কলকাতা, 5 জুলাই: বাংলা চলচ্চিত্র জগতে নক্ষত্র পতন । চলে গিয়েছেন বিশিষ্ট চিত্র পরিচালক তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar Last Wish)। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে ছক ভাঙল বঙ্গ সিপিআই(এম)। পার্টি সদস্য না হলেও প্রয়াত তরুণ মজুমদারের ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে তাঁর মরদেহে লাল পতাকা দিলেন পার্টি নেতৃত্ব । সাম্প্রতিক অতীতে বামেদের রাজনৈতিক ইতিহাসে যা নজিরবিহীন ঘটনা, বলছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা (CPIM gives red flag on Tarun Majumdar body)।
তরুণ মজুমদার ছাত্র জীবনে বাম আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রতোভাবে যুক্ত ছিলেন । পরবর্তী সময়ে সিপিএম-র গণসংগঠন গণনাট্য সংঘের সদস্য ছিলেন । রাজ্যে পালা বদলের পরে গোপনে নয়, প্রকাশ্যেই লালঝান্ডার বহু কর্মসূচিতে হাজির থেকেছেন । যখন রোজ নিয়ম করে দলবদল ঘটে চলেছে, লাল শিবির থেকে সবুজে ভিড়েছেন চলচ্চিত্রের বহু ব্যক্তিত্ব, তখনও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাঁর বামে আস্থা ছিল অটুট । বিভিন্ন ভোটের আগে পার্টির প্রচারের স্বার্থে তথ্যচিত্র তৈরি করেছেন । জীবনের শেষের দীর্ঘ 9-10 বছর তাঁর দিন রাত কেটেছে পার্টির মুখপত্র গণশক্তি পত্রিকার দফতরেই । দিনের দীর্ঘ সময় কাটাতে ভালোবাসতেন মুজফ্ফর আহমেদ লাইব্রেরিতে । পার্টির খুব কাছে থেকেও পার্টি সদস্য ছিলেন না তরুণ মজুমদার । তবু পার্টির প্রতি নিষ্ঠা, দায়বদ্ধতা কোনও পার্টি কর্মীর থেকে এক চুল কম ছিল না ।
প্রয়াত তরুণ মজুমদারের ঘনিষ্ট মহল সূত্রে খবর, আমৃত্যু লালঝান্ডার প্রতি আস্থাশীল তরুণ বাবুর শেষ ইচ্ছা ছিল মৃত্যুর পর তাঁর দেহ নিয়ে শ্মশান যাত্রা নয়, চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাজে লাগাতে তাঁর দেহ যেন দান করা হয় । আরও একটি অন্যতম ইচ্ছা ছিল পরিচালকের ৷ তাঁর দেহে যাতে লাল শালু পার্টির লাল পতাকা দেওয়া হয় । পাশাপাশি গীতাঞ্জলি ।
আরও পড়ুন: মৃণাল-ঋত্বিকের মতোই চিরস্মরণীয় থেকে যাবেন তরুণ, শোকবার্তায় জানাল গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সংঘ
সিপিআইএমের নিয়ম অনুসারে পার্টির সদস্য ছাড়া কাউকেই রক্ত পতাকা দেওয়া যায় না । তবে তরুণ মজুমদারের শেষ ইচ্ছা রক্ষায় ছক ভাঙল সিপিআইএম । নিয়ম কানুনের বেড়াজাল ভেঙে প্রয়াত পরিচালকের মরদেহে লাল পতাকা দেওয়া হয় পার্টির তরফে । তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এ দিন উপস্থিত ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, পার্টির রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম-সহ বহু নেতা কর্মী । পার্টির এই সিদ্ধান্তকে কর্মী, সমর্থক থেকে বিরোধী দলের নেতা কর্মী সকলেই প্রশংসা জানিয়েছেন ।