কলকাতা, 10 নভেম্বর : বিধায়ক,সাংসদদের বিরুদ্ধে জমে থাকা মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তি করতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কী পরিকল্পনা রয়েছে তা হলফনামা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । বুধবার এই সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে জানানো হয়, হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্য ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ করেছে । অন্যদিকে কেন্দ্রের তরফে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনারেল ওয়াইজে দস্তুর এদিন আদালতে জানান, কেন্দ্রের হাতে চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত বিধায়ক,সাংসদদের কিছু মামলার ফাইল এখনও রয়েছে। আদালত যদি নির্দেশ দেয় সেই ফাইলগুলি হাইকোর্টের কাছে অথবা বিশেষ আদালতের হাতে তুলে দিতে অসুবিধা নেই কেন্দ্রের। একই সঙ্গে তিনি আরও জানান, বিধায়ক, সাংসদদের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে শুধুমাত্র বিধাননগরে একটি আদালত তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের নিম্ন আদালতগুলিতেও বিধায়ক সাংসদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা জমে রয়েছে। সেই মামলাগুলি যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি করা যায় সেদিকে দৃষ্টিপাত করুক কলকাতা হাইকোর্ট।
এরপরই এদিন কলকাতা হাইকের্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয় আগামী 11 জানুয়ারির মধ্যে এই ব্যাপারে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়পক্ষেরই যদি কিছু বক্তব্য থেকে থাকে অথবা এই সমস্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য কী ধরনের পরিকল্পনা তাদের তরফ থেকে কী করা হচ্ছে, তা হলফনামা দিয়ে আদালতকে জানাতে হবে ৷
আরও পড়ুন : Upper Primary Recruitment : অভিযোগের পাহাড়, উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ আপাতত বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের
রাজ্যের তরফে অ্য়াডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন আদালতে জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো বিধাননগরে বিশেষ আদালত গড়ে তোলা হয়েছে এই সংক্রান্ত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির তাগিদে। পাশাপাশি এই সমস্ত মামলার জন্য সরকারি কৌঁসুলির যে ঘাটতি ছিল সে ব্যাপারেও ইতিমধ্যেই তিনি রাজ্য সরকারকে জানিয়েছেন। পাশাপাশি, এক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা যে এখনও রয়েছে সেটাও তিনি স্বীকার করে নেন। কিছু মামলার কেস ডায়েরি হারিয়ে গিয়েছে, সেগুলির বিকল্প ফাইল খোঁজার চেষ্টা চলছে বলেও এদিন আদালতকে জানিয়েছেন অ্য়াডভোকেট জেনারেল। এ ব্যাপারে নোডাল অফিসার হিসাবে ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ পদমর্যাদার একজনকে একজনকে নিয়োগ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, 2018 সালে সুপ্রিম কোর্টের তৎকালীন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ দেশের সব হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সাংসদ,বিধায়কদের বিরুদ্ধে জমে থাকা ফৌজদারি মামলা বিশেষ আদালত বসিয়ে নিষ্পত্তি করতে হবে। সেই কারণে উত্তর 24 পরগনার জেলা সদর বারাসতে সাংসদ,বিধায়কদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার বিচারের জন্য বিশেষ আদালত তৈরি করা হয়েছিল। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন নিম্ন আদালতে সাংসদ, বিধায়ক দের বিরুদ্ধে বহু মামলা রয়েছে। কিন্তু করোনা অতিমারির কারণে নিম্ন আদালতগুলিতেও বিচার প্রক্রিয়া স্বাভাবিক ছিল না। এই পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের তরফে চলতি বছরে সমস্ত রাজ্যের হাইকোর্টগুলিকে ফের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যাতে দ্রুত সাংসদ ও বিধায়কদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত ফৌজদারি মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় গতি আনা হয়।