কলকাতা, 14 এপ্রিল : রাত পোহালেই পয়লা বৈশাখ, বাংলা নববর্ষ ৷ এই উপলক্ষে বাংলার আনাচে কানাচে শুভেচ্ছা বিনিময় চলে ৷ এটাই বাংলার সংস্কৃতি, বাঙালির ঐতিহ্য ৷ কিন্তু এই শুভেচ্ছা বিনিময় নিয়েও এবার বিতর্কে জড়ালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷ বুধবার বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করেন তিনি ৷ আর বিতর্ক শুরু হয় তা নিয়েই ৷ তিনি এই বিশেষ দিনটিকে ‘‘হিন্দু নববর্ষ’’ বলে উল্লেখ করেন ৷ ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে ৷
এদিন দিলীপ ঘোষের এই ফেসবুক পোস্টে বিভাজনের ইন্ধন দেখছে তৃণমূল ৷ তৃণমূলের অন্যতম মুখপাত্র তথা বরানগর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী তাপস রায় বলেন, ‘‘আমরা এতদিন ধরে বাংলায় আছি ৷ কখনও মনে হয়নি এই নববর্ষ হিন্দুদের নববর্ষ ৷ এককথায় যেটা বলতে পারি, এই নববর্ষ বাঙালির ৷ দিলীপবাবু নববর্ষকে হিন্দু-মুসলমানে বিভাজিত করে আসলে বাঙালি সংস্কৃতিকেই অপমান করেছেন ৷’’
আরও পড়ুন : ভোটের ফলের আগেই তৃণমূলকে ‘বিরোধী’ বলে কটাক্ষ দিলীপের
এদিকে বিজেপি রাজ্য সভাপতির এই ফেসবুক পোস্ট নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সিপিএম নেতা তন্ময় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘‘দিলীপ ঘোষের মতো নেতাদের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কিছু আশা করে না বাংলার মানুষ ৷ তিনি জানেনই না এটা যেমন হিন্দুর নববর্ষ, একইভাবে বাংলায় বসবাসরত মুসলিম, খ্রিস্টান-সহ অন্যান্য সম্প্রদায়েরও নববর্ষ ৷ আরএসএসের শিক্ষায় এই নববর্ষকে যতই তিনি হিন্দুদের উৎসব বলে দেখানোর চেষ্টা করুন না কেন, বাংলায় তা সম্ভব নয় ৷ বরং এই চেষ্টা হলে বাংলার মানুষ তাঁর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব হবেন ৷’’
প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘দিলীপবাবু হয় ইতিহাস জানেন না, না হয় ইতিহাসকে বিকৃত করছেন ৷ বাংলাদেশে পয়লা বৈশাখের দিন বৈশাখী উৎসব পালিত হয় ৷ তাহলে তিনি কীভাবে একথা বলতে পারেন ৷ সবচেয়ে বড় কথা হল, দিলীপবাবুর এই বক্তব্যের মধ্যে বিভাজনের চেষ্টা স্পষ্ট ৷ একটা গণতান্ত্রিক দেশের শাসকদলের রাজ্য সভাপতি হয়ে তাঁর মুখে এই ধরনের কথা নিঃসন্দেহে নিন্দনীয় ৷ তবে দিলীপ ঘোষের কাছ থেকে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না ৷’’