কলকাতা, 10 অক্টোবর : নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে একসঙ্গে পথে নামতে চলেছেন শিক্ষক ও চাকরিপ্রার্থীরা । 4 অক্টোবর কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে স্কুল সার্ভিস কমিশন উচ্চপ্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে মেধাতালিকা প্রকাশ করেছে । সেই তালিকায় অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা । হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখবে জানিয়েছে কমিশন । সেই অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখে কমিশন সমস্যা মেটাবে কি না, তা সময় বলবে । তবে তার আগেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতা ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে 18 অক্টোবর কমিশনের অফিসে অভিযানের ডাক দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা । শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চ নামে একটি সংগঠনের ডাকেই এই অভিযান হবে ।
শিক্ষক ঐক্য মুক্তমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক মইদুল ইসলাম বলেন, " 8 অক্টোবর মঞ্চের আহ্বানে করুণাময়ী থেকে কমিশনের অফিস পর্যন্ত প্রতিবাদ মিছিল হবে । রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শিক্ষকসহ চাকরিপ্রার্থীরা আসবেন ৷ তাঁরা কমিশনের কাছে মেধা তালিকায় অস্বচ্ছতা ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ দায়ের করবেন ৷ কমিশনের চেয়ারম্যানের পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে ডেপুটেশন জমা দেব ৷ জানতে চাইব কীসের ভিত্তিতে এই মেধাতালিকা প্রকাশ করা হল?"
মইদুল বলেন, "মেধা তালিকায় দেখা গেছে চাকরিপ্রার্থীদের টেটে প্রাপ্ত নম্বর অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে । 1:1:4 পদ্ধতি মানা হয়নি । মেল, ফিমেল, সংরক্ষণ কিছুই মানা হয়নি । প্রথম ধাপের ভেরিফিকেশনে যাঁদের নাম ছিল এবং ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছিল, তাঁদের নাম মেধা তালিকায় হয় নেই বা অনেক পিছনে রয়েছে । কাউকে অস্বাভাবিক ভাবে 9 বা সাড়ে 9 নম্বর দেওয়া হয়েছে । অথচ অনেক যোগ্য প্রার্থীকে 1 বা 2 নম্বর দেওয়া হয়েছে । দেখা যাচ্ছে, দু'জন প্রার্থী র্যাঙ্ক করেছে 49 ও 65 ৷ অথচ দেখা যাচ্ছে যখন ফর্ম ফিল-আপ হয় তখন তাঁরা ট্রেইনড ছিলেন না । তারপরেও চূড়ান্ত মেধা তালিকায় তাঁদের 10 নম্বর দিয়ে অস্বাভাবিকভাবে নম্বর বাড়ানো হয়েছে । কমিশনের তরফে সময় দেওয়া রয়েছে 25 অক্টোবর পর্যন্ত অভিযোগ দায়ের করার । তারপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব ।"
কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার বলেন, "অভিযোগ জমা দিতে বলুন । আমরা নিশ্চয়ই তার রসিদ দেব । আমরা যাচাই করে উত্তর দেব । আমরা প্রত্যেকটা অভিযোগ বিচার-বিবেচনা করব । তার ভিত্তিতে আমরা কী পদক্ষেপ করলাম তা নিশ্চয়ই জানাব ।"
আরও একটি অভিযোগ উঠেছিল । সেটি হল আপার প্রাইমারি মেধাতালিকায় রয়েছেন অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীরা । আজ একটি বিবৃতি জারি করে এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন সৌমিত্র সরকার । তিনি বলেন, "একথা একেবারেই ঠিক নয় । কারণ, SSC-র পক্ষ থেকে গত 1 জুলাই আদালতে জানানো হয়েছে, কোনও অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীকে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়নি । তা ছাড়াও SSC-র পক্ষ থেকে ত্রিস্তরীয় যাচাই করার ব্যবস্থা হয়েছিল । প্রথমে ভেরিফিকেশন, তারপর স্যাম্পল রি-ভেরিফিকেশন এবং পরবর্তীকালে ভেরিফিকেশন বিফোর অ্যাপিয়ারিং বিফোর পার্সোনালিটি টেস্ট বোর্ড । এরপর কোনও অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীর নাম মেধা তালিকায় থাকা প্রায় অসম্ভব । তবুও, যদি কোনও ক্ষীণ সম্ভবনা থাকে তাহলে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ পেলে সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা গ্রহণ করব ।" তিনি আরও বলেন, "কেউ কোনও বিভ্রান্তির স্বীকার হবেন না । প্রকৃত তথ্যপ্রমাণ পেলে উপযুক্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।"