কলকাতা, 19 অক্টোবর : পুজোর মুখে ব্যাঙ্ক পরিষেবায় চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে পারেন গ্রাহকরা৷ এমন আশঙ্কাই তৈরি হয়েছে৷ রাজ্যের প্রধান চারটি ব্যাঙ্ক সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ থেকে তারা অতিরিক্ত সময় ব্যাঙ্কের পরিষেবার জন্য ব্যয় করবে না। নির্দিষ্ট সময় মেনেই পরিষেবা দেওয়া হবে। এতদিন "অফিস আওয়ার্স''-এর বাইরেও ব্যাঙ্কের কাজ করা হত বলে দাবি করেছে অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশন, অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক অফিসার্স কংগ্রেস ও ন্যাশনাল অরগানাইজ়েশন অব ব্যাঙ্ক অফিসার্স। নির্দিষ্ট মউ স্বাক্ষরিত হওয়ার পরও বেতন বৃদ্ধি না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গ শাখার সম্পাদক সঞ্জয় দাস।
জানা গিয়েছে, ব্যাঙ্কারদের বেতন চুক্তি গত সাড়ে তিন বছর ধরে অমীমাংসিত অবস্থায় পড়ে ছিল। সরকারের অনমনীয় মনোভাব এবং বিভিন্ন টালবাহানার জেরে বেতন বৃদ্ধি হয়নি ব্যাঙ্ক কর্মচারী এবং অফিসারদের। এর মধ্যেই গত ছ'মাস ধরে কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ দিন কর্মচারীরা অপেক্ষা করেছেন বেতন বৃদ্ধির জন্য। 2017 সালের 1 নভেম্বর বেতন বৃদ্ধির চুক্তি হওয়ার পরেও দীর্ঘ দিন তাঁদের বেতন বৃদ্ধি হয়নি। 22 জুলাই মউ স্বাক্ষরিত হয়। ব্যাঙ্ক কর্মচারীরা মনে করেছিলেন দীর্ঘ দিন বাদে তাঁদের দাবি মেনে নেবে IBA। কিন্তু সেই চুক্তি সম্পাদনের বিষয়টিতে ছেদ পড়েছে বলে মত ব্যাঙ্ক ইউনিয়নের নেতা অশোক মুখোপাধ্যায়ের। একটা সময় সদর্থক ভূমিকা দেখা গিয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। 7 হাজার 898 কোটি টাকা বণ্টনের সিদ্ধান্ত হয়েও গিয়েছিল। অন্যদিকে অফিসারদের মধ্যে বণ্টন করার জন্য বরাদ্দ হয়েছিল 4513 কোটি টাকা। শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ চলতি মাসের 12 তারিখ পর্যন্ত সদর্থক আলোচনার পর গত শুক্রবার সমগ্ৰ প্রক্রিয়ায় ছেদ পড়ে। ব্যাঙ্ক কর্মী ইউনিয়নের নেতা অশোক মুখোপাধ্যায় জানান, অবিলম্বে ব্যাঙ্ক অফিসার এবং কর্মচারীদের যথাযথ বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সরকারি প্রকল্পের বিভিন্ন কাজ ব্যাঙ্কের মাধ্যমেই সম্পাদিত হয়। তাই অফিসার এবং কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করাও জরুরি।
অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক বা পশ্চিমবঙ্গ শাখার সম্পাদক সঞ্জয় দাস জানান, চারটি অফিসার সংগঠন সিদ্ধান্ত নিয়েছে আজ থেকে রাজ্যের সব ব্যাঙ্কের শাখায় গ্রাহক পরিষেবায় প্রভাব পড়বে। ব্যাঙ্কের সঙ্গে অতিরিক্ত সহযোগিতা করবেন না কর্মচারী এবং অফিসাররা। দীর্ঘদিন ধরে ব্যাঙ্ক কর্মচারীরা জরুরি অবস্থার মধ্যেও পরিষেবা দিয়ে চলেছেন৷ কিন্তু তাঁদের বেতন বৃদ্ধির দিকে কেউ নজর দেয়নি। এবার সহ্যের সীমা ভেঙেছে, ফলে বৃহত্তর আন্দোলনের পথেই যাবেন ব্যাঙ্ক কর্মচারী ও অফিসাররা৷