কলকাতা, 17 সেপ্টেম্বর: বাগুইআটিতে দুই ছাত্রের অপহরণ এবং পরে ঠান্ডা মাথায় খুনের ঘটনায় (Baguiati Double Murder) তদন্তে নেমে ইতিমধ্যেই মূল অভিযুক্তকে আগেই গ্রেফতার করেছিল বিধাননগর কমিশনারেটর গোয়েন্দারা । যদিও এই ঘটনার তদন্তভার চলে যায় রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডির হাতে । এরপরই দিল্লি থেকে এই ঘটনায় অন্য এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল সিআইডি (Another accused arrested from Delhi by CID) । ধৃতের নাম কানহাই কুমার ।
সিআইডি সূত্রের খবর, এই ঘটনায় যে লাল রঙের গাড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল সেটি ভাড়া করেছিল ওই যুবক । ঘটনার দিন যুবক গাড়ির চালাচ্ছিল । তাকে ইতিমধ্যেই ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসছে সিআইডির বিশেষ দল ।
এদিকে বাগুইআটি জোড়া খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে আসার কিছুদিন পর পুলিশের উচ্চপর্যায়ে কিছু রদবদল হয়েছে । বিধাননগর কমিশনারেটের তৎকালীন নগরপাল সুপ্রতিম সরকারকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় আনা হয়েছে গৌরব শর্মাকে । পাশাপাশি বাগুইআটি থানার প্রাক্তন ওসি কল্লোল ঘোষ এবং এই ঘটনার প্রাক্তন আইও প্রীতম সিংকে সাসপেন্ড করা হয়েছে । বাগুইআটি জোড়া খুনের ঘটনায় বসিরহাট জেলা পুলিশ এবং বিধাননগর কমিশনারেটের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল মনে করেছিল রাজ্য প্রশাসনের একটা বড় অংশ ।
এই ঘটনায় বেজায় ক্ষুব্ধ হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তিনি কার্যত একটি সভামঞ্চ থেকে দাঁড়িয়ে রাজ্য পুলিশের ডিজিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বাগুইআটি জোড়া খুন কাণ্ডে যেন নিরপেক্ষভাবে তদন্ত হয় । পাশাপাশি গোটা তদন্তভার রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগকে দিয়ে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন মমতা ।
প্রসঙ্গত, বাগুইআটিতে অপহৃত দুই স্কুল ছাত্রকে খুনের ঘটনার পরপরই চার সুপারি কিলার অভিজিৎ বসু, শামিম আলি, সাহিল মোল্লা ও দিব্যেন্দু দাসকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ । কিন্তু, জোড়া খুনের মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে কিছুতেই গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছিল না । মোবাইলের সিম বদলে নিজের আস্তানা পরিবর্তন করছিলেন তিনি । যার ফলে তাঁর নাগাল পেতে গিয়ে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হচ্ছিল তদন্তকারী অফিসারদের ।
আরও পড়ুন : আধঘণ্টার জন্য ফোন অন করাতেই সত্যেন্দ্রর হদিশ পেল পুলিশ
শেষমেশ এক আত্মীয়কে ফোন করে টাকা চাইতেই সত্যেন্দ্রর আস্তানার হদিশ পেয়ে যান তাঁরা । হাওড়া স্টেশন (Howrah Station) চত্বরে পা দিতেই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান তিনি । তাঁকে জেরা করে জোড়া খুনের রহস্য ভেদ করতে মরিয়া সিআইডির আধিকারিকরা । পরে তাঁকে বারাসত আদালতে পেশ করা হয় ৷ আদালত তাঁকে 14 দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে বাগুইআটির দুই ছাত্রকে খুনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে ৷ ওইদিন নিহত দুই ছাত্রের পরিবার ও এলাকার বাসিন্দারা অভিযুক্তের বাড়িতে ভাঙচুর চালায় ৷ পুলিশের বিরুদ্ধেও উদাসীনতার অভিযোগ তোলা হয় ৷ পরিবারের দাবি, অগস্টের মাঝামাঝি নিখোঁজ হয়ে যায় অতনু দে ও অভিষেক নস্কর নামে ওই দুই ছাত্র ৷
আরও পড়ুন : 14 দিনের সিআইডি হেফাজতে বাগুইআটি কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র
বাগুইআটি থানায় অভিযোগ জানানোর পর প্রায় 15 দিন পর জানা যায় যে বসিরহাট হাসপাতালের মর্গে রয়েছে অতনু ও অভিষেকের দেহ ৷ দশদিন আগেই দেহ উদ্ধার হয়েছিল, কিন্তু পুলিশি সমন্বয়তার অভাবে পরিবারের কাছে খবর আসেনি ৷ তখনই পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়ায় এলাকায় ৷