কলকাতা, ৬ মার্চ : ভোটের বাজার মাত করতে এবার আসরে নামতে চলেছেন গুটি পিসি। নতুন এক সহজপাঠের মাধ্যমে বিশেষভাবে সক্ষম এবং সাধারণ মানুষকে দেবেন ভোটের পাঠ। সহজ কথায়। মাটির গানে। মুর্শিদাবাদ জেলায় তৈরি প্রযুক্তিকে এবার সারা রাজ্যে ব্যবহার করতে চাইছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর। যে সহজ পাঠ শুনলে বা দেখলে একজন দৃষ্টিহীন বা শারীরিকভাবে অক্ষম কেউ খুব সহজেই নিজের বুথে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন।
সমস্যাটা ছিল গভীরে। পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারার অক্ষমতা। অথচ আর পাঁচজন সুস্থ মানুষের মত ওরাও বোঝে সব। পরিবার-পরিজন, সমাজ নিয়ে ভাবে ওরা। তবু সমাজের কারও কারও কাছে অপাংতেয়। কেউ আবার ছুঁড়ে দেয় শুধুই তাচ্ছিল্য। ওরা বিশেষভাবে সক্ষম। ভোটাধিকার ওদের অনেকের কাছেই ছিল দূরগ্রহের বস্তু। অনেকের ভোটার তালিকায় নাম ছিল না। অনেকের নাম থাকলেও বুথে যায় না ভোট দিতে। এই ব্যাপারটাই এবার ভাঙতে চেয়েছে নির্বাচন কমিশন। নেওয়া হয়েছে নানা বিশেষ পরিকল্পনা। তারই অংশ এই গুটি পিসির সহজপাঠ।
বিশেষভাবে সক্ষমদের ভোটদান কক্ষে আনতে এবার কমিশন প্রচারে নামছে। মুর্শিদাবাদ জেলা এমন এক প্রযুক্তি তৈরি করেছে, যার মাধ্যমে একজন বিশেষভাবে সক্ষম মানুষ অনায়াসেই ভোট দিতে পারবেন নিজের বুথে গিয়ে। সেই প্রযুক্তিতে রাখা হয়েছে এক ম্যাস্কট। তারই নাম দেওয়া হয়েছে গুটি পিসি। এই প্রযুক্তির ব্যবহারিক প্রয়োগ হল গুটি পিসির সহজপাঠ। সেই গুটি পিসিই এবার গুটিগুটি পায়ে বিশেষভাবে সক্ষমদের ভোটকক্ষে ভোট দিতে নিয়ে যাবে বলে বিশ্বাস রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দপ্তরের। তার কারণ, একজন দৃষ্টিহীন মানুষ বা শারীরিকভাবে অক্ষম মানুষ বুথে প্রবেশ করার পর থেকে কীভাবে ভোট দেবেন ও বেরিয়ে যাবেন তা সম্পূর্ণভাবে একটি স্বয়ংক্রিয় ম্যাটের মাধ্যমে করা আছে। মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এই প্রযুক্তিটিকে বানানোর পর অত্যন্ত খুশি হয়েছেন এবং ঠিক করেছেন শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদ জেলাই নয়, রাজ্যের সব জেলাতেই এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করবেন। প্রত্যেক জেলার এক বা দুই জায়গায় বিশেষভাবে সক্ষমদের দেওয়া হবে এই বিশেষ প্রশিক্ষণ। যার মাধ্যমে ওরা নিজেরাই খুব সহজে শিখে নিতে পারবেন কীভাবে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে।