কলকাতা, 22 এপ্রিল : নামখানায় শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের আধিকারিক দময়ন্তী সেনের তত্ত্বাবধানে তদন্ত করার নির্দেশ দিল হাইকোর্ট (Cal HC Appoints Damayanti Sen to Lead another Case of Crime against Woman in Bengal) । যদি তিনি এর তদন্তভার গ্রহণ করতে রাজি থাকেন, তাহলেই তাঁকে এই দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আদালত । নামখানার ঘটনায় তদন্ত নিরপেক্ষ ভাবে হয়নি বলেই মনে করছে আদালত ৷ এদিন শুনানিতে একথাই প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ উল্লেখ করেছে বলে জানা গিয়েছে । পাশাপাশি নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবারকে সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ৷
এই ঘটনায় মামলাকারীদের বক্তব্য ছিল, নির্যাতিতার পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য । সেই কারণেই তদন্ত হস্তান্তর করা দরকার সিবিআইয়ের (CBI) হাতে । কিন্তু রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল, "শারীরিক নির্যাতন । যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেনি ।"
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব প্রশ্ন করেন, "শারীরিক নির্যাতন হলেও প্রাথমিক ভাবে মেডিক্যাল পরীক্ষা না করলে কী ধরনের নির্যাতন হয়েছে বুঝবেন কিভাবে ?" অ্যাডভোকেট জেনারেল অবশ্য পরে বলেন, ‘‘পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে পরে সাক্ষীদের গোপন জবানবন্দি নিয়েছে । 11 এপ্রিল আক্রান্তের মেডিক্যাল পরীক্ষা হয়েছে । তদন্ত সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে করা হচ্ছে, যাতে কেউ রেহাই না পায় ।’’
কিন্ত বিজেপি তরফের আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ বলেন, "যথাযথ তদন্তের জন্য স্থানীয় পুলিশের তদন্ত যথেষ্ট নয় ।" সবপক্ষের বক্তব্য শোনার পর প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ দময়ন্তী সেনকেই এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন ।
অন্যদিকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় ধর্ষণের ঘটনায় মহিলা আইপিএস পারুল জৈনের নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, 11 এপ্রিল ঘটনা ঘটেছে ৷ কিন্তু স্থানীয় পুলিশ অভিযোগ নেয়নি । পাশাপাশি এই ঘটনায় স্থানীয় প্রভাবশালী পঞ্চায়েত সদস্য জড়িত৷ তদন্ত কোনও উচ্চপদস্থ পুলিশ অফিসারের নেতৃত্বে হওয়া উচিত বলে মনে করেছে আদালত ।
রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল, ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় আক্রান্তের গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে । তার মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে । পাশাপাশি দু’জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্তর মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়েছে । আদালত পুলিশের কাজেও ভরসা রাখুক ।
কিন্তু ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা যুক্ত থাকায় আইপিএস পুলিশ অফিসারের নেতৃত্বে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট । অন্যদিকে ময়নাগুড়ি, নেত্রা ও শান্তিনিকেতনে গণধর্ষণের ঘটনায় মে মাসের 2 তারিখের মধ্যে পুলিশের তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট । আগামী 2 মে সমস্ত মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত ।