কলকাতা, 8 জুলাই: রাজ্য বিধানসভায় নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরব হয়েছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তখনই তিনি জানিয়েছিলেন, গত 10 বছরে বিধানসভার নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে (Assembly recruitment Corruption)। বিশেষ করে তাঁর অভিযোগ ছিল, ভিন রাজ্য থেকে ভুয়ো শিক্ষাগত যোগ্যতার কাগজপত্র জমা করে চাকরি পেয়েছেন অনেকেই । তিনি এও বলেছেন, বিধানসভায় চাকরি হওয়া কর্মীদের সম্পর্কে তথ্য জানতে আরটিআই করবে তাঁর দল । এরপরও যদি তথ্য না দেওয়া হয় আদালতে যাবেন তিনি । সেইমতো বিজেপি পরিষদীয় দলের তরফ থেকে বিধায়ক অম্বিকা রায় তথ্য জানার অধিকার আইনে আবেদন করেছেন, গত দশ বছরে কতজনের চাকরি হয়েছে রাজ্য বিধানসভায় (BJP MLA files RTI)।
বিধায়কের অভিযোগ, 2011 সালের পর বিধানসভার নিয়োগেও দুর্নীতি হয়েছে । আর সেই কারণে 2012 সালের 1 জানুয়ারি থেকে 31 মার্চ 2022 পর্যন্ত যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন বিধায়ক । এই আরটিআই আবেদনে আলাদা করে জানতে চাওয়া হয়েছে, নিয়োগ হওয়া কর্মীরা কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে কোন বছরে পাস করেছেন সে বিষয়টিও (Corruption allegation in Assembly recruitment)।
প্রসঙ্গত শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন উপলক্ষে বিধানসভায় আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিধানসভায় এসেছিলেন বিরোধী দলনেতা । সেখানেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন, "2011 সাল থেকে বিধানসভার নিয়োগেও দুর্নীতি হয়েছে । আমাদের হাতে কিছু প্রমাণ রয়েছে । সেগুলো নিয়ে আমরা খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের সামনে তুলে ধরব । মূলত গ্রুপ ডি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে এই দুর্নীতি হয়েছে । তিনি এমনও অভিযোগ করেন, বিধানসভায় যাঁরা গ্রুপ ডি পদে বহাল হয়েছেন, তাঁদের বেশিরভাগ দক্ষিণ 24 পরগনার বাসিন্দা । আমাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে, এমন বহু লোক বিধানসভায় বহাল হয়েছেন যাঁরা ভুয়ো মার্কশিট দিয়ে চাকরি পেয়েছেন । অষ্টম ও দশম শ্রেণি উত্তীর্ণ যাঁদের চাকরি দেওয়া হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেরই ভুয়ো বা জাল মার্কশিট দিয়ে চাকরি পেয়েছেন । তাঁদের বেশিরভাগেরই মার্কশিট বাইরের রাজ্য থেকে আনা হয়েছে ।"
আরও পড়ুন: নূপুর শর্মা আর মহুয়া মৈত্রকে এক বন্ধনীতে রাখার চেষ্টা ভুল, মত কুণালের
বিরোধী দলনেতার এ হেন বক্তব্যের পর এর পাল্টা জবাব দেন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি বলেন, বিরোধী দলনেতা যে কথা বলছেন তার কোনও ভিত্তি নেই । বিধানসভাতে সম্পূর্ণ নিয়ম মেনেই নিয়োগ করা হয় । পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া কোনও চাকরি হয় না । যে কোনও চাকরি হওয়ার আগে চাকরি প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন হয় তারপর মেডিক্যাল হয় । তবে তাঁরা চাকরি পান । বিধানসভাতে কখনওই কোনও নিয়োগ পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়া হয় না । এখানেই শেষ নয়, অধ্যক্ষ বলেন সমস্ত অভিযোগ আসলে বাজে কথা, এর কী গুরুত্ব দেব !
সেই অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের পর বৃহস্পতিবার আরটিআই করেন বিজেপি বিধায়ক ৷ এখন দেখার এই জল শেষ পর্যন্ত আদালত পর্যন্ত গড়ায় কি না ।