কলকাতা, 22 এপ্রিল : আপাতত গ্রেফতার করা যাবে না বিনয় মিশ্রকে ৷ তবে নিয়মিত সিবিআই দফতরে হাজিরা দিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে তাঁকে ৷ বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট ৷
কয়লা পাচার ও গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ৷ তারই ভিত্তিতে এই তৃণমূল যুব নেতার নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত ৷ গ্রেফতারি এড়াতে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানান বিনয় মিশ্র। সেই মামলাতেই আপাতত স্বস্তি পেলেন তিনি।
এদিন বিচারপতি শুভাশিস দাশগুপ্ত নির্দেশ দেন, আপাতত বিনয় মিশ্রকে গ্রেফতার করা যাবে না ৷ তবে আগামী 3 মে কলকাতায় সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে ৷ মামলার পরবর্তী শুনানি আদালতের গ্রীষ্মকালীন অবকাশের পর।
এদিন মামলার শুনানি চলাকালীন সিবিআইয়ের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল যে যুক্তি পেশ করেন তা হল, জাতীয় স্বার্থে সিবিআই এই ধরনের তদন্ত করতে পারে ৷ এবং তার জন্য রাজ্যের কোনও অনুমতি লাগে না ৷ তাই বিনয় মিশ্রের উচিত তদন্তে সিবিআইকে সহযোগিতা করা ৷ প্রসঙ্গত, রাজ্য়ের এক্তিয়ারভুক্ত এলাকায় ঢুকে তদন্ত করতে হলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হয় ৷ কিন্তু, 2018 সালের নভেম্বর মাস থেকে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সেই অনুমতি দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ৷ বিনয় মিশ্রের মামলায় এই প্রসঙ্গ ওঠায় অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল প্রশ্ন তোলেন, এই সংক্রান্ত সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞপ্তিটি কোথায় ?
এরপরই বিচারপতি নির্দেশ দেন, আপাতত বিনয় মিশ্রকে গ্রেফতার করা যাবে না ৷ তবে তাঁকে সিবিআই দফতরে এসে হাজিরা দিতে হবে ৷ সিবিআইয়ের তদন্তে সবরকমভাবে সহযোগিতা করতে হবে।
আরও পড়ুন : গোরু কাণ্ডে সিবিআইয়ের তদন্তের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন অভিষেক মনু সিংভির
প্রসঙ্গত, এর আগে এই মামলার শুনানিতে বিনয় মিশ্রের তরফে সওয়াল করেন প্রখ্যাত আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি ৷ তিনি বেশ কতগুলি বিষয়ের উপর আলোকপাত করেছিলেন ৷ প্রথমত, যে লেনদেনের ভিত্তিতে সিবিআই বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে চাইছে, তার সঙ্গে বিনয় মিশ্রের কোনও যোগাযোগ নেই বলে দাবি করেছিলেন ৷ তাছাড়া, চার-পাঁচ বছর আগের লেনদেন নিয়ে সিবিআই হঠাৎ করে কেন এত আগ্রহী হয়ে উঠল, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন সিংভি ৷ এমনকী, এর পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধিও থাকতে পারে বলে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি ৷ দ্বিতীয়ত, রাজ্যের আওতাধীন এলাকায় ঢুকে এভাবে তদন্ত করার অধিকার নেই সিবিআইয়ের বলে দাবি করেছিলেন তিনি ৷ তৃতীয়ত, এই রকমই অন্য একটি মামলায় সুপ্রিম কোর্ট মূল অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালাকে গ্রেফতার না করার নির্দেশ দিয়েছে কিছুদিন আগে ৷ একই নির্দেশ বিনয় মিশ্রের ক্ষেত্রেও কার্যকর হওয়া উচিত বলে সওয়াল করেছিলেন অভিষেক মনু সিংভি ৷ সেক্ষেত্রে তাঁর মক্কেল তদন্তে সবরকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত বলে আদালতকে জানিয়েছিলেন বর্ষীয়ান আইনজীবী ৷