কলকাতা, 2 অগস্ট: পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat polls) আগে সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজে জোর দিল নবান্ন (Nabanna)। প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে কয়েকদিন আগেই পঞ্চায়েত নির্বাচন এগিয়ে আসার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এরপর গতকাল রাজ্যের মানচিত্রে যুক্ত হয়েছে সাতটি নতুন জেলা । এই অবস্থাতেই এখনই পঞ্চায়েত নির্বাচন করা বেশ অসুবিধার । আর সে কারণেই নির্বাচনের আগে সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজ শুরু করতে চায় রাজ্য সরকার । নবান্ন সূত্র থেকে এও জানা গিয়েছে, এই সীমানা পুনর্বিন্যাসের সময়েই আসন সংরক্ষণের কাজটাও সেরে ফেলতে চাইছে রাজ্য সরকার ।
সরকারি নীতি অনুসারে প্রত্যেক 10 বছর অন্তর রাজ্যে সীমানা পুনর্বিন্যাস (Delimitation work) এবং আসন সংরক্ষণের কাজ হয় । সেইমতো বিচার করলে 2012 সালের পর এ বছর সীমানা পুনর্বিন্যাস হওয়ার কথা । সেই মতো এ বার দ্রুতগতিতে এই কাজ করতে চায় রাজ্য সরকার । নবান্ন সূত্রে খবর, প্রখর গ্রীষ্মে ভোট চান না রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বরং তিনি চান অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা আবহাওয়ায় অর্থাৎ শীতে ভোট হোক । এ ক্ষেত্রে মমতার লক্ষ্য ডিসেম্বর বা জানুয়ারিতে ভোট । কারণ এরপরে পিছলেই আবার মার্চ-এপ্রিলে রয়েছে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা । ফলে তার আগেই নির্বাচনের যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ করতে চায় রাজ্য সরকার । কিন্তু এ বছর দুর্গাপুজো নিয়েও বাড়তি প্রস্তুতি নিতে হবে রাজ্যকে । ইউনেস্কোর স্বীকৃতির পর রাজ্যে ছোট-বড় নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রায় একমাস যাবত এই পুজোর উদযাপন করতে চায় রাজ্য । কিন্তু নবান্ন চাইছে এ সবের আগেই সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজটা সম্পন্ন হয়ে যাক ।তাতেও যা খবর, চলতি মাসের শেষে এই কাজ শুরু করলে শেষ হতে হতে নভেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যাবে ।
আরও পড়ুন: বিজ্ঞাপনে মিডিয়া নির্ভরতা কমাতে ডিসপ্লে স্ক্রিনে উন্নয়নের প্রচারে উদ্য়োগী মমতার সরকার
সাধারণত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ তিন স্তরেই এই সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজ হয় । পঞ্চায়েত স্তরে এই কাজ করেন ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসার বা বিডিও । পঞ্চায়েত সমিতির ক্ষেত্রে কাজ করেন মহাকুমাশাসক এবং জেলাস্তরে সামগ্রিকভাবে এলাকা পুনর্বিন্যাসের দায়িত্বে থাকেন জেলাশাসক নিজেই । কাজেই সামগ্রিক ভাবে গোটা প্রক্রিয়াটিকে যত সহজ মনে হচ্ছে ততটা সহজ নয় । গত 10 বছরে বেশকিছু পঞ্চায়েত এলাকা পৌরসভার মধ্যে সংযুক্ত হয়েছে । কয়েকটি পঞ্চায়েতকে আবার পৌরসভায় রূপান্তরিত করা হয়েছে । এই সমস্ত সংযোজন ও বিয়োজনের কাজ সামগ্রিক ভাবে করে তবেই এই সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজ হয় । সে সব ঝক্কির কথা মাথায় রেখেই রাজ্য প্রশাসনের তরফ থেকে এই কাজ সম্পাদনের জন্য নভেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত সময় ধরে রাখা হয়েছে । আর এ ক্ষেত্রে নভেম্বরের মাঝামাঝি এই কাজ সম্পন্ন হলে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে পঞ্চায়েত ভোট করতে কোনও অসুবিধা থাকার কথা নয় । অতএব পঞ্চায়েত ভোট এগিয়ে আসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, সেপ্টেম্বর থেকে সীমানা পুনর্বিন্যাসের কাজ শুরু করায় তাও কার্যত মিলে যাচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ।