে ।"
আরও পড়ুন: প্রসূতি মৃত্যু রুখতে টিনেজ প্রেগন্যান্সির হার কমানোয় জোর রাজ্যের
পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালের গাইনো চিকিৎসক (Gynecologist) শীলিপতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "একজন মহিলা যখনই গর্ভবতী হন তখন তার বাড়ির লোকের একটা ধারণা হয়ে যায়, এই পুরো প্রক্রিয়াটা অনেকটা সহজ । চিকিৎসক পরামর্শ দিলেও সেটা তারা গ্রাহ্য করে না । কিন্তু যতদিন যায় বিষয়টা জটিল হতে থাকে । মাঝে যেকোনও সময় সমস্যা হতে পারে, সেটা পরিবারের লোক বুঝতে অনেক দেরি করে ফেলে । যার ফলে যে সময় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন সেই সময় না হয়ে, আরও জটিল অবস্থায় রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । হয়তো কোনও জেলা হাসপাতালে পুরো ব্যবস্থা করা নেই, তখনই সরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় ৷ আর তার জন্য যে সময়টা দেওয়া দরকার সেটা ঠিকমত পাওয়া যায় না । এর জন্যও কিন্তু এই ধরণের মৃত্যু আমরা দেখতে পাই ।"