কলকাতা, 23 জুন: কোভিড বিধিনিষেধ উঠলেই ইতালি পালানোর ছক কষেছিল নিউটাউনে (New Town Encounter) মৃত গ্যাংস্টার (Gangster's Death) জয়পাল সিং ভুল্লার ও যশপ্রীত সিং । আর এই বিষয়ে যাবতীয় সাহায্য করার কথা ছিল পাকিস্তানে বসে থাকা এক মাদক পাচারকারীর । মৃত গ্যাংস্টারদের সঙ্গী ভরত কুমার এবং সুমিত কুমারকে জেরা করে এমনই চাঞ্চ্যল্যকর তথ্য হাতে এসেছে তদন্তকারী অফিসারদের । ভরত এবং সুমিত দুজনেই এখন পুলিশি হেফাজতে ।
রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)-এর গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, এই মাদক পাচারকারী আদতে পঞ্জাবের বাসিন্দা । কিন্তু সে পাকিস্তানে গা ঢাকা দিয়ে বসে আছে বলে অনুমান গোয়েন্দাদের । তার নাম হরবিন্দ সিন্ধু হলেও পুলিশের রাফ-রেজিস্টারে মোস্ট ওয়ান্টেডে তালিকায় রিন্ডা নামে লিপিবদ্ধ আছে তার নাম। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এই রিন্ডা একজন আন্তর্দেশীয়ও মাদক পাচারকারী । ইতিমধ্যেই পঞ্জাব পুলিশের হাতে ধৃত ভরত ও সুমিত কুমারকে জেরা করে এই তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা ।
আরও পড়ুন: নিউটাউন এনকাউন্টার কাণ্ডে আটক 3
পঞ্জাব পুলিশের সঙ্গে কথা বলে রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, 2018 সাল থেকেই ফেরার রিন্ডা । সে বছর সে তার প্রেমিকাকে নিয়ে পানাগড়ে আসে । সেখানে একটি হোটেলে ওঠে তারা । গোপন সূত্রের খবর পেয়ে, সেই হোটেলে অভিযান চালায় পুলিশ । সেই সময় রিন্ডার প্রেমিকা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলেও, সংশ্লিষ্ট হোটেলের ব্যালকনি থেকে ঝাঁপ দিয়ে রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় পালিয়ে যায় রিন্ডা । পরে বর্ধমান জেলা পুলিশের সঙ্গে পঞ্জাব পুলিশের একটি দল কথা বলে । সেখান থেকেই জানা যায়, পঞ্জাবের গ্যাংস্টারদের মধ্যে অন্যতম এই রিন্ডা । তার আসল নাম, হরবিন্দ সিন্ধু । জানা গিয়েছে, এই হরবিন্দ সিন্ধু পঞ্জাবে থাকাকালীন ধীরে ধীরে খালিস্থানিদের সঙ্গে কাজ করা শুরু করে দেয় । একাধিক দেশে মাদক পাচার করতে থাকে সে এবং ক্রমেই তার ব্যবসার ভৌগোলিক পরিধি বাড়তে থাকে ।
ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় এক রহস্যময়ী নারীর যোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে । পঞ্জাবের গ্যাংস্টারদের নিয়ন্ত্রণ করত সেই নারী ৷ কলকাতা এবং শহরতলির বিভিন্ন ডান্সবারে নর্তকী জোগানোর কাজে ভরত এবং সুমিতের মূল সহযোগী ছিল সেই মহিলা ।
আরও পড়ুন: ধৃত ভরত ও সুমিতকে জেরা করতে পঞ্জাব যাচ্ছেন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা
জানা গিয়েছে, পঞ্জাবে বসে কোন পানশালায় কোন বার ডান্সার নিযুক্ত হবে, পাশাপাশি কোন বার ডান্সার কোন শহরে কতদিন কাজ করবে, তা ঠিক হত একজন মহিলার কথায় । রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, সেই মহিলা ধৃত ভরত ও সুমিত কুমারের খুব ঘনিষ্ঠ । তদন্তে জানা গিয়েছে, ভরত ও সুমিত ওই মহিলার সঙ্গে দক্ষিণ কলকাতায় একাধিক সময়ে এসে উঠেছে । তবে কে এই মহিলা ? তা নিয়ে মুখ খুলতে চাননি এসটিএফের গোয়েন্দারা । তাহলে কি মৃত গ্যাংস্টারদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারীরা কলকাতা তথা এই রাজ্যকে নিশানা করেছিল ? তদন্তে যত এগোচ্ছে ততই রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে ।