কলকাতা 23 মার্চ: দেশে করোনা সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ দেখা দিয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে সুরক্ষাবিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বড় বড় মিছিল ও জনসভা করছে সব রাজনৈতিক দল ৷ আর এ নিয়ে কার্যত উদাসীন নির্বাচন কমিশন ৷ এই অভিযোগে এবার জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে ৷
নির্বাচনের সময় গোটা রাজ্যে বড় বড় র্যালি হচ্ছে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল অবাধে জনসভা ও মিছিলে জমায়েত করছে । এ ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ উদাসীন । এমনকি রাজ্যের চিকিৎসকরাও এ ব্যাপারে চিঠি লিখে নির্বাচন কমিশনারকে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজিও জানিয়েছিলেন ৷ কিন্তু নির্বাচন কমিশন বিষয়টিতে বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকারের এই উদাসীনতার বিরুদ্ধেই কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন এক ব্যক্তি ৷
মামলাকারীর মূল বক্তব্য করোনা অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে ৷ নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিনি ৷ কিন্তু নির্বাচন কমিশন বিষয়টিকে পাত্তাই দিচ্ছে না ৷ যেভাবে বেপরোয়া হয়ে লোকজন সব নির্বাচনী প্রচার সভায় অংশ নিচ্ছে, তাতে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে । মামলাকারীর তরফে আইনজীবী শমীক বাগচী এবং নুর ইসলাম শেখ আদালতে জানান, ভ্যাকসিন আবিষ্কার হয়েছে ঠিকই ৷ কিন্তু ভ্যাকসিন নেওয়ার পর 28 দিন অন্তত সময় দিতে হয় যাতে শরীরের মধ্যে তা প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তুলতে পারে । এমনকি তারপর ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় জোড় নিতে হয় ৷ কিন্তু বহু ভোটকর্মী জানিয়েছেন, তাঁরা টিকা নেওয়ার পর 28 দিনের সময় পাচ্ছেন না ৷ তার আগেই প্রথম দফায় নির্বাচন করতে যেতে হবে তাঁদের । ফলে ভোট কর্মী এবং ভোট দিতে আসা মানুষের সুরক্ষার কী হবে ? তাদের সুরক্ষার ব্যাপারে নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য কিছু ভেবেছে?
আরও পড়ুন : পরিস্থিতি এখনও উদ্বেগজনক, করোনা পরীক্ষা বাড়ানোর দাবি চিকিৎসকদের
দুই আইনজীবী এও প্রশ্ন তুলেছেন যে, সিনিয়র সিটিজ়েনরা এই পরিস্থিতিতে কীভাবে ভোট দিতে যাবেন? যে চিকিৎসকরা এই অতি মারি পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষকে বাঁচাল, তাঁদের উদ্বেগকে বিন্দুমাত্র গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে আদালতে আজ অভিযোগ করেছে মামলাকারীর আইনজীবীরা ৷ রাজ্যে কয়েক কোটি ভোটারদের সুরক্ষার বিষয় নিয়ে আজ আদালতে সওয়াল করেন তাঁরা ৷
দুর্গাপুজো, কালীপুজো, বড়দিন থেকে শুরু করে গঙ্গাসাগর মেলাতেও ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট । তাই আদালতের কাছে মামলাকারীর আইনজীবীরা আবেদন জানিয়েছেন, রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে ভোট কর্মীদের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে হস্তক্ষেপ করুক আদালত। আগামী 25 অথবা 26 মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি হতে পারে ।