ETV Bharat / city

বাড়ছে বায়ু দূষণ, কতটা প্রস্তুত কলকাতা?

দূষণ বাড়ছে শহরের ৷ লকডাউনের পরে বাতাসে ধূলিকণা ও কার্বন মনোক্সাইড পরিমাণ উল্লেখযোগ্য় ভাবে বাড়ছে ৷ অথচ দূষণ পরিষদের কাছে সেই দূষণ পরিমাপের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই ৷ অভিযোগ পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্র মোহন ঘোষের ৷ আর এই দূষণের ফলে মানুষের নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা তৈরি হচ্ছে ৷ যদিও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ডঃ কল্যাণ রুদ্রের দাবি, দূষণ নিয়ন্ত্রণে বেশকিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে।

pollution city
বায়ু দূষণ রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই
author img

By

Published : Sep 6, 2020, 7:36 PM IST

কলকাতা, 6 সেপ্টেম্বর : বায়ু দূষণের পরিমাপ মাপার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে। এমনই অভিযোগ করলেন পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ। শহরের বায়ু দূষণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে লকডাউন উঠে যাওয়ার পর। বিশেষত পেট্রল গাড়ি থেকে কার্বন মনোক্সাইড যেভাবে নির্গত হচ্ছে তাতে মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। ফুসফুসের রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এই দূষণের ফলে। কার্বন মনোক্সাইড এবং বিভিন্ন গাড়ির থেকে নির্গত অর্গানিক কম্পাউন্ড যৌগ প্রক্রিয়ায় শহরের বায়ুকে দূষিত করছে ভয়ংকরভাবে।


টানা লকডাউনে শহরের বায়ু দূষণ এতটাই কমে গিয়েছিল যা দেখে আশার আলো দেখেছিলেন পরিবেশবিদরা। পেট্রল চালিত গাড়ির কার্বন-মনোক্সাইড ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সংলগ্ন অঞ্চল এবং বালিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় দূষণ বাড়াচ্ছে এই মুহূর্তে। ডিজ়েল চালিত পুরানো বাস-ট্যাক্সির থেকে এই দূষণ ছড়াচ্ছে। পুরানো বাস এবং ট্যাক্সি শহরে চলার জন্য বিশেষ করে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ হয়ে রেড রোড, মেয়ো রোড এবং ফোর্ট উইলিয়াম পর্যন্ত বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বিপজ্জনকভাবে বেড়ে চলেছে। পার্টিকুলেট ম্যাটার প্রত্যেক ঘনমিটারে 2.5 অর্থাৎ ছোট্ট ধূলিকণা মিশে রয়েছে বাতাসে। জাতীয় বায়ু দূষণের মাপকাঠিতে 60 মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে থাকা উচিত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই মুহূর্তে শহরের বায়ুতে দূষণের পরিমাণ 100 মাইক্রোগ্রাম ছাড়িয়ে গিয়েছে। নির্মাণ শিল্পের জন্য ধর্মতলা এবং ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় বাতাসে কংক্রিটের ধূলিকণার পরিমাণ বেশি। অন্যদিকে ওজোন স্তরের ক্ষতি করছে গাড়ির দূষণ। ফুসফুসের সংক্রমণ, হাঁপানি, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব বাড়ছে বায়ু দূষণের জন্যই । বললেন পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ।

বাতাসে বাড়ছে কার্বন মনোক্সাইড

শহরের বাতাসে অত্যাধিক কার্বন মনোক্সাইডের কারণে মানবদেহে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শহরের মাত্র 10 টি জায়গায় দূষণ মাপার যন্ত্র বসিয়েছে। ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্সের তালিকায় বহু মেশিনের মধ্যে খারাপ হয়ে গিয়েছে। ছ'টি অটোমেটিক মেশিন রয়েছে। দুটো মেশিন খারাপ হয়ে রয়েছে। হাওড়ার শিল্পাঞ্চল সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালানো সত্ত্বেও দূষণের পরিমাণ কিন্তু বেড়েই চলেছে। পরিবেশ প্রযুক্তিবিদের পরামর্শ অবিলম্বে শহরের বিভিন্ন দূষণ প্রবণ এলাকায় চল্লিশটি দূষণ নিয়ন্ত্রণের মেশিন বসানো প্রয়োজন। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা পরিমাণ বিপজ্জনকভাবে বেড়ে চলেছে। কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের নির্গমনে এবং শহরের বিভিন্ন ফুটপাতে চায়ের দোকানের উনুনের ধুয়োয় দূষণ কেবল বেড়েই চলেছে। হাওড়া, শিয়ালদা এবং কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন সহ দক্ষিণে বজবজ, রাজাবাজার, মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচ, পার্ক সার্কাস সহ বিভিন্ন এলাকায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অতিরিক্ত পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। শহরের বাতাসের দূষণের হার যদি এভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে মানুষের শরীরে কো-মর্বিডিটি বেড়ে যাবে। সহজেই মানুষ কোরোনার সংক্রমণের শিকার হবে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস সবই আসছে বায়ু দূষণ থেকে।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ডঃ কল্যাণ রুদ্র জানিয়েছেন, শহরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাতাসের ধূলিকণার জন্য দায়ি বেআইনি নির্মাণ শিল্পের ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে শহরের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বায়ু দূষণ মাপার যন্ত্রগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও যন্ত্র বসানো হবে শহরের বিভিন্ন এলাকায়।

কলকাতা, 6 সেপ্টেম্বর : বায়ু দূষণের পরিমাপ মাপার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে। এমনই অভিযোগ করলেন পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ। শহরের বায়ু দূষণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে লকডাউন উঠে যাওয়ার পর। বিশেষত পেট্রল গাড়ি থেকে কার্বন মনোক্সাইড যেভাবে নির্গত হচ্ছে তাতে মানুষের শরীরে বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে। ফুসফুসের রোগ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের উপসর্গ দেখা দিচ্ছে এই দূষণের ফলে। কার্বন মনোক্সাইড এবং বিভিন্ন গাড়ির থেকে নির্গত অর্গানিক কম্পাউন্ড যৌগ প্রক্রিয়ায় শহরের বায়ুকে দূষিত করছে ভয়ংকরভাবে।


টানা লকডাউনে শহরের বায়ু দূষণ এতটাই কমে গিয়েছিল যা দেখে আশার আলো দেখেছিলেন পরিবেশবিদরা। পেট্রল চালিত গাড়ির কার্বন-মনোক্সাইড ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল সংলগ্ন অঞ্চল এবং বালিগঞ্জের বিস্তীর্ণ এলাকায় দূষণ বাড়াচ্ছে এই মুহূর্তে। ডিজ়েল চালিত পুরানো বাস-ট্যাক্সির থেকে এই দূষণ ছড়াচ্ছে। পুরানো বাস এবং ট্যাক্সি শহরে চলার জন্য বিশেষ করে উত্তর কলকাতার শ্যামবাজার থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউ হয়ে রেড রোড, মেয়ো রোড এবং ফোর্ট উইলিয়াম পর্যন্ত বাতাসে ধূলিকণার পরিমাণ বিপজ্জনকভাবে বেড়ে চলেছে। পার্টিকুলেট ম্যাটার প্রত্যেক ঘনমিটারে 2.5 অর্থাৎ ছোট্ট ধূলিকণা মিশে রয়েছে বাতাসে। জাতীয় বায়ু দূষণের মাপকাঠিতে 60 মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে থাকা উচিত। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এই মুহূর্তে শহরের বায়ুতে দূষণের পরিমাণ 100 মাইক্রোগ্রাম ছাড়িয়ে গিয়েছে। নির্মাণ শিল্পের জন্য ধর্মতলা এবং ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস সংলগ্ন এলাকায় বাতাসে কংক্রিটের ধূলিকণার পরিমাণ বেশি। অন্যদিকে ওজোন স্তরের ক্ষতি করছে গাড়ির দূষণ। ফুসফুসের সংক্রমণ, হাঁপানি, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব বাড়ছে বায়ু দূষণের জন্যই । বললেন পরিবেশ প্রযুক্তিবিদ সোমেন্দ্র মোহন ঘোষ।

বাতাসে বাড়ছে কার্বন মনোক্সাইড

শহরের বাতাসে অত্যাধিক কার্বন মনোক্সাইডের কারণে মানবদেহে নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ শহরের মাত্র 10 টি জায়গায় দূষণ মাপার যন্ত্র বসিয়েছে। ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্সের তালিকায় বহু মেশিনের মধ্যে খারাপ হয়ে গিয়েছে। ছ'টি অটোমেটিক মেশিন রয়েছে। দুটো মেশিন খারাপ হয়ে রয়েছে। হাওড়ার শিল্পাঞ্চল সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালানো সত্ত্বেও দূষণের পরিমাণ কিন্তু বেড়েই চলেছে। পরিবেশ প্রযুক্তিবিদের পরামর্শ অবিলম্বে শহরের বিভিন্ন দূষণ প্রবণ এলাকায় চল্লিশটি দূষণ নিয়ন্ত্রণের মেশিন বসানো প্রয়োজন। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা পরিমাণ বিপজ্জনকভাবে বেড়ে চলেছে। কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসের নির্গমনে এবং শহরের বিভিন্ন ফুটপাতে চায়ের দোকানের উনুনের ধুয়োয় দূষণ কেবল বেড়েই চলেছে। হাওড়া, শিয়ালদা এবং কলকাতা রেলওয়ে স্টেশন সহ দক্ষিণে বজবজ, রাজাবাজার, মেটিয়াবুরুজ, গার্ডেনরিচ, পার্ক সার্কাস সহ বিভিন্ন এলাকায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অতিরিক্ত পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন। শহরের বাতাসের দূষণের হার যদি এভাবে বাড়তে থাকে, তাহলে মানুষের শরীরে কো-মর্বিডিটি বেড়ে যাবে। সহজেই মানুষ কোরোনার সংক্রমণের শিকার হবে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস সবই আসছে বায়ু দূষণ থেকে।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান ডঃ কল্যাণ রুদ্র জানিয়েছেন, শহরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাতাসের ধূলিকণার জন্য দায়ি বেআইনি নির্মাণ শিল্পের ক্ষেত্রে কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। সেইসঙ্গে শহরের বিভিন্ন ফাঁকা জায়গায় বৃক্ষরোপণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বায়ু দূষণ মাপার যন্ত্রগুলিকে রক্ষণাবেক্ষণ করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও যন্ত্র বসানো হবে শহরের বিভিন্ন এলাকায়।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.