হায়দরাবাদ, 2 জানুয়ারি: নতুন বছর শুরুর আনন্দ ফিকে হয়ে গেল বৃহস্পতিবার ৷ 56 বছর বয়সে প্রয়াত 'এগারো', 'বাঘা যতীন'-এর মতো সিনেমার পরিচালক অরুণ রায় ৷ ফুসফুসের সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে ৷ বুধবার অবস্থার অবনতি হয় ৷ বৃহস্পতিবার তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ৷ তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বাংলার সিনেদুনিয়া ৷
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে শোকপ্রকাশ করে লিখেছেন, "অরুণ রায়ের ‘এগারো’ থেকে ‘বাঘা যতীন’—এক দশকের মধ্যে তাঁর নির্মিত প্রতিটি ছবি আমাদের নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। আজ সকালে, ক্যানসারের দীর্ঘ লড়াইয়ে তাঁর হার হলেও ..তাঁর সিনেমাগুলোই তাঁর প্রকৃত জয় হয়ে থেকে যাবে..অরুনের পরিবারের প্রতি রইল সমবেদনা ।"
অরুণ রায়ের ‘এগারো’ থেকে ‘বাঘা যতীন’—এক দশকের মধ্যে তাঁর নির্মিত প্রতিটি ছবি আমাদের নতুন করে ভাবতে শিখিয়েছে। আজ সকালে, ক্যানসারের দীর্ঘ লড়াইয়ে তাঁর হার হলেও ..তাঁর সিনেমাগুলোই তাঁর প্রকৃত জয় হয়ে থেকে যাবে..অরুনের পরিবারের প্রতি রইল সমবেদনা ।
— Prosenjit Chatterjee (@prosenjitbumba) January 2, 2025
দেবের প্রযোজনা সংস্থার তরফেও শোকবার্তার পর নিজের সোশাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে দেব প্রয়াত পরিচালকের সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করেন ৷ ক্যাপশনে লেখেন, "অনেক তাড়াতাড়ি হয়ে গেল বন্ধু ৷ 24 ক্যারেট গোল্ড ৷" মূলত, পরিচালকের সঙ্গে দেব 'বাঘাযতীন' সিনেমায় অভিনয় করেছেন ৷ এই সিনেমার শুটিং চলাকালীনই পরিচালকের ক্যানসার ধরা পড়ে ৷ তারপরেও মনের জোর নিয়ে চালিয়ে গিয়েছেন শুটিং ৷
অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্রর কাছে পরিচালক অরুণ রায় ছিলেন একজন শিক্ষকসম ৷ অভিনেত্রী লেখেন, "আমি তোমাকে সবসময় ভালোবাসব হিরো ৷ আর তুমি হিরোর মতোই লড়াই করেছ ৷ সব কটা কথা রাখব অরুণ দা ৷ প্রমিস ৷ তোমার একমাত্র হিরোইন ৷ ওকে ৷ সত্যি বলি, না ছেড়েই গেলে পারতে ৷ আই লাভ ইউ ৷"
অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষও পরিচালকের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন ৷ তিনি লেখেন, "আমাদের অরুণ চলে গেল। পরিচালক অরুণ রায়। বরাবর নিজের ছন্দে চলা মানুষ ছিল। কেরিয়ার অর্থ নাম -এ গুলোকে সরিয়ে চলতে চাইতো নিজের মত করে। ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে প্রয়োজনীয় সখ্যতা,অনুরোধ, অনুকম্পাকে এড়িতে চলতো অরুণ। 2011-তে প্রথম সিনেমা 'এগোরো' নির্মাণ করে নিজের নিঃশব্দ দাপট প্রমাণ করেছিল অরুণ। তারপর, চোলাই, হীরালাল, বিনয় বাদল দীনেশ ও বাঘা যতীন। নিজের প্রতি সামান্য যত্নে বড়ই উদাসীন ছিল সে। কিছু বললেই একটা বিড়ি ধরিয়ে হালকা হেসে বলতো, "ছাড় না, এই তো চলে যাচ্ছে দিব্যি।"
রুদ্রনীল আরও লেখেন, "চললো না। নিজে চলে গেল অরুণ। এই মেধাবী পরিচালকের বানানো সিনেমার বিষয়বস্তুই বলে দেয়, দেশ ও সমাজের অবহেলায় পড়ে থাকা গুরুত্বপূর্ণ বর্তমান ও ইতিহাসকে কতটা গুরুত্ব দিত সে। এই কারণের অরুণ বাকি পরিচালকদের থেকে আলাদাই থেকে যাবে। ক্যানসারে ভুগছিল বছর খানেক।ফুসফুসের সমস্যায় চলে গেল।আর বিড়ি ধরিয়ে মুচকি হেসে অরুণ বলবে না, "ছাড় না...!" সবার হাত ছাড়িয়ে অরুণ নিজেই বিদায় নিল। ভাল থাকিস ভাই ঘুমের দেশে। ঈশ্বর তোর আত্মাকে শান্তি দিন।" পরিচালক অরিন্দম শীলও পরিচালক অরুণ রায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন সোশাল মিডিয়ায় ৷
অভিনেত্রী সুদীপ্তা চক্রবর্তী সোশাল মিডিয়ায় লেখেন, "পরিচালক অরুণ রায় আর নেই। নতুন বছরের দ্বিতীয় সকালে চলে গেলেন সব মায়া ছেড়ে। যে অরুণ দা কে আমরা চিনি, সেই অরুণ দা থেকে যাবেন আমাদের মনের ভিতর- ঠাট্টা, ইয়ার্কি, সিনেমা দেখা আর সিনেমার আলোচনা নিয়ে। জীবনের সবচেয়ে কঠিন বিষয়কেও মজা করে কাটিয়ে দেওয়ার মত সাহস ছিলো তাঁর। শুধু যদি একটু নিয়ম, একটু সংযম...যাই হোক।" পরিচালকের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন পরিচালক প্রতীম ডি. গুপ্তা ৷