ETV Bharat / city

Rain: বৃষ্টির ঘাটতিতে আমন চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন নবান্ন, সেচ দফতরকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ

author img

By

Published : Jul 12, 2022, 9:36 PM IST

আষাঢ় শেষের দিকে অথচ এখনও পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই দক্ষিণবঙ্গে (Rain in South Bengal Districts) । এমন পরিস্থিতি চললে আমন চাষে ঘাটতি হতে পারে আশঙ্কা করছে নবান্ন ৷ এই পরিস্থিতিতে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে সেচ দফতরকে (Irrigation Department) ৷

bengal-government-is-worried-about-aman-cultivation-due-to-lack-of-rain
Rain: বৃষ্টির ঘাটতিতে আমন চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন নবান্ন, সেচ দফতরকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ

কলকাতা, 12 জুলাই : আষাঢ় শেষের দিকে অথচ এখনও পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই দক্ষিণবঙ্গে (Rain in South Bengal Districts) । যেটুকু বৃষ্টি হচ্ছে তাতে ধান চাষের জন্য পর্যাপ্ত জলটুকু মিলছে না । আর এতেই সিঁদুরের মেঘ দেখছে নবান্ন । রাজ্যের কৃষি দফতর মনে করছে যে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা এভাবেই চললে আমন ধানের মরশুম বড় ধাক্কা খাবে । বিভিন্ন জেলা থেকে দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে নবান্ন দেখেছে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে 47 শতাংশ । এখনই ভালো বৃষ্টিপাত না হলে ফল ভুগতে হবে বাংলার চাষিদের ।

এমনিতেই চালের ঊর্ধ্বমুখী দর চিন্তা বাড়াচ্ছে গৃহস্থের । কিন্তু বর্ষায় ঠিকমতো বৃষ্টি না হলে এই দাম আরও বাড়বে । এই মুহূর্তে এখনই সাধারণ মিনিকেট চালের দাম 48 থেকে 50 টাকা কেজি ছুঁয়েছে । ফলে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ধান চাষের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল । কৃষি দফতরের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে সবথেকে বৃষ্টির ঘাটতি বেশি রয়েছে মুর্শিদাবাদে । এরপরেই সবচেয়ে বেশি ঘাটতি রয়েছে বীরভূম এবং নদীয়া জেলায় ।

এ বছর উত্তরবঙ্গে ভালোই বৃষ্টিপাত হয়েছে । অতিবৃষ্টির কারণে কোথাও কোথাও বন্যার মতো অবস্থা হয়েছিল । উত্তরবঙ্গের রাজ্য হলেও মালদায় এ বছর বৃষ্টিপাত সেভাবে হয়নি । আর সে কারণেই এই জেলায় ঘাটতি রাজ্যের মধ্যে সর্বাধিক । নবান্নের দেওয়া তথ্য অনুসারে, উত্তরবঙ্গের মালদায় বৃষ্টিপাতের ঘাটতির পরিমাণ 67 শতাংশ । দক্ষিণবঙ্গের মুর্শিদাবাদে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রয়েছে 65 শতাংশ এবং বীরভূম ও নদীয়াতে ঘাটতির পরিমাণ যথাক্রমে 63 এবং 61 শতাংশ । এই অবস্থায় এই জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি বড় চিন্তার কারণ নবান্নের জন্য । ইতিমধ্যেই আমন ধানের কথা ভেবে সেচ দফতর (Irrigation Department) ও কৃষি দফতরকে (Cultivation Department) সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।

নবান্ন সূত্রে খবর, মালদা জেলার এই মুহূর্তে আমন চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে । কারণ, জেলার খাদ্য ভাণ্ডার বলে পরিচিত গাজোলে ব্লকে এবার 3200 হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয় । দুই সপ্তাহ আগে থেকে বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে । ইতিমধ্যে 2500 হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির কাজ শেষ । বীজতলা তৈরীর 20 দিনের মধ্যে চাষের কাজ শুরু করে দিতে হয় । কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এখনও সেই কাজ করা সম্ভব হয়নি । গাজোলের বেশ কিছু এলাকায় জলের অভাবে মরতে বসেছে বীজতলার ধানের চারা গাছ । বীজতলা কিভাবে বাঁচাবেন সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে কৃষকের ।

জামডাঙ্গা এলাকার কৃষক রাম সরেন জানালেন, বৃষ্টির অভাবে আমন ধান চাষ চরমভাবে মার খাচ্ছে । কমবেশি একই অবস্থা দক্ষিণবঙ্গের রাজ্যগুলির । প্রত্যেক বছর অতিবৃষ্টি বন্যার কারণে ভুগতে হয়, পূর্ব মেদিনীপুরের একটা বিস্তীর্ণ অংশের মানুষকে । এবার কিন্তু উল্টো চিত্র সেখানেও । বৃষ্টির ঘাটতির কারণে সেখানেও এবার বীজতলা তৈরি হলেও চাষাবাদ শুরু করা যায়নি । তবে আগামী কয়েক দিন ভালো বৃষ্টিপাত হলে দেরিতে হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে । এখন দেখার আগামী কয়েক দিন কতটা বৃষ্টিপাত হয় !

প্রসঙ্গত মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, এখনই গেল গেল রব তোলার কারণ নেই । তিনি মনে করছেন, আগামী 3-4 দিনের মধ্যে ভালো বৃষ্টি হলে ধান চাষের যে ক্ষতি হয়েছে তা মিটিয়ে নেওয়া সম্ভব । প্রদীপ মজুমদারের কথায়, ‘‘আমাদের রাজ্যে জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমন ধান বোনা কাজটা হয় । সেই সময়টায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি প্রয়োজন ।’’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে আগাম কথা বলে রেখেছে কৃষি দফতর । সেক্ষেত্রে যদি বৃষ্টিপাত পর্যাপ্ত না হয় যাতে আপৎকালীন সেচ ব্যবহার করে আমন ধানের চাষ করা যেতে পারে তার সব রকম ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে । তিনি আশাবাদী, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভালো বৃষ্টিপাত হলে রাজ্যে আমন ধান চাষে কোন ক্ষতি হবে না ।

আরও পড়ুন : West Bengal Weather Update: বৃষ্টিহীন দক্ষিণ, জুলাইয়ে ভরা বর্ষায় আকাশ শুধুই মেঘলা

কলকাতা, 12 জুলাই : আষাঢ় শেষের দিকে অথচ এখনও পর্যাপ্ত বৃষ্টি নেই দক্ষিণবঙ্গে (Rain in South Bengal Districts) । যেটুকু বৃষ্টি হচ্ছে তাতে ধান চাষের জন্য পর্যাপ্ত জলটুকু মিলছে না । আর এতেই সিঁদুরের মেঘ দেখছে নবান্ন । রাজ্যের কৃষি দফতর মনে করছে যে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা এভাবেই চললে আমন ধানের মরশুম বড় ধাক্কা খাবে । বিভিন্ন জেলা থেকে দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে নবান্ন দেখেছে এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে 47 শতাংশ । এখনই ভালো বৃষ্টিপাত না হলে ফল ভুগতে হবে বাংলার চাষিদের ।

এমনিতেই চালের ঊর্ধ্বমুখী দর চিন্তা বাড়াচ্ছে গৃহস্থের । কিন্তু বর্ষায় ঠিকমতো বৃষ্টি না হলে এই দাম আরও বাড়বে । এই মুহূর্তে এখনই সাধারণ মিনিকেট চালের দাম 48 থেকে 50 টাকা কেজি ছুঁয়েছে । ফলে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে ধান চাষের ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল । কৃষি দফতরের দেওয়া তথ্য অনুসারে, এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির মধ্যে সবথেকে বৃষ্টির ঘাটতি বেশি রয়েছে মুর্শিদাবাদে । এরপরেই সবচেয়ে বেশি ঘাটতি রয়েছে বীরভূম এবং নদীয়া জেলায় ।

এ বছর উত্তরবঙ্গে ভালোই বৃষ্টিপাত হয়েছে । অতিবৃষ্টির কারণে কোথাও কোথাও বন্যার মতো অবস্থা হয়েছিল । উত্তরবঙ্গের রাজ্য হলেও মালদায় এ বছর বৃষ্টিপাত সেভাবে হয়নি । আর সে কারণেই এই জেলায় ঘাটতি রাজ্যের মধ্যে সর্বাধিক । নবান্নের দেওয়া তথ্য অনুসারে, উত্তরবঙ্গের মালদায় বৃষ্টিপাতের ঘাটতির পরিমাণ 67 শতাংশ । দক্ষিণবঙ্গের মুর্শিদাবাদে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রয়েছে 65 শতাংশ এবং বীরভূম ও নদীয়াতে ঘাটতির পরিমাণ যথাক্রমে 63 এবং 61 শতাংশ । এই অবস্থায় এই জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি বড় চিন্তার কারণ নবান্নের জন্য । ইতিমধ্যেই আমন ধানের কথা ভেবে সেচ দফতর (Irrigation Department) ও কৃষি দফতরকে (Cultivation Department) সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।

নবান্ন সূত্রে খবর, মালদা জেলার এই মুহূর্তে আমন চাষে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে । কারণ, জেলার খাদ্য ভাণ্ডার বলে পরিচিত গাজোলে ব্লকে এবার 3200 হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয় । দুই সপ্তাহ আগে থেকে বীজতলা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে । ইতিমধ্যে 2500 হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরির কাজ শেষ । বীজতলা তৈরীর 20 দিনের মধ্যে চাষের কাজ শুরু করে দিতে হয় । কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এখনও সেই কাজ করা সম্ভব হয়নি । গাজোলের বেশ কিছু এলাকায় জলের অভাবে মরতে বসেছে বীজতলার ধানের চারা গাছ । বীজতলা কিভাবে বাঁচাবেন সেই চিন্তায় ঘুম উড়েছে কৃষকের ।

জামডাঙ্গা এলাকার কৃষক রাম সরেন জানালেন, বৃষ্টির অভাবে আমন ধান চাষ চরমভাবে মার খাচ্ছে । কমবেশি একই অবস্থা দক্ষিণবঙ্গের রাজ্যগুলির । প্রত্যেক বছর অতিবৃষ্টি বন্যার কারণে ভুগতে হয়, পূর্ব মেদিনীপুরের একটা বিস্তীর্ণ অংশের মানুষকে । এবার কিন্তু উল্টো চিত্র সেখানেও । বৃষ্টির ঘাটতির কারণে সেখানেও এবার বীজতলা তৈরি হলেও চাষাবাদ শুরু করা যায়নি । তবে আগামী কয়েক দিন ভালো বৃষ্টিপাত হলে দেরিতে হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে । এখন দেখার আগামী কয়েক দিন কতটা বৃষ্টিপাত হয় !

প্রসঙ্গত মুখ্যমন্ত্রীর কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদার জানিয়েছেন, এখনই গেল গেল রব তোলার কারণ নেই । তিনি মনে করছেন, আগামী 3-4 দিনের মধ্যে ভালো বৃষ্টি হলে ধান চাষের যে ক্ষতি হয়েছে তা মিটিয়ে নেওয়া সম্ভব । প্রদীপ মজুমদারের কথায়, ‘‘আমাদের রাজ্যে জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে আগস্টের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমন ধান বোনা কাজটা হয় । সেই সময়টায় পর্যাপ্ত বৃষ্টি প্রয়োজন ।’’

তিনি আরও জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই এই বিষয়টি নিয়ে সেচ দফতরের সঙ্গে আগাম কথা বলে রেখেছে কৃষি দফতর । সেক্ষেত্রে যদি বৃষ্টিপাত পর্যাপ্ত না হয় যাতে আপৎকালীন সেচ ব্যবহার করে আমন ধানের চাষ করা যেতে পারে তার সব রকম ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে । তিনি আশাবাদী, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে ভালো বৃষ্টিপাত হলে রাজ্যে আমন ধান চাষে কোন ক্ষতি হবে না ।

আরও পড়ুন : West Bengal Weather Update: বৃষ্টিহীন দক্ষিণ, জুলাইয়ে ভরা বর্ষায় আকাশ শুধুই মেঘলা

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.