দুর্গাপুর, 16 অগাস্ট : বছর সাতেকের সানি । ক্লাস টু-তে পড়ত । কোরোনা আবহে স্কুল বন্ধ । আর পাঁচটা দিনের মতো শুক্রবারও বাড়ির উঠোনে খেলছিল সে । সময় তখন প্রায় বেলা এগারোটা । বাড়ির বাকি কেউ তখন আশপাশে ছিলেন না । এরপর থেকেই আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না সানির । দু'দিন পর আজ সকালে জঙ্গলের ধারে বস্তার ভিতর থেকে মিলল তার দেহ । ঘটনায় জড়িত সন্দেহে নীলু বাগদি নামে এক নিকট আত্মীয়কে আটক করেছে পুলিশ । দুর্গাপুরের বুদবুদ থানা এলাকার রণডিহা গ্রামের ঘটনা ।
বুদবুদ থানায় সানির নামে নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল । কিন্তু তারপরেও কোনও খোঁজ না মেলায় স্থানীয়রাই আজ সকালে খোঁজ শুরু করেন সানির । তখনই এলাকার একটি জঙ্গলের ধারে একটি বস্তা পড়ে থাকতে দেখা যায় । দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল বস্তা থেকে । সন্দেহ হয় । এরপর বস্তা খুলতেই দেখা যায় ভিতরে পড়ে রয়েছে সানির দেহ । পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে নীলু খুনের কথা স্বীকার করেছে । প্লাস্টিকে সানির দেহ মুড়ে তারপর তা বস্তার ভিতরে ঢুকিয়ে ওই নির্জন এলাকায় ফেলে দিয়ে এসেছিল সে ।
স্থানীয় গৌতম চক্রবর্তী বলেন, "আমরা গত দু'দিন ধরে এই শিশুটির খোঁজ চালাচ্ছিলাম । কিন্তু, খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না । শেষে আমরা পাড়ার সব বাসিন্দাকে আলোচনার জন্য ডেকেছিলাম । সেখানে নীলু বাগদির পরিবার আসেনি । তখনই আমাদের সন্দেহ হয় ওই পরিবারটির উপর । এবিষয়ে পুলিশকেও জানিয়েছিলাম ।"
আরও পড়ুন : ধর্ষণ করে চোখ খুবলে, জিভ কেটে 13 বছরের নাবালিকাকে খুন উত্তরপ্রদেশে
অভিযোগ, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার পর নীলু বাগদি শ্বশুরবাড়ি চলে গেছিল । কিন্তু কী কারণে ছোট্ট সানিকে খুন করে তার দেহ প্লাস্টিকে মুড়ে নির্জন এলাকায় ফেলে এসেছিল নীলু বাগদি ?
সানির মা চম্পা বাগদি জানান, "আমাদের সঙ্গে কোনও শত্রুতা নেই । বুঝতে পারছি না কেন আমার ছেলেকে খুন করা হল । তবে আমি চাইব, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক ।"
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বুদবুদ থানার পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্স ঘটনাস্থানে গেলে প্রথমদিকে উত্তেজিত জনতার বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় । দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাতে থাকে রণডিহা গ্রামের বাসিন্দারা।
DCP (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা জানান , "আমরা অভিযুক্ত নীলু বাগদিকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি । এখনও পর্যন্ত খুনের কারণ কী তা জানা যায়নি । তবে পারিবারিক বিবাদ যে অন্যতম কারণ, তা স্পষ্ট।"