কলকাতা, 6 জুলাই: ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায়(post poll violence case) নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা আবু তাহেরের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court) । বিচারপতি দেবাংশু বসাক এদিন এই নির্দেশ দিয়েছেন ।
বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর 3 মে নন্দীগ্রামের একাধিক জায়গায় হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে । ওই সময় নন্দীগ্রামের চিল্লাগ্রাম এলাকায় গুরুতর জখম হন বিজেপি কর্মী দেবব্রত মাইতি । কলকাতায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় 13 মে দেবব্রতর মৃত্যু হয় । হাইকোর্টের নির্দেশে সেই ঘটনার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে । ওই ঘটনাতে আবু তাহের-সহ নয় জন তৃণমূল নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে নোটিশ পাঠায় সিবিআই ।
এই ব্যাপারে এদিন সিবিআইকে কটাক্ষ করেন বিচারপতি । বিচারপতি বলেন, "আপনারা 41-এ অভিযুক্ত হিসাবে নোটিশ দিয়ে না ডেকে 160-এ সাক্ষী হিসাবে নোটিশ দিয়ে তলব করছেন ৷ এদিকে আপনারা আদালতের কাছে চাইছেন আবেদনকারী আবু তাহেরকে হেফাজতে নিয়ে তদন্ত করতে । তাঁকে সাক্ষী নোটিশ দিয়ে তলব করছেন ৷"
অর্থাৎ সিয়ারপিসি রুল অনুযায়ী, কাউকে অভিযুক্ত মনে করলে তাঁকে 41-এ নোটিশ পাঠাতে হয় ৷ অভিযুক্ত হিসাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে নোটিশ না পাঠিয়ে কেন সাক্ষী হিসাবে নোটিশ পাঠানো হল, প্রশ্ন করে আদালত । একই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত শেখ সুফিয়ানের আগাম জামিনের আবেদন প্রথমে কলকাতা হাইকোর্ট খারিজ করে দিলেও পরবর্তীকালে সুপ্রিমকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি ।
বুধবারের মামলার শুনানি চলাকালীন আবু তাহেরের আইনজীবী দাবি করেন, "বিরোধী দলনেতা এই তদন্তের ওপরে প্রভাব খাটাচ্ছেন । বারবার তার বক্তব্যে তা প্রতিফলিত হয়েছে । বিরোধী দলনেতা প্রকাশ্যে বলেছেন সিবিআইয়ের হাতে লিস্ট রয়েছে কাকে কাকে ডাকা হবে । সিবিআই এই মামলায় দুবার চার্জশিট পেশ করেছে । দুটি চার্জশিটে আবু তাহেরের নাম নেই ।" অন্যদিকে সিবিআই এর দাবি, দ্বিতীয় চার্জশিট পেশ করার পর আশিস দাস ও বিশ্বজিৎ পান্ডার গোপন জবানবন্দিতে আবু তাহেরের নাম উঠে আসে । তাঁকে নোটিশ করা হলেও তিনি সিবিআই-এর কাছে হাজিরা দিচ্ছেন না এবং তদন্তে কোনভাবেই সহযোগিতা করছেন না । তারপরই বিচারপতি আবু তাহেরের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন(Cal HC rejects Nandigram TMC leader Abu Taher anticipatory bail plea in post poll violence case) ।
উল্লেখ্য, 5 বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চ ভোট-পরবর্তী হিংসা মামলায় খুন ও ধর্ষণ সংক্রান্ত বিষয়গুলির উপরে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ জারি করেছিল ।