দুর্গাপুর, 25 ফেব্রুয়ারি: প্রতিশ্রুতি ছিল চাকরির ৷ কিন্তু ন’বছর পরও তা প্রতিশ্রুতিই থেকে গিয়েছে ৷ বারবার কর্তৃপক্ষ, এমনকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে সমস্য়ার কথা জানিয়েও মেটেনি সমস্যা ৷ বাধ্য হয়েই তাই অবস্থান বিক্ষোভে বসেছেন রাজ্য সরকারের অধীনস্থ সংস্থা ডিপিএলের প্রয়াত কর্মীদের পরিবারের সদস্য়দের ৷ দুর্গাপুরে সংস্থার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন তাঁরা ৷ অবস্থান চলছে 57 দিন ধরে ৷
এর মধ্যে, গত বুধবার সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর কলকাতা থেকে দুর্গাপুরের অফিসে ঢুকতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন প্রয়াত কর্মীদের স্বজনরা ৷ পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে কোকওভেন থানার পুলিশ ৷ এরপর তাদেরও ঘিরে বিক্ষোভ দেখান প্রয়াত কর্মীদের পরিজনেরা ৷ বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ‘‘আমরা না খেতে পেয়ে মরছি ৷ আর সরকার সব জেনেও নীরব দর্শকের ভূমিকায় বসে রয়েছে।’’
বিক্ষোভের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল ৷ কথা বলেন ডিপিএল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ৷ কিন্তু আলোচনায় বসতে কর্তৃপক্ষ ফের সময় চাওয়ায় ক্ষোভ চরমে ওঠে ৷ বিধায়ককে ঘিরে ধরে আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়ে দেন, চাকরির নিশ্চয়তা না পাওয়া অবধি তাঁরা অবস্থানস্থল থেকে সরবেন না ৷
এই প্রসঙ্গে বিশ্বনাথ পাড়িয়াল জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হাতে হাতে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হয়েছিল ৷ তবে তারপরও কেন সমস্য়ার সমাধান হল না, তা তাঁর জানা নেই ৷
আরও পড়ুন: এসএলএসটি উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ফের বিক্ষোভ
প্রসঙ্গত, ডিপিএলের গেটের বাইরে টানা 57 দিন ধরে চাকরির দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন 206 জন ৷ এঁরা সকলেই সংস্থার প্রয়াত কর্মীদের পরিবারের সদস্য ৷ এমন একটা পরিস্থিতিতে রটে যায়, কর্তৃপক্ষ 10 জনকে চাকরিতে নেবে ৷ এতে জটিলতা আরও বাড়ে ৷ আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন চাকরি না পেলে ডিপিএল কারখানার ভিতরেই তাঁরা মৃত্যুবরণ করবেন ৷ ডিপিএলের জনসংযোগ আধিকারিক স্বাগতা মিত্র অবশ্য জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷
এদিকে বিজেপি নেতা অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘প্রতিবারই ভোট আসে আর এঁদের চাকরির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ৷ অমানবিক এক সরকার চলছে এই রাজ্যে ৷ এরা মুখে অনেক কথা বলে ৷ কিন্তু কাজের কাজ কিছু করে না ৷’’
সব মিলিয়ে গোটা ঘটনায় উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে দুর্গাপুরে ডিপিএলের গেটের বাইরে ৷ আন্দোলনকারীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, যতদিন না তাঁদের দাবি পূরণ হচ্ছে, ততদিন তাঁরা এখানেই বসে থাকবেন ৷