কলকাতা, 6 অক্টোবর : দুই বাসের রেষারেষিতে এক লহমায় শেষ একটা তরতাজা প্রাণ ৷ আর তার সঙ্গেই ‘অপমৃত্যু’ একরাশ অনুভূতি, অপূর্ণ থেকে যাওয়া ইচ্ছের ৷
বুধবার, বিজয়া দশমীর রাতে (Bijoya Dashami Night) শিয়ালদার বিদ্যাপতি সেতুতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার (Kolkata Road Accident) প্রাথমিক অভিঘাত এইটুকুই ৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যা অবশ্যই বাড়বে ৷ বাড়তে বাধ্য !
বুধবার রাতে শিয়ালদা স্টেশন সংলগ্ন ওই সেতুতে দু’টি বাসের রেষারেষিতে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের ৷ তাঁদেরই একজন রাহুল প্রসাদ ৷ পরিজনদের সঙ্গে যিনি শারোদৎসবের (Durga Puja 2022) আনন্দ উপভোগ করতে বেরিয়েছিলেন ৷ বাড়িতে রেখে এসেছিলেন স্ত্রী ও 22 দিনের সন্তানকে৷ সদ্য বাবা হওয়া রাহুলের পিতৃত্বের অনুভূতির অপমৃত্যু ঘটে গেল ওই দুর্ঘটনায় ৷ সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে যে পরিকল্পনাগুলি করে রেখেছিলেন, সেই ইচ্ছেগুলো অপূর্ণ রেখেই প্রাণ হারালেন তিনি ৷
শিয়ালদা (Sealdah) চত্বর দিয়ে যাঁরা নিয়মিত যাতায়াত করেন, তাঁদের বক্তব্য, বাসের রেষারেষি ওই এলাকায় নতুন নয় ৷ প্রায় প্রতিদিনই যাত্রী নেওয়ার জন্য একই রুটের একাধিক বাসকে রেষারেষি করতে দেখা যায় ৷ বুধবার রাতে সেটাই প্রাণঘাতী হয়ে উঠল ৷ পুলিশ ইতিমধ্যে দুই বাসের চালককে গ্রেফতার করেছে ৷ তার পরও প্রশ্ন উঠেছে, এই ধরনের দুর্ঘটনা কি আগামিদিনে একেবারে বন্ধ করা যাবে ?
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ওই এলাকা প্রায় সারাক্ষণ জনবহুল থাকে ৷ গাড়ি থাকেও অনেক ৷ সবসময় নজরদারি চালানো হয় ৷ তার পরও মাঝেমধ্যে কিছু গাড়ি বেপরোয়া হয়ে ওঠে ৷ কিন্তু নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, পুলিশি নজরদারির অভাবেই এই ঘটনা ঘটেছে ৷
অভিযোগ, পালটা অভিযোগ, যাই হোক না কেন, বাস্তব হল রাহুল প্রসাদের 22 দিনের সন্তান তাঁর বাবাকে হারিয়েছে ৷ জ্ঞান হওয়ার পর ছবিতে ছাড়া বাবাকে দেখার কোনও উপায় থাকবে না তার কাছে ৷ পিতার স্নেহ ছাড়াই বেড়ে উঠতে হবে তাকে ৷
তাই রাহুলের সদ্যোজাত সন্তানের ভবিষ্যৎ নষ্টের দায় কার ঘাড়ে বর্তাবে, আপাতত প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে সেই প্রশ্নই ৷
আরও পড়ুন : দশমীর রাতে খাস কলকাতায় বাসের রেষারেষির বলি 3