কলকাতা 27 নভেম্বর : 2014 সালের প্রশ্ন ভুল মামলায় আবেদনকারী প্রার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে তাতে আবেদন করার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্টের। আজ বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য এই নির্দেশ দেন৷ মামলার শুনানিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে আইনজীবী সুবীর সান্যাল জানান, "23 নভেম্বর আমরা যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছি তাতে প্রার্থীদের নথিপত্র যাচাই করার জন্যই বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এটার মানে এই নয় যে এখনই চূড়ান্ত নিয়োগ করা হচ্ছে।"
মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী পার্থসারথি ভট্টাচার্য ও আইনজীবী আলি আহসান আলমগীর জানান, আমাদের বেশ কয়েকজন প্রার্থীকে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ মত নম্বর দেওয়া হয়নি। ফলে আমাদের প্রার্থীরা 2014 সালের টেট পরীক্ষায় পাশ করতে পারেনি। বিচারপতির নির্দেশ মতো যদি ঠিকঠাক নম্বর দেওয়া হতো তাহলে আমাদের মক্কেল টেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে যেত। এই পরিস্থিতিতে আমরা কিভাবে আবেদন করব ? অনলাইনে আবেদন হচ্ছে কিন্তু অনলাইনে বহু আবেদন বাতিল করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের মামলাটি এখনও বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের বেঞ্চে বিচারাধীন রয়েছে।"
এরপরই প্রাইমারি শিক্ষা পর্ষদকে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন অনলাইনে না হলেও অফলাইনে মামলাকারী প্রার্থীদের আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে। এদের আবেদন গ্রহণ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। আগামী 4 ডিসেম্বর আবার মামলাটি শুনানির জন্য রেখেছেন বিচারপতি। এই প্রার্থীরা আবেদন করতে পারল কি না ওই দিন জানাতে হবে আদালতকে।
মূল বিষয়টি হচ্ছে 2018 সালের তিন অক্টোবর বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় নির্দেশ দেন 2014 সালের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী 2015 সালের টেট পরীক্ষা হয়েছিল। তাতে ছটি প্রশ্নের উত্তর ভুল রয়েছে। তার জন্য যে সমস্ত প্রার্থী উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তাদের প্রত্যেককে নম্বর দিতে হবে। এবং যোগ্য বিবেচিত হলে সমস্ত নিয়ম মেনে চাকরিতে নিয়োগ দিতে হবে৷ সমস্ত প্রার্থীদেরকে তিন মাসের মধ্যে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। কয়েকশো চাকরিপ্রার্থী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। এরপর মামলা গড়ায় ডিভিশন বেঞ্চে। সেখান থেকে সুপ্রিম কোর্ট। আবার মামলাটি ফেরত আসে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে।
হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানায় সিঙ্গেল বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছিল সেটার উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে না। খারিজ হয়ে যায় রাজ্যের আবেদন। একাধিক প্রার্থী সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানান প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তাদের নির্দেশ মানছে না বলে। তাতেই অত্যন্ত ক্ষুব্ধ বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সচিবের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছিলেন। সশরীরে প্রাথমিক শিক্ষা সচিবকে গত বছর 19 সেপ্টেম্বর তলব করেছিলেন তিনি। সচিব হাইকোর্টে আসে জানিয়েছিলেন উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকা তৈরির কাজ চলছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই সমস্ত প্রার্থীরা নিয়োগপত্র পাইনি। তাদেরই মধ্যে থেকে বেশ কয়েকজন প্রার্থী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন 23 নভেম্বরের বিজ্ঞপ্তির পরে। সেই মামলাতেই আজ বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য নির্দেশ দিলেন এই সমস্ত প্রার্থীদেরকে চলতি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আবেদন করার সুযোগ দিতে হবে।