বর্ধমান, 3 অক্টোবর : রাজ্যে দিন দিন বাড়ছে হাতির সংখ্যা । সেই সঙ্গে খাবারের সন্ধানে রাতের অন্ধকারে রেললাইন পারাপার করতে গিয়ে সপ্তাহে গড়ে বেশ কয়েকটা হাতির মৃত্যুও হচ্ছে । যা নিয়ে চিন্তিত রাজ্য সরকার । তাই হাতির করিডোর বানানোর দিকে ঝুঁকছে রাজ্য । ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে জাপানের কাছে সাহায্যের আর্জি জানিয়েছে রাজ্য ৷ জাপানও এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গকে সাহায্য করবে বলে জানিয়েছে বলে জানালেন রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ।
শনিবার বর্ধমানের সংস্কৃতি অ্যানেক্স হলে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক । সেখানে তিনি রেলের ধাক্কায় হাতিদের মৃত্যুর বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন । পাশাপাশি তিনি জানান, পুজোর মরশুমে জাতীয় উদ্যানগুলিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার ৷ করোনা পরিস্থিতির জেরে এমনিতেই দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল বিভিন্ন জাতীয় উদ্যান । তাই পুজোর মরশুমে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়াতে বিভিন্ন জাতীয় উদ্যানকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে ।
আরও পড়ুন : Odisha: হাতি উদ্ধার করতে গিয়ে মহানদীতে উল্টে গেল উদ্ধারকারীদলের নৌকা
বনমন্ত্রী এদিন বলেন, "ফরেস্ট ট্যুরিজম শুরু হচ্ছে । এর ফলে জঙ্গলের ভিতরে একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত মানুষ জীবজন্তু দেখার জন্য ঢুকতে পারবে । কিন্তু তাঁরা যদি হঠাৎ করে আরও ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে তাহলে বিপদে পড়বে । তাই তাঁদের নিয়মকানুন মানতে বলা হচ্ছে । ইতিমধ্যেই ফরেস্ট খুলে দেওয়া হয়েছে । পুজোর সময় মানুষ সেখানে যেতে পারবে ।"
ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমরা কেন্দ্র সরকারকে অনুরোধ করেছি যাতে জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাওয়া রেললাইন গুলিতে রাত দশটার পর থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে ফের ভোর পাঁচটা-ছ'টা থেকে ট্রেন চলাচল চালু করা হয় । কিন্তু তাঁরা কোনও কথা শুনছে না । তাই প্রায় সপ্তাহে গড়ে পাঁচ-সাতটা করে হাতি কাটা পড়ছে । এটা খুব উদ্বেগের বিষয় । আমাদের রাজ্যে এখন হাতির সংখ্যা খুব বেড়ে গিয়েছে । ফলে খাবারের খোঁজে ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া থেকে হাতি লোকালয়ে চলে আসছে । তাই তাদের বাঁচাতে করিডোর তৈরি করার পরিকল্পনা করা হয়েছে । এই বিষয়ে জাপানের কাছে সাহায্য চাওয়া হয়েছে ৷ তারা আমাদের সাহায্য করবে বলে জানিয়েছে ৷ এতে একটা রূপরেখা পাওয়া যাবে যে হাতি কোন পথে চলাচল করে । সেটা জানা গেলেই সেইমতো হাতির করিডোর বানানো হবে ৷" এর পাশাপাশি রাজ্যের কোথাও কমপক্ষে 25-30 বিঘা জমি পেলে সেখানে রাজ্য সরকারের তরফে হরিণালয় ও পাখিরালয় বানানো হবে বলেও জানান বনমন্ত্রী ৷
আরও পড়ুন : World Elephant Day : নতুন কাপড়, এলাহি খাবার; লক্ষ্মী আর উর্মিলার ফুরফুরে বিশ্ব হাতি দিবস