কলকাতা, 10 অগস্ট: রাজ্য সরকারের উপর সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দিতে গিয়ে এ বার চাপ বাড়তে চলেছে কোষাগারে (Govt worried over paying DA)। একেই অর্থের টানাটানি ৷ কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আটকে দিয়েছে (Bengal government)। করোনা পরবর্তী সময়ে রাজস্ব আদায়ও চলছে ধীরগতিতে । এমতাবস্থায় 34 শতাংশ হারে ডিএ (Dearness Allowance) দিতে গেলে যে বিপুল পরিমাণ অর্থের সংস্থান প্রয়োজন তা আসবে কোথা থেকে ?
এ রাজ্যের সরকারি কর্মীদেরও কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দিতে হবে রাজ্যকে ৷ এই নির্দেশ দিয়েছিল স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (SAT)। এর জন্য মাত্র 3 মাসের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল তারা । সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার আগে হাতে রয়েছে আর মাত্র 10 দিন । কেন্দ্রীয় হারে অর্থাৎ 34 শতাংশ হারে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের ডিএ দিতে গেলে এই মুহূর্তে সরকারের প্রয়োজন 23 হাজার কোটি টাকা । সূত্রের খবর, নবান্নের হাতে এই মুহূর্তে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ নেই । প্রশ্ন হল, তাহলে কীভাবে এই ডিএ-র অর্থ মেটাবে রাজ্য সরকার ? প্রশ্ন থাকছেই ।
যতদূর জানা যাচ্ছে বকেয়া ডিএ মেটাতে, আপাতত দুটি বিকল্প রাস্তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে রাজ্য সরকার । রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ মেটানোর জন্য 19 অগস্ট শেষ দিন । তার আগেই নির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্যকে । এ ক্ষেত্রে দুটি বিকল্প উপায় নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে । হয় কিস্তিতে ডিএ পাঠানো হবে, না হলে কর্মীদের পিএফের টাকার সঙ্গে বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেওয়া হবে । অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের ডিএ দেওয়া হবে নগদে ।
প্রসঙ্গত, সপ্তম বেতন কমিশনের আওতায় ডিএ বাড়ানোর প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা । আগে 31 শতাংশ ডিএ পেতেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী, এখন তা বেড়ে হয়েছে 34 শতাংশ । এর আগে, 2021 সালের জুলাই মাসে আবার মহার্ঘ ভাতা (DA) এবং ডিয়ারনেস রিলিফ 17 শতাংশ থেকে বাড়িয়ে 28 শতাংশ করা হয়েছিল । সে বছরেরই অক্টোবর মাসে ফের বাড়ানো হয় ডিএ-র পরিমাণ । মোটের উপর যত সময় যাচ্ছে, মহার্ঘ ভাতা নিয়ে রাজ্য সরকারের উপর ক্রমেই চাপ বাড়ছে ।
আরও পড়ুন: 14 লক্ষ সরকারি কর্মচারীর বকেয়া ডিএ মেটাতে হবে রাজ্যকে
যতদূর জানা যাচ্ছে, মহার্ঘ ভাতা নিয়ে বর্তমান পরিস্থিতিতেও রাজ্য সরকারের পাশেই থাকছে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকারি কর্মচারী ফেডারেশন । এই সংগঠনের তরফ থেকে রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এবং অর্থসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে, এ ক্ষেত্রে সরকার যে পদক্ষেপ করবে তার পাশেই রয়েছেন সরকারি কর্মচারীরা ।
এ দিন এই নিয়ে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "সরকারি কর্মচারীরা সরকারের বিরুদ্ধে, সাধারণ মানুষের এমন ভাবনা ভুল । সরকার যদি কর্মচারীদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে ইতিবাচক অবস্থান নেয়, তাহলে অবশ্যই সরকারি কর্মচারীরাও সরকারের পাশেই থাকে । এ ক্ষেত্রে সরকারের জন্য একলপ্তে এতগুলি টাকা দেওয়া খুবই কষ্টকর, সরকারি কর্মচারীরাও তা বোঝে । আর সে কারণেই তাঁদের সহযোগিতা সরকার পাবে ।"