কলকাতা, 30 অক্টোবর : রিস্কোমিটার । এই অ্যাপ-ই বলে দেবে কার ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি কতটা রয়েছে । বাংলা, ইংরেজিসহ বিশ্বের 14টি ভাষায় চালু রয়েছে এই অ্যাপ । স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য এই অ্যাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা ।
স্ট্রোক মস্তিষ্কের অসুখ । যে সব কারণে স্ট্রোক হতে পারে, সে সবের মধ্যে অন্যতম হিসাবে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপের বিষয়টি । স্ট্রোক থেকে যাতে দূরে থাকা সম্ভব হয়, তার জন্য প্রতিরোধের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কারণ হিসাবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, 90 শতাংশ ক্ষেত্রে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব । ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক ডে-তেও প্রতিরোধের উপর জোর দেওয়া হয়েছে । এই প্রতিরোধের অঙ্গ হিসাবে, এই অ্যাপটিকেও এবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে । কারণ, পরিস্থিতি এখন যে অবস্থায় পৌঁছে গেছে, তাতে প্রতি চারজন মানুষের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাচ্ছে ।
স্ট্রোক ফাউন্ডেশন অফ বেঙ্গলের ফাউন্ডিং প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক দীপেশকুমার মণ্ডল বলেন, "স্ট্রোকের জন্য যে 10টি কারণের কথা বলা হয়েছে, সেগুলি সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ধারণা বিক্ষিপ্তভাবে রয়েছে । এগুলি একত্রিত থাকলে সুবিধা হয় । এই জন্য, যে সব কারণে স্ট্রোক হতে পারে, সেগুলি প্রশ্ন-উত্তরের আকারে এই অ্যাপে দেওয়া হয়েছে ।" তিনি বলেন, "অ্যাপটির ব্যবহারকারীরা এসব প্রশ্নের উত্তর দেবেন । ওই উত্তরের উপর ভিত্তি করে এই অ্যাপটি মূল্যায়ন করে বলে দেবে কার ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি কতটা রয়েছে ।"
বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক বলেন, "এই অ্যাপের সুবিধা, সাধারণ মানুষ দেখতে পাচ্ছেন রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো মূল্যায়ন করে বলে দিচ্ছে তাঁর ক্ষেত্রে স্ট্রোকের ঝুঁকি কতটা রয়েছে ।"
তবে, শুধুমাত্র মূল্যায়নের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর স্ট্রোকের ঝুঁকির কথা বলে দেওয়ার বিষয়টি নয় । এই অ্যাপের মাধ্যমে সমীক্ষাও চালানো হচ্ছে । ওই প্রশ্ন উত্তরের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে যেসব তথ্য পাওয়া যাবে, আগামী দিনে সেসব তথ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে । স্ট্রোক ফাউন্ডেশন অফ বেঙ্গলের ফাউন্ডিং প্রেসিডেন্ট বলেন, "এর ফলে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে স্ট্রোক সম্পর্কে আমরা নতুন ধরনের তথ্য পেয়ে যাব ।" বিনামূল্যে এই অ্যাপ ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে ।
মস্তিষ্কে হঠাৎ রক্ত চলাচলে ব্যাঘাত ঘটলে স্ট্রোক হয় । স্ট্রোক দুই প্রকারের । ইসকিমিক স্ট্রোক বা সেরিব্রাল থ্রম্বোসিস এবং হেমারেজিক স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ । মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীতে রক্ত জমে যাওয়াকে বলে ইসকিমিক স্ট্রোক । আর, মস্তিষ্কের রক্তবাহী ধমনীর দেওয়াল ছিঁড়ে যাওয়াকে বলে হেমারেজিক স্ট্রোক । স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে লক্ষণগুলি কী? হঠাৎ শরীরের একদিক দুর্বল বা অবশ হয়ে যেতে পারে । হঠাৎ কথা বলতে বা বুঝতে না পারার সমস্যা দেখা দিতে পারে । হঠাৎ একদিকের চোখে দেখতে অসুবিধা হওয়া বা দুটো জিনিস দেখার সমস্যা । হঠাৎ মাথা ঘোরা, হাঁটতে অসুবিধা হওয়া বা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলার সমস্যা । হঠাৎ অত্যধিক মাথাব্যথা, বমি বা অজ্ঞান হওয়ার সমস্যা দেখা দেয় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ক্ষেত্রে ।